ঢাকা, বৃহস্পতিবার ২১ই নভেম্বর ২০২৪ , বাংলা - 

ছাত্র ঐক্য’ নামে নতুন জোট ঘোষনা

স্টাফ রিপোর্টার ।।ঢাকাপ্রেস২৪.কম

2023-09-29, 12.00 AM
 ছাত্র ঐক্য’ নামে নতুন জোট ঘোষনা

ভোটাধিকার, সন্ত্রাস-দখলদারিমুক্ত নিরাপদ ক্যাম্পাস, সাবর্জনীন শিক্ষা ও গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় ১৫টি ছাত্র সংগঠনের নেতৃত্বে ‘ফ্যাসিবাদ বিরোধী ছাত্র ঐক্য’ নামে নতুন জোটের আত্মপ্রকাশ হয়েছে।এ সময়, সার্বজনীন শিক্ষা ব্যবস্থা এবং গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় 'ফ্যাসিবাদ বিরোধী ছাত্র ঐক্য' ৯ দফা দাবি ঘোষণা করেছে।শুক্রবার (২৯ সেপ্টেম্বর) সকালে সেগুনবাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি কার্যালয়ের নসরুল হামিদ মিলনায়তনে ছাত্র সংগঠনগুলো এক প্রতিনিধি সভায় নতুন এ ছাত্র জোটের নাম ঘোষণা করেন জাতীয়তাবাদী ছাত্র দলের সাধারণ সম্পাদক সাঈফ মাহমুদ জুয়েল।ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ভোটাধিকার, সন্ত্রাস-দখলদারিমুক্ত নিরাপদ ক্যাম্পাস, সার্বজনীন শিক্ষা ও গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় ৯ দফার ভিত্তিতে বৃহত্তর ছাত্র আন্দোলন গড়ে তুলতে ক্রিয়াশীল গণতান্ত্রিক ছাত্র সংগঠন সম্মিলিতভাবে ফ্যাসিবাদ বিরোধী ছাত্র ঐক্যের নাম ঘোষণা করছি।

 

তিনি আরও বলেন, ‘ফ্যাসিবাদ বিরোধী ছাত্র ঐক্য’ হচ্ছে দেশের ১৮ কোটি মানুষ যারা অধিকার বঞ্চিত তাদের একটি ঐক্যবদ্ধ প্ল্যাটফর্ম এমন মন্তব্য করে ছাত্র দলের সাধারণ সম্পাদক সাঈফ মাহমুদ জুয়েল বলেন, ভোটাধিকার বঞ্চিত সব মানুষ এ ফ্যাসিবাদ বিরোধী ঐক্যে অংশগ্রহণ করে একটি স্বনির্ভর, সমৃদ্ধশালী, গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ গড়ে উঠবে সে বাংলাদেশের প্রত্যাশায় আগামীদিনের রাজপথের সংগ্রামে সবাইকে অংশ নেওয়ার জন্য আমি আহ্বান জানাচ্ছি।

 

ফ্যসিবাদবিরোধী ছাত্র ঐক্যে’র জোটে ১৫টি সংগঠন হলো: জাতীয়তাবাদী ছাত্র দল, ছাত্র ফেডারেশন, ছাত্র অধিকার পরিষদ, ছাত্রলীগ(জেএসডি), গণতান্ত্রিক ছাত্র দল(এলডিপি), নাগরিক ছাত্র ঐক্য, জাগপা ছাত্রলীগ, ছাত্র ফোরাম (গণফোরাম মন্টু), ভাসানী ছাত্র পরিষদ, জাতীয় ছাত্র সমাজ(কাজী জাফর), জাতীয় ছাত্র সমাজ(বিজেপি-পার্থ), জাগপা ছাত্র লীগ(খন্দকার লুতফর), ছাত্র জমিয়ত বাংলোদেশ, বিপ্লবী ছাত্র সংহতি ও রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন।

 

ফ্যাসিবাদী ছাত্র ঐক্যের সমন্বয়ক নির্বাচিত হয়েছেন তিনজন। তারা হলেন ছাত্র দলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রাশেদ ইকবাল খান, ছাত্র ফেডারেশনের সভাপতি মশিউর রহমান রিচার্ড ও ছাত্র অধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক আরিফুল ইসলাম আদীব।

 

মুখপাত্র হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক সাইফ মাহমুদ জুয়েল।

 

এছাড়া সব ছাত্র সংগঠনগুলোর কেন্দ্রীয় সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকগণ কেন্দ্রীয় সমন্বয় পরিষদের সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন কবেন বলা জানানো হয়।

 

ভোটাধিকার, সন্ত্রাস-দখলদারিত্বমুক্ত নিরাপদ ক্যাম্পাস, সার্বজনীন শিক্ষা ব্যবস্থা এবং গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় 'ফ্যাসিবাদ বিরোধী ছাত্র ঐক্য' এর  ঘোষিত ৯ দফা দাবির গুলো হচ্ছে:

 

১) বর্তমান ফ্যাসিবাদী সরকারের পদত্যাগ, নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন ও রাষ্ট্রের গণতান্ত্রিক সংস্কারে আন্দোলনরত দলগুলোর ৩১ দফা বাস্তবায়ন কর।

 

২) শিক্ষা ব্যবস্থায় ছাত্র-শিক্ষক সম্পর্কের সমস্তক্ষেত্রে গণতান্ত্রিক চর্চাকে অগ্রাধিকার দিতে হবে। শিক্ষাক্ষেত্রে জিডিপির অন্তত ৫ ভাগ বরাদ্দ করে সবার জন্য মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিত করতে হবে। বিজ্ঞান শিক্ষা ও গবেষণায় সর্বাধিক গুরুত্ব আরোপ। দক্ষ জনশক্তি গড়ে তোলার লক্ষে কারিগরি শিক্ষার বিকাশ। বুনিয়াদি শিক্ষাকে সার্বজনীন, অবৈতনিক ও মানসম্মত করার উদ্যোগ গ্রহণ করা।  

 

৩) সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়াসহ সব রাজবন্দিদের নিঃশর্তমুক্তি এবং সাইবার সিকিউরিটি আইনসহ নিবর্তনমূলক সব আইন বাতিল করতে হবে।

 

৪) শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নির্যাতনবিরোধী আইন করে শিক্ষাঙ্গনগুলোকে সন্ত্রাস ও দখলদারিত্ব মুক্ত করা, সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ছাত্র প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করতে ছাত্র সংসদ নির্বাচন, প্রথম বর্ষ থেকেই বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে ছাত্রদের সিট পাওয়ার বৈধ অধিকারের স্বীকৃতি এবং বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের তত্ত্বাবধানে তা নিশ্চিত করার ব্যবস্থা গ্রহণ। সর্বোপরি দলমত নির্বিশেষে সব সংগঠনের শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান নিশ্চিত করতে হবে।

 

৫) শিক্ষার মান বাড়ানোর লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ, শিক্ষকদের বেতন কাঠামোর পুনর্বিন্যাসসহ বহুমুখী পদক্ষেপ গ্রহণ করা। বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভ্যাট (মূল্য সংযোজনী কর) আরোপ করা চলবেনা। বেসরকারি স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে বেতন-ফি কমানো এবং অভিন্ন নীতিমালা ও বেতন কাঠামো নির্ধারণ কর।

 

৬) সারা বিশ্বের সমস্ত ধ্রুপদী সাহিত্য ও পাঠ্যপুস্তকে মাতৃভাষায় রূপান্তরের জন্য একটি জাতীয় অনুবাদ সংস্থা স্থাপন করে দ্রুততার সঙ্গে এ কাজ সম্পন্ন করতে হবে।

 

৭) বাংলাদেশের জনগণের নির্ধারক ভূমিকাকে পুনঃপ্রতিষ্ঠা এবং ইতিহাসে সব ব্যক্তির যার যা অবদান আছে তার স্বীকৃতি দিয়ে বাংলাদেশের জনগণের গৌরবোজ্জ্বল ভূমিকাকে প্রতিষ্ঠা এবং জনগণের সামনে প্রকৃত ইতিহাস তুলেধরার জন্য পাঠ্যপুস্তক সংস্কার করতে হবে।

 

৮) শিক্ষার্থীদের মেধা ও যোগ্যতা অনুযায়ী শিক্ষা গ্রহণের সমস্তব্যবস্থা এবং শিক্ষা শেষে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে হবে। শিক্ষার্থীদের সহজ শর্তে শিক্ষা ঋণ দিতে হবে। সব শিক্ষার্থীকে স্বাস্থ্যবীমার অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। শিক্ষার্থীদের উদ্যোক্তা হিসেবে তৈরি করার জন্য সহজ শর্তে ঋণ দিতে হবে।

৯) সব জাতিসত্ত্বার সাংবিধানিক স্বীকৃতি ও সাংবিধানিক নিশ্চয়তা প্রদান করতে হবে।প্রতিনিধি সভায় ছাত্রদলের সভাপতি রাশেদ ইকবাল খানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিভিন্ন ছাত্র সংগঠনের নেতারা বক্তব্য রাখেন।