মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, আফ্রিকা-ইসরায়েল দেখেন, বাংলাদেশ নিয়ে মাথা ঘামানোর দরকার নেই।বৃহস্পতিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে দলটির নির্বাচনী ইশতেহার প্রণয়ন কমিটির প্রথম সভায় তিনি এ কথা বলেন।ওবায়দুল কাদের বলেন, আফ্রিকায় কয়দিন পরপর বিদ্রোহ হয়, সেটা থামাতে পারেন না। দুষ্ট ছেলে ইসরায়েলকে থামাতে পারেন না। নেতানিয়াহু তো কথা শোনে না। আমাদের নির্বাচন নিয়ে এত মাথা ঘামানো কেন? যুদ্ধ থামান, বড় বড় সংকট দেখেন, আমাদের নিয়ে মাথা ঘামানোর দরকার নেই। আমরা তো পরাশক্তি হতে চাই না। আবার আমরা ভেনেজুয়েলাও না।
তিনি বলেন, আমরা নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু করবো। আমরা যা করবো, পরিপূর্ণভাবেই সংবিধান ফলো করেই করবো। দুনিয়ার অন্যান্য দেশে যেভাবে হয়, সেভাবেই হবে। কে এলো কে এলো না, এটা আমাদের দেখার বিষয় না। কে নিষেধাজ্ঞা দিলো, সেটাও আমাদের হেডেক না। আমরা তো নির্বাচন করবো, নিষেধাজ্ঞা আমাদের জন্য নয়, যারা বাধা দেবে, তাদের নিষেধাজ্ঞা দেন।নির্বাচনকালীন সরকার নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, মন্ত্রিসভা নির্বাচনকালীন ছোট কি বড় হবে এটা প্রধানমন্ত্রীর এখতিয়ার। তিনি চাইলে, গতবারের মতো যেভাবে আছে সেভাবেও থাকতে পারে। এটাতে আমাদের কারও কিছু করার নেই। সেই মন্ত্রিসভার কার্যক্রম হবে, রুটিন ওয়ার্ক। মেজর কোনো পলিসি ডিসিশন নেবে না।বিএনপি নেতাদের বক্তব্যের জবাবে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, মির্জা আব্বাস চাঁদরাত দেখেছেন। কী দেখেছেন, ঝিনাইদহে কয়েকজন মানুষ দেখেছেন। ফখরুল বলেছেন, অক্টোবরে নাকি আমাদের চলে যেতে হবে। আমি বলেছি, এই অক্টোবরে আছি, আগামী অক্টোবরেও থাকবো। জনগণ আমাদের চায়। একটা দেশের প্রধানমন্ত্রী সংকটে শক্তহাতে হাল ধরে আছেন, কেন তাকে ছেড়ে দিতে হবে? তার বিকল্প ভাবেন। শেখ হাসিনার বিকল্প আছে কি? সেটি ভাবতে হবে, সেই আলোকে ইশতেহার সাজাতে হবে।
ইশতেহার নিয়ে তিনি বলেন, ইশতেহার পড়ে কজন? সেটা খেয়াল রেখে করতে হবে। বুলেট পয়েন্ট দিয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় আনতে হবে। ঢাউস কিতাব বা বিশাল বই পড়ার সময় কারও নেই। সময়ের সঙ্গে বাস্তবতার চ্যালেঞ্জ অতিক্রম করতে হবে। সামনে কঠিন সময়, জুঁই ফুলের গান গেয়ে লাভ নাই।কাদের বলেন, বাংলাদেশের গণতন্ত্র রক্ষা করতে হলে শেখ হাসিনাকে ফের ক্ষমতায় আনতে হবে। বিএনপি এলে গণতন্ত্র থাকবে না। অ্যাকশনমুখী ইশতেহার লাগবে। যেমন কুকুর তেমন মুগুর স্টাইলে ইশতেহার করেন। ক্লাইমেট চেঞ্জের বিষয়ে সামনে রাখতে হবে। ২০২৬ এবং ২০৪০ সাল মাথায় রাখতে হবে। ডিজিটাল হয়ে গেছে, এখন মাথায় স্মার্ট বাংলাদেশ। কীভাবে সর্বত্র স্মার্ট করা যায়, সেটা ভাবতে হবে।
শেখ হাসিনার জন্মদিন উপলক্ষে কাদের বলেন, ৭৭ বছর বয়সেও তার গতি দেখলে মনে হয়, গতিতে তিনি সত্যিকারার্থে অ্যারাবিয়ান হর্স। শেখ হাসিনা আল্লাহর পক্ষ থেকে বাংলাদেশের জন্য আশীর্বাদ।
এই সভায় নির্বাচনী ইশতেহার প্রণয়ন কমিটির আহ্বায়ক ড. আব্দুর রাজ্জাক, সদস্য সচিব ড. সেলিম মাহমুদ, সদস্য অধ্যাপক খন্দকার বজলুল হক, অধ্যাপক আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক, ড. শামসুল আলম, ডা. দীপু মনি, শ ম রেজাউল করিম, অধ্যাপক মাহফুজুর রহমান, অধ্যাপক খায়রুল হোসেন, শেখর দত্ত, ওয়াসিকা আয়েশা খান, বিপ্লব বড়ুয়া, মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, তারানা হালিম, মোহাম্মদ আলী আরাফাত, সাজ্জাদুল হাসান, অধ্যাপক মাকসুদ কামাল, জুনাইদ আহমেদ পলক, সাদিকুর রহমান চৌধুরী, সায়েম খান, সাব্বির আহমেদ অংশ নেন।ইশতেহার প্রণয়ন কমিটির আহ্বায়ক ড. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, মূল ফোকাস শিল্পখাত। ছোটশিল্প প্রসারের পাশাপাশি ভারী শিল্পের দিকেও যেতে হবে। কৃষিতে ভর্তুকি থাকবে। সেবাখাতেও গুরুত্ব দেওয়া হবে।তিনি বলেন, সুশাসন নিশ্চিত করার জন্য নির্বাচনী ইশতেহারে গুরুত্ব দেবো। সকল ধর্ম-বর্ণের মানুষের এমনকি হিজড়াদেরও মৌলিক অধিকার পূরণ করা হবে।