ঢাকা, বৃহস্পতিবার ২১ই নভেম্বর ২০২৪ , বাংলা - 

তিন বছরে ছিনতাই ঘটনা বেড়েছে দ্বিগুণ

স্টাফ রিপোর্টার।।ঢাকাপ্রেস২৪.কম

2021-03-04, 12.00 AM
তিন বছরে ছিনতাই ঘটনা বেড়েছে দ্বিগুণ

রাজধানীতে গত তিন বছরে ছিনতাই বেড়েছে দ্বিগুণ। তবে ঘটনার চেয়ে থানায় অভিযোগ পড়ছে কম। ভুক্তভোগীদের বেশিরভাগই ক্ষুদ্রব্যবসায়ী ও পথচারী। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে ছিনতাইয়ে জড়িতদের বেশিরভাগই কিশোর, উঠতি তরুণ ও গাড়িচালক। পুলিশ জানিয়েছে, কিছু ভুক্তভোগী মামলা করেন, অনেকে করেন না। কোনও থানা যদি ছিনতাইয়ের মামলা না নিতে চায়, তবে ঊধ্বর্তন কর্মকর্তাদের জানাতে বলেছেন পুলিশ কর্মকর্তারা। এদিকে বিভিন্ন পেশাজীবীদের মধ্যে কারা কারা ছিনতাইয়ে জড়িয়ে পড়ছে তা-ও খতিয়ে দেখছে পুলিশ।

ঢাকা মহানগর পুলিশের তথ্যমতে, ২০১৮ সালে ছিনতাইয়ের মামলা ছিল ৭৮টি। ২০১৯ সালে ১১৯ ও ২০২০-এ তা বেড়ে দাঁড়ায় ১৭৬টিতে।গত ৪ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর উত্তরা ৪ নম্বর সেক্টর এলাকায় গাড়ি থেকে ব্যাগ টেনে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছিল এক ছিনতাইকারী। পুলিশ বলছে, অভিযুক্ত সুমন পেশাদার ছিনতাইকারী নন। এক চলচ্চিত্র তারকার গাড়ি চালানোর ফাঁকে তিনি ছিনতাই করেন।

রাজধানীর ব্যস্ততম এলাকা ফার্মগেটে প্রকাশ্যে ছিনতাই না হলেও ‘টানা পার্টি’র অত্যাচার বেড়েছে। প্রতিদিন বাসের জন্য অপেক্ষমান অফিসফেরত মানুষদের টার্গেট করে ব্যাগ কেটে নেওয়া হচ্ছে। আবার কখনও বাসে ওঠার সময় আলগোছে পকেট থেকে নেওয়া হচ্ছে ফোন বা মানিব্যাগ। কারওয়ানবাজার থেকে ফার্মগেট মোড়ে নারী-পুরুষ মিলিয়ে বেশকটি ‘টানা গ্রুপ’ সক্রিয়। এর আগে ফার্মগেট কেন্দ্রিক কয়েকজনের একটি গ্রুপ সক্রিয় ছিল, যারা বোরকা পরে এ কাজ করতো।

এ ছাড়া আগারগাঁও থেকে মিরপুর ১০ যাওয়ার পথটা ফের ভয়ঙ্কর হয়ে উঠেছে। আইডিবি ভবন থেকে তালতলা ও শেওড়াপাড়ার রাস্তায় মেট্রোরেলের কাজ চলমান থাকায় অনেক স্থানে সড়কবাতি কম রয়েছে। ওইসব এলাকায় পুলিশের টহল অব্যাহত থাকলেও ছিনতাই থেমে নেই।তাছাড়া মতিঝিল, যাত্রাবাড়ী, গোপিবাগসহ ওই এলাকায় প্রায় প্রতিদিনই ছিনতাইয়ের শিকার হচ্ছে মানুষ।

গত ২৪ জানুয়ারি রাজধানীর কদম ফোয়ারায় ছিনতাইকারীর ছুরিকাঘাতে খুন হন হামিদুল ইসলাম (৫৫) নামে এক কেবল টিভির সংযোগ ব্যবসায়ী। তোপখানা রোডে তার বাসা। এই ঘটনায় তার বড় ছেলে নাহিদুল ইসলাম শাহবাগ থানায় একটি মামলা করেছেন বলে থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আরিফুর রহমান সরদার জানিয়েছেন।

শাহবাগ থানার ওসি মো. মামুন অর রশিদ জানান, ঘটনার সঙ্গে জড়িত পাঁচজনকে গ্রেফতার করেছে ডিবি। ছিনতাইয়ে ব্যবহৃত ছুরিও উদ্ধার হয়েছে। সোহেল মিয়া নামে এক ছিনতাইকারী হামিদুলকে ছুরিকাঘাত করেছিল। তিনি পেশাদার ছিনতাইকারী বলে জানিয়েছে পুলিশ।

পুলিশের দাবি শুধু পেশাদার নয়, রাজধানীতে এখন সক্রিয় অপেশাদার ছিনতাইকারীরাও। ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (ডিবি) এ কে এম হাফিজ আক্তার বলেন, ‘সম্প্রতি দেখেছি কিছু ছিনতাইয়ের সঙ্গে গাড়িচালক, কলেজ শিক্ষার্থীসহ বিভিন্ন পেশার মানুষ জড়িয়ে পড়ছে। এর কারণ অনুসন্ধান করছি। কেউ দ্রুত টাকা আয় করতে চায়, কেউ লোভে পড়ে আবার কেউ অন্যের প্ররোচনায় পড়ে ছিনতাইয়ে জড়াচ্ছে। অনেকে আবার কারাগারে গিয়ে ছিনতাইচক্রের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তোলে। জেল থেকে বের হয়েই শুরু করে ছিনতাই।’

তিনি আরও বলেন, ‘অনেক ভুক্তভোগী মামলা করতে চান না। আমি নিজে খোঁজ করে দুটি ঘটনার ভিকটিমকে মামলা করতে অনুরোধ করেছি। থানায় যদি মামলা না নিতে চায় তা হলে আমাকে জানাতে বলছি। আমরা চক্রগুলোকে ধরতে চাই। মামলা না করলে আমাদের জন্য কাজটা কঠিন হয়ে যায়।’