বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজের হলে তৃতীয় বর্ষের এক ছাত্রী র্যাগিংয়ের শিকার হয়েছেন। ওই ছাত্রীকে গভীর রাতে দুই দফায় হলের একটি কক্ষে ডেকে নিয়ে দীর্ঘ সময় দাঁড় করিয়ে রেখে গালাগাল, হুমকি এবং মুঠোফোন তল্লাশি করা হয়েছে।এক পর্যায়ে অচেতন হয়ে পড়লে তাঁকে শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।এ ব্যাপারে সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়ে লাঞ্ছিত হয়েছেন সাংবাদিকরা। শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজের কমিউনিটি মেডিসিন বিভাগের শিক্ষক ডা. সৈয়দ বাকী বিল্লাহ ও প্যাথলজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. প্রবীর কুমার সাহা তাদের লাঞ্ছনা করেন। সাংবাদিকদের প্রথমে চড়-থাপ্পর, ধাক্কা ও পরে চেয়ার দিয়ে পেটানো হয়।
শের ই বাংলা মেডিকেল কলেজের তৃতীয় বর্ষের এক ছাত্রী র্যাগিংয়ের শিকার হন গত বুধবার রাতে। সেই ঘটনার বিচার দাবিতে ওই ছাত্রী ও তার মা শনিবার (২৬ আগস্ট) সকালে যান কলেজ অধ্যক্ষের কাছে। এ সময় সংবাদ সংগ্রহ করতে যান সময় টেলিভিশনের রিপোর্টার শাকিল মাহমুদ, চিত্র সাংবাদিক সুমন হাসানসহ চ্যানেল টোয়েন্টিফোরের স্টাফ রিপোর্টার কাওছার হোসেন রানা, চিত্র সাংবাদিক রুহুল আমিন, এশিয়ান টেলিভিশনের রিপোর্টার ফিরোজ মোস্তাফা ও চিত্র সাংবাদিক আজিম শরিফ এবং বাংলানিউটোয়েন্টিফোর.কমের স্টাফ করেসপন্ডেন্ট মুশফিক সৌরভ। ভুক্তভোগীরা তাদের বক্তব্য সাংবাদিকদের কাছে তুলে ধরায় হঠাৎ সাংবাদিকদের ওপর হামলা করেন দুই চিকিৎসক। সাংবাদিকদের কক্ষ থেকে বের করে দিয়ে র্যাগিংয়ের শিকার ওই ছাত্রী ও তার পরিবারকে আটকে রাখে তারা। সময় টেলিভিশনের রিপোর্টার শাকিল মাহামুদ জানান, ভুক্তভোগীর সাক্ষাৎকার নেওয়ার সময় হঠাৎ করেই ডা. বাকী ও ডা. প্রবীর আমাদের ওপর হামলা চালান। আমাদের ক্যামেরা ও ট্রাইপড ভাঙচুর করা হয়েছে। র্যাগিংয়ের ঘটনা ধামাচাপা দিতে আমাদের ওপর হামলা করা হয়েছে।
চ্যানেল টোন্টিফোরের স্টাফ রিপোর্টার কাওছার হোসেন রানা বলেন, আমাদের ওপর হামলা করাটা তাদের অপকর্ম ঢাকার প্রচেষ্টা। প্রায় ঘণ্টাখানেক ধরে অবরুদ্ধ থাকার পর পুলিশ এসে দুপুর ১টার দিকে আমাদের উদ্ধার করে।বরিশাল প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক এস এম জাকির হোসেন বলেন, হামলার ঘটনা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। আমরা ঘটনার বিচার চাই।ঘটনার পর দুপুর দেড়টার দিকে পুলিশের মধ্যস্থতায় কলেজ কর্তৃপক্ষ ও সাংবাদিক নেতারা আলোচনায় বসেন। সেখানে হামলাকারী দুই চিকিৎসক হামলার শিকার সাংবাদিকদের কাছে ক্ষমা চান।কলেজের অধ্যক্ষ ফয়জুল বাশার বলেন, ভুল বোঝাবুঝি থেকে ঘটনাটি ঘটেছে। বিষয়টি মীমাংসা করা হয়েছে। এ ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে।
বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের উপকমিশনার আলী আশরাফ ভূঞা বলেন, দুই পক্ষকে বসিয়ে বিষয়টির সমাধান করা হয়েছে।গত বুধবার রাতে ছাত্রী হলের ৬০৬ নম্বর কক্ষে তৃতীয় বর্ষের এক ছাত্রীকে নির্যাতনের ঘটনা ঘটে। হলে অবস্থান করা ডেন্টাল ৭তম ব্যাচের শিক্ষার্থী ফাহমিদা রওশন ওরফে প্রভা, ৫০তম ব্যাচের নীলিমা হোসেন ওরফে জুঁইয়ের নেতৃত্বে এ ঘটনা ঘটে। তারা নিজেদের ছাত্রলীগের নেত্রী হিসেবে পরিচয় দিয়েছেন।