আফগানিস্তানে তালিবান নারীদের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ করে দেওয়ার পর আমার একমাত্র আশা ছিল বৃত্তি নিয়ে বিদেশে পড়তে যাওয়া। এই কথা বলছিলেন ২০ বছর বয়সী আফগান তরুণী নাতকাই।নাতকাই নিরাপত্তার স্বার্থে তার নাম বদলেছেন। তালেবানরা তাদের বিরোধিতাকারী নারীদের ওপর কঠোরভাবে দমন চালিয়েছে।নাতকাই বলছেন যে, তিনি পড়াশোনা চালিয়ে যাচ্ছিলেন যদিও তার নিজের দেশে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ খুব কম ছিল। পরে সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাই বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার জন্য আমিরাতের বিলিয়নিয়ার ব্যবসায়ী শেখ খালাফ আহমদ আল হাবতুরের কাছ থেকে তিনি একটি বৃত্তি পান।
আফগান নারীদের জন্য বৃত্তি ঘোষণা করা হয়েছিল ২০২২ সালের ডিসেম্বরে তালিবান নারীদের বিশ্ববিদ্যালয় থেকে নিষিদ্ধ করার পর।বিবিসি জানতে পেরেছে মোট ১০০ জন আফগান নারী এই বৃত্তি অর্জনে সফল হয়েছেন। বিদেশে বসবাসকারী কিছু আফগান শিক্ষার্থী ইতোমধ্যে দুবাইয়ে চলে গেছেন। ২৩ আগস্ট নাতকাই তার পরিবারের কাছ থেকে বিমানবন্দরে বিদায় নিয়েছিলেন। তবে তার আশা ভেঙে গেল।
তিনি বলেন, তালিবান কর্মকর্তারা যখন আমাদের টিকিট ও স্টুডেন্ট ভিসা দেখেছিলেন, তারা বলেছিলেন যে, নারীদের স্টুডেন্ট ভিসায় আফগানিস্তান ত্যাগ করার অনুমতি নেই।নাতকাইয়ের মতো ৬০ জনকে বিমানবন্দর থেকে ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছিল।বিবিসি ছবিতে দেখতে পেয়েছে, কালো হিজাব পরা অল্পবয়সী মেয়েরা তাদের লাগেজের পাশে স্তম্ভিত ও বিধ্বস্ত অবস্থায় দাঁড়িয়ে রয়েছে।
নারীদের একাকী ভ্রমণের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে তালিবান। কেউ দেশের বাইরে যেতে চাইলে তাকে স্বামী কিংবা ভাই, কিংবা চাচা, কিংবা বাবাকে সঙ্গে নিয়ে যেতে হবে। একে বলা হচ্ছে মাহরাম। যার অর্থ পুরুষ সঙ্গী। কিন্তু এই পুরুষ সঙ্গী নিয়ে গিয়েও অনেকে পার পাননি। বৃত্তি পেয়ে আফগান নারীরা যে আমিরাতে যেতে পারছেন না, তা নিশ্চিত করেছে দুবাই বিশ্ববিদ্যালয় এবং বৃত্তি দেওয়া ওই ব্যবসায়ী আল হাবতুর। এক্সে (সাবেক টুইটার) একটি ভিডিও বার্তা দিয়ে আল হাবতুর তালিবান সরকারের সিদ্ধান্তের সমালোচনা করেছেন।হিউম্যান রাইটস ওয়াচের হিথার বার বলেন, তালেবান ইতোমধ্যে নারী ও মেয়েদের পড়ার সুযোগ বন্ধ করে দিয়েছে। তাদের নিষ্ঠুরতার নতুন ধাপ হলো নারীদের দেশের বাইরে পড়তে যেতে না দেওয়া।