এবারের জি-২০ সম্মেলনে সব সদস্য দেশের ঐকমত্যের ভিত্তিতে ‘দিল্লি ঘোষণা’ প্রকাশ করেছে ভারত। এই যৌথ ঘোষণাপত্রে উল্লেখিত বিষয়গুলোর ভূয়সী প্রশংসা করেছে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য। তবে সেটি মনঃপুত হয়নি ইউক্রেনের। কিয়েভের দাবি, এই ঘোষণায় গর্বিত হওয়ার মতো কিছুই নেই। যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জেক সুলিভান দিল্লি ঘোষণাকে ‘উল্লেখযোগ্য মাইলফলক’ উল্লেখ করে বলেছেন, জি-২০ সদস্যরা একত্রিত হয়ে যে বিভিন্ন সমস্যার সমাধান করতে পারে, এটি তারই প্রমাণ।ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী রিশি সুনাকও এই যৌথ ঘোষণাকে ইউক্রেন যুদ্ধের বিষয়ে ‘অত্যন্ত শক্তিশালী ভাষা’ বলে উল্লেখ করেছেন। তিনি বলেছেন, এই নথিটি দৃঢ় ভাষা, খাদ্যমূল্য এবং খাদ্য নিরাপত্তার ওপর যুদ্ধের প্রভাব তুলে ধরেছে।তবে দিল্লি ঘোষণার বিষয়বস্তু নিয়ে মোটেও সন্তুষ্ট নয় কিয়েভ। ইউক্রেনীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ওলেগ নিকোলেঙ্কোর দাবি, এই ঘোষণায় জি-২০র গর্ব করার মতো কিছু নেই। তিনি বিশেষভাবে জি-২০র ঘোষণাপত্রে উল্লেখিত ‘দ্য ওয়ার ইন ইউক্রেন’ (ইউক্রেনে যুদ্ধ) শব্দগুলোর কথা উল্লেখ করেছেন। কিয়েভ এটিকে ‘দ্য ওয়ার এগেইনস্ট ইউক্রেন’ (ইউক্রেনের বিরুদ্ধে যুদ্ধ) বলা পছন্দ করে।
বালি ঘোষণার চেয়ে যেখানে আলাদা দিল্লি ঘোষণা
জি-২০ সম্মেলনের যৌথ ঘোষণায় বিশ্বনেতাদের ঐকমত্য অর্জন করে সবাইকে অবাক করেছে ভারত। কিন্তু দিল্লির ঘোষণাপত্র একটু ভালোভাবে পড়লেই দেখা যাবে, ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে রাশিয়ার নিন্দা জানানোয় এর ভাষা ততটা জোরালো নয়, যতটা গত বছরের বালি ঘোষণায় ছিল।
বালিতে ‘ইউক্রেনের বিরুদ্ধে রাশিয়ার আগ্রাসনের জন্য সবচেয়ে জোরালো ভাষায় নিন্দা’ জানানোয় নিজেদের অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করেছিলেন জি-২০ নেতারা। তবে পরিস্থিতি এবং নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে অন্যান্য মতামত ও ভিন্ন মূল্যায়ন ছিল বলে উল্লেখ করা হয়েছিল ঘোষণাপত্রে।দিল্লি ঘোষণায় যুদ্ধের জন্য সরাসরি রাশিয়ার সমালোচনা করা হয়নি। তবে এতে ‘বিশ্বব্যাপী খাদ্য ও জ্বালানি নিরাপত্তার ক্ষেত্রে ইউক্রেন যুদ্ধের মানবিক দুর্ভোগ ও নেতিবাচক প্রভাব’ সম্পর্কে বলা হয়েছে। এখানেও সদস্য দেশগুলোর মধ্যে ‘পরিস্থিতির ভিন্ন মতামত ও মূল্যায়ন’-এর ব্যাপারে উল্লেখ রয়েছে।এ বছরের ঘোষণায় সব দেশকে ‘আঞ্চলিক অধিগ্রহণের জন্য হুমকি বা শক্তির ব্যবহার থেকে বিরত থাকার’ আহ্বান জানানো হয়েছে, যা রাশিয়াকে ইঙ্গিত করে বলা হয়েছে ভাবা যেতে পারে।