ঢাকা, বৃহস্পতিবার ২১ই নভেম্বর ২০২৪ , বাংলা - 

সরকার হাটতে‘বড় ঝাঁকুনি’ দরকার:ফখরুল

স্টাফ রিপোর্টার ।।ঢাকাপ্রেস২৪.কম

2023-08-23, 12.00 AM
সরকার হাটতে‘বড় ঝাঁকুনি’ দরকার:ফখরুল

সরকার হাটতে ‘বড় রকমের ঝাঁকুনি’ দরকার বলে মন্তব্য করেছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।বুধবার দুপুরে এক আলোচনা সভায় বিএনপি মহাসচিব এই মন্তব্য করেন।তিনি বলেন, ‘‘ আওয়ামী লীগের নিজেদেরকে এদেশের মালিক মনে করে। নূরুল হক নূর সাহেব বলছিলেন সংবিধানে দেখিয়ে যে, এদেশের মালিক হচ্ছে জনগন। না। তারা মনে করে এদেশের মালিক হচ্ছে আওয়ামী লীগ, আরো সঠিক করে বলতে গেলে.. একজন ব্যক্তি অথবা তার পরিবার। এটা হচ্ছে বাস্তবতা।”‘‘ এই বাস্তবতা থেকে বেরিয়ে আসতে হলে বড় রকমের ঝাকুনি দেয়া দরকার, বড় রকমের একটা যুদ্ধ দরকার-সংগ্রাম দরকার। এই সংগ্রাম এই যুদ্ধে আমরা আছি। যুদ্ধ-সংগ্রাম করে সবসময় পরিবর্তন এসেছে। আমরা যেকথাটা বার বার বলতে চাই যে, অভ্যুত্থান, সুনামির মতো অভ্যুত্থান ছাড়া এই ভয়াবহ যে দানব আমাদের বুকে চেপে বসে আছে একে সরাতে হবে না, সম্ভব হয় না।”

 

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘‘আমরা সবাই একসাথে কাজ করছি, লড়াই করছি-সংগ্রাম করছি। সমস্ত রাজনৈতিক দলগুলো আমরা একত্রিত হয়েছি।শুধু রাজনৈতিক দল এক সাথে আসলে হবে না, মানুষকে এক সাথে হতে হবে এবং মানুষকে নিয়ে সংগ্রামে মধ্য দিয়ে এদেরকে সরাতে হবে।”

 

‘‘ আমাদের কোনো বিকল্প নাই। আমাদের একটাই মাত্র লক্ষ্য যে, এদেরকে সরিয়ে জনগনের একটা সরকার, জনগনের একটা পার্লামেন্ট তৈরি করতে হবে। আজকের সংগ্রাম-যুদ্ধ সবটাই করতে হবে তরুনদের। আসুন আমরা আমাদের তরুন সমাজকে সংগঠিত করি। তাদেরকে আরও সামনে আসার জন্য আমরা আহ্বান জানাই। সকলকে সঙ্গে নিয়ে আমরা এই অবস্থার পরিবর্তন করব ইনশাল্লাহ।”

 

‘নিজের কষ্টের কথা বললেন’

 

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার এক সময়ের ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি মির্জা ফখরুল বলেন, ‘‘আমি খুব কষ্ট পাই যখন দেখি যে, জঘন্যতম একটা ঘটনা ঘটেছেৃ একজন নারী বা একজন ছাত্রী নির্যাতিত হয়েছে সেই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের তরুনরা-ছাত্ররা এর প্রতিবাদে রাস্তায় নামে না। অথবা সমাজে রাষ্ট্রে মানুষের আজকে সাংবিধানিক অধিকার হরণ করে নেয়া হচ্ছে, মানবাধিকার হরণ করে নেয়া হচ্ছেৃ কোথায় আমরা তো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বা অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সেইভাবে কোনো প্রতিবাদ দেখতে পারছি না, রাস্তায় নামছে না।”

 

‘‘ অথচ আমরা পাকিস্তান আমলে যখন ছাত্র ছিলাম সবচেয়ে অগ্রনী ভুমিকা পালন করেছে কিন্তু ছাত্ররা সমাজের জন্যে, পরিবর্তনের জন্য, অর্থনৈতিক ব্যবস্থার পরিবর্তনের জন্য, রাষ্ট্র পরিবর্তনের জন্য তরুনরাই অগ্রনী ভূমিকা পালন করেছে। এমনকি নব্বইযের যে ছাত্র গনঅভ্যূত্থান সেখানেও কিন্তু নেতৃত্ব ও আন্দোলনের মূল ভূমিকায় ছিলো ছাত্ররা। দুর্ভাগ্য আমাদের এখন পর্যন্ত সেই ধরনের তরুনদের সেই যুবকদের সেই ছাত্রদের সেইভাবে সামনে দেখতে পারছিনা।”

 

তিনি বলেন, ‘‘ আমি অনেক ছাত্রকে জিজ্ঞাসা করেছি, আজকাল ছাত্ররা আসে না কেনো? আমি দশম শ্রেনীতে পড়ে একজন ছাত্রকে জিজ্ঞাসা করেছিলো তোমাদের ক্লাসের বন্ধুরা কি হতে চায়? সে বলছে পলিটিক্স করতে চায়। আমি অবাক হয়েছি, বিস্মিত হয়েছি। কারণ সে যে স্কুলে পড়ে সেখানে সমস্ত বড়লোকদের ছেলেরা পড়ে। কেনো পলিটিক্স করতে চায় জানতে চাইলাম। সে বললো যে, পলিটিশিয়ানদের অনেক টাকা।

 

এ সময়ে অনুষ্ঠানে অনেকে হাসতে থাকেন।

 

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘‘ এটা হাসির কথা নয়। আপনাকে হিসাব করতে হবে। আজকে যে সমাজ তৈরি হয়েছে, আজকে যে রাষ্ট্র ব্যবস্থা তৈরি হয়েছে, আজকে যে তার চোখের সামনে সে দেখলো পলিটিশিয়ানদের অনেক টাকাৃ অর্থাত যারা সরকারি দল করছে তারা এতো বেশি বিত্তশালী হয়ে উঠেছে যেটা দেখে মনে হয় যে ওটাই দরকার।”

 

‘‘আমরা যখন ছাত্র আমরা আকৃষ্ট হয়েছি যে, সমাজ পরিবর্তনের কথা কে বলছে? আমাদের খুব বেশি আকৃষ্ট করতো সুকান্তের সেই কবিতাৃ অবাক পৃথিবী অবাব করলে তুমি, জন্মেই দেখি ক্ষুব্ধ স্বদেশ ভূমি। তখন শিশু ছিলাম, এখন তো বৃদ্ধ। এখনও একই কথা বলতে হচ্ছে, অবাক ‍পৃথিবী অবাক করলে তুমি জন্মেই দেখি ক্ষুব্ধ স্বদেশ ভূমি। তাহলে এই যে ৭৫ বছর বয়স, ৭০ বছর বয়স ৬০ বছর বয়সৃ এই সময়গুলো আজকে আমাদের ব্যর্থ হয়ে গেলো, ‍বৃথা হয়ে গেছে। এটার পরিবর্তন দরকার। এসবের পরিবর্তন আসতে হবে তরুনদের কাছ থেকে।”

 

তরুন-যুবকরা জাগিয়ে তোলার ওপর গুরুত্বারোপ করেন বিএনপি মহাসচিব।

 

ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি কার্যালয় ভবনের মিলনায়তনে বাংলাদেশ গণঅধিকার পরিষদ(নূর) উদ্যোগে ‘নাগরিকদের সাংবিধনিক মৌলিক ও মানবাধিকার সুরক্ষা’ শীর্ষক এই আলোচনা সভা হয়।

 

‘আওয়ামী লীগের মিথ্যাচার’

 

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘‘ আওয়ামী লীগ অনর্গল মিথ্যাচার করে। গতকাল তাদের সাধারণ সম্পাদক (ওবায়দুল কাদের)সাহেব অত্যন্ত বিশিষ্ট ভদ্রলোক মানুষ। তিনি বলছেন যে, গুজবের কান দেবেন না। বিএনপি অনেকগুলো ফ্রন্ট তৈরি করেছে যে ফ্রন্ট গুলোতে তারা এখন পয়সা দিয়ে মিথ্যা গুজব ছড়াচ্ছে।”

 

‘‘তাদের(আওয়ামী লীগ সরকার) তো পুরোটাই মিথ্যার ওপরে। এই যে প্রবৃদ্ধি বা গ্রোথ এর কথা বলে না। এই গ্রোথের যত ডাটা বাংলাদেশে পরিসংখ্যান ব্যুরোর(বিবিএস)ৃ এটা আমার কথা নয়, এটা গবেষকদের কথাৃ আপনি যদি জিয়া হাছানের ‘উন্নয়ন বিভ্রম’ বইটা পড়েন সেই বইতে খুব পরিস্কারভাবে বিবিএসের পরিসংখ্যান দিয়ে প্রমাণ করছে যে, পুরোটাই হচ্ছে মিথ্যা। আজকে এতো প্রবৃদ্ধি দেখেন, মাথাপিছু আয় দেখেন সব কিছু তাদের নিজেদের তৈরি করা।”

 

আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দের বক্তব্যের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, ‘‘ আজকে পত্রিকায় উঠেছে যে, আমার মতো মিথ্যাবাদী আর নাই। আমরা তো একটা রুচিশীলতার মধ্য দিয়ে বড় হয়েছি। তারা যেভাষায় কথা বলে আমরা তো সেই ভাষায় কথা বলতে অভ্যস্ত নই। বিষয়টা হচ্ছে যে, উনারা নাম ধরে গালিগালাজ করেন। আমরা মনে করি এটা কোনো রাজনৈতিক শিষ্টাচার না।”

 

‘‘ অবশ্যই আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক শিষ্টাচার থাকার কথাও না। কারণ তাদের বডি ল্যাংগুয়েজ হচ্ছে সন্ত্রাসী ল্যাংগুয়েজ। আমি  এই কারণে বলি, আওয়ামী লীগ মানেই হচ্ছে একটা সন্ত্রাসী কালচার।আপনি গ্রামে চায়ের দোকানে যাবেন কেমন করে বুঝবেন কে আওয়ামী লীগ করে কে করে না। দেখবেন যে টেবিলে ওপর যে সবচেয়ে বেশি টেবিল থাপড়াচ্ছে, জোরে কথা বলছে তাকে গালি দিচ্ছে আপনি নিশ্চিত থাকবেন সে আওয়ামী লীগ।”

 

সংগঠনের সভাপতি ডাকুস সাবেক ভিপি নুরুল হক নূর বলেন, ‘‘ কত ভীত সন্ত্রস্ত হলে আজকে টেলিভিশনেও একটা বৃহত বিরোধী দল বিএনপির চেয়ারম্যান তার বক্তব্য টেলিভিশনে পত্রিকায় প্রচার করা যাচ্ছে না। এর চেয়ে কুতসিত রাষ্ট্রব্যবস্থা কি হতে পারে? জঘন্য সরকারের পদক্ষেপ আর কি হতে পারে যে, বিরোধী দলের লিডারের বক্তব্য টেলিভিশনে প্রচার করা যাবে না। এখন তিনি(তারেক রহমান) ইউটিউবে,ভার্চুয়ালি বক্তব্য দেন সেটাও বন্ধ করার জন্য নাকি হাইকোর্টের দৃষ্টিতে আনা হয়েছে।”

 

‘‘ হাইকোর্টকে তো আপনারা ক্যাংগারু কোর্টে পরিণত করেছেন। আজকে বিচারপতিরা দাবি করছে শপথবাক্য রাজনীতিবিদ, আশ্চরযজনক বক্তব্য। আরেকজন বিচারপতি তো আরেকটি রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন বাতিল করতে চান। তো এই দলকানা দলবাজরা কিভাবে বিচারপতি হন? সুপ্রিম কোর্ট থেকে ইউনাইটেড ল‘ইয়ার্স ফ্রন্ট আওয়াজ তুলেছে, তারা সারাদেশের আইনজীবীদের নিয়ে যে কর্মসূচি করছেন আমরা এই সমাবেশ থেকে তাদের প্রতি সংহতি জানাচ্ছি।”

 

এই সরকারের পতনে সকলকে সর্বাত্মক প্রস্তুতি নেয়ার আহ্বানও জানান নূর।

 

তিনি বলেন, ‘‘ সরকার পরিবর্তন হবে এটা আল্লাহ আসমানে ফয়সালা হয়ে গেছে। যেকোনো সময় পরিবর্তন হবে, মাস্ট বি চেঞ্জ হবে।”

 

নূরের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খানের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় কল্যাণ পার্টির সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম, বিএনপির সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, ন্যাশনাল পিপলস পার্টির ফরিদুজ্জামান ফরহাদ, জাতীয় পার্টি(কাজী জাফর) আহসান হাবিব লিংকন, এবি পার্টির এএফএম সোলায়মান চৌধুরী, জাতীয় দলের সৈয়দ এহসানুল হুদা, জাগপার রাশেদ প্রধান, এনডিপির আবু তাহের, বাংলাদেশ রিপাবলিকান পার্টির কেএম আবু হানিফ, জাঙ্গীরনগর বিশ্বদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক আবদুল লতিফ মাসুম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক রুহুল আমীন, গণঅধিকার পরিষদের এসএম নূরে এরশাদ সিদ্দিকী, রাখাল রাহা প্রমূখ বক্তব্য রাখেন।

সরকার হাটতে ‘বড় রকমের ঝাঁকুনি’ দরকার বলে মন্তব্য করেছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।বুধবার দুপুরে এক আলোচনা সভায় বিএনপি মহাসচিব এই মন্তব্য করেন।

তিনি বলেন, ‘‘ আওয়ামী লীগের নিজেদেরকে এদেশের মালিক মনে করে। নূরুল হক নূর সাহেব বলছিলেন সংবিধানে দেখিয়ে যে, এদেশের মালিক হচ্ছে জনগন। না। তারা মনে করে এদেশের মালিক হচ্ছে আওয়ামী লীগ, আরো সঠিক করে বলতে গেলে.. একজন ব্যক্তি অথবা তার পরিবার। এটা হচ্ছে বাস্তবতা।”

 

‘‘ এই বাস্তবতা থেকে বেরিয়ে আসতে হলে বড় রকমের ঝাকুনি দেয়া দরকার, বড় রকমের একটা যুদ্ধ দরকার-সংগ্রাম দরকার। এই সংগ্রাম এই যুদ্ধে আমরা আছি। যুদ্ধ-সংগ্রাম করে সবসময় পরিবর্তন এসেছে। আমরা যেকথাটা বার বার বলতে চাই যে, অভ্যুত্থান, সুনামির মতো অভ্যুত্থান ছাড়া এই ভয়াবহ যে দানব আমাদের বুকে চেপে বসে আছে একে সরাতে হবে না, সম্ভব হয় না।”

 

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘‘আমরা সবাই একসাথে কাজ করছি, লড়াই করছি-সংগ্রাম করছি। সমস্ত রাজনৈতিক দলগুলো আমরা একত্রিত হয়েছি।শুধু রাজনৈতিক দল এক সাথে আসলে হবে না, মানুষকে এক সাথে হতে হবে এবং মানুষকে নিয়ে সংগ্রামে মধ্য দিয়ে এদেরকে সরাতে হবে।”

 

‘‘ আমাদের কোনো বিকল্প নাই। আমাদের একটাই মাত্র লক্ষ্য যে, এদেরকে সরিয়ে জনগনের একটা সরকার, জনগনের একটা পার্লামেন্ট তৈরি করতে হবে। আজকের সংগ্রাম-যুদ্ধ সবটাই করতে হবে তরুনদের। আসুন আমরা আমাদের তরুন সমাজকে সংগঠিত করি। তাদেরকে আরও সামনে আসার জন্য আমরা আহ্বান জানাই। সকলকে সঙ্গে নিয়ে আমরা এই অবস্থার পরিবর্তন করব ইনশাল্লাহ।”

 

‘নিজের কষ্টের কথা বললেন’

 

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার এক সময়ের ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি মির্জা ফখরুল বলেন, ‘‘আমি খুব কষ্ট পাই যখন দেখি যে, জঘন্যতম একটা ঘটনা ঘটেছেৃ একজন নারী বা একজন ছাত্রী নির্যাতিত হয়েছে সেই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের তরুনরা-ছাত্ররা এর প্রতিবাদে রাস্তায় নামে না। অথবা সমাজে রাষ্ট্রে মানুষের আজকে সাংবিধানিক অধিকার হরণ করে নেয়া হচ্ছে, মানবাধিকার হরণ করে নেয়া হচ্ছেৃ কোথায় আমরা তো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বা অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সেইভাবে কোনো প্রতিবাদ দেখতে পারছি না, রাস্তায় নামছে না।”

 

‘‘ অথচ আমরা পাকিস্তান আমলে যখন ছাত্র ছিলাম সবচেয়ে অগ্রনী ভুমিকা পালন করেছে কিন্তু ছাত্ররা সমাজের জন্যে, পরিবর্তনের জন্য, অর্থনৈতিক ব্যবস্থার পরিবর্তনের জন্য, রাষ্ট্র পরিবর্তনের জন্য তরুনরাই অগ্রনী ভূমিকা পালন করেছে। এমনকি নব্বইযের যে ছাত্র গনঅভ্যূত্থান সেখানেও কিন্তু নেতৃত্ব ও আন্দোলনের মূল ভূমিকায় ছিলো ছাত্ররা। দুর্ভাগ্য আমাদের এখন পর্যন্ত সেই ধরনের তরুনদের সেই যুবকদের সেই ছাত্রদের সেইভাবে সামনে দেখতে পারছিনা।”

 

তিনি বলেন, ‘‘ আমি অনেক ছাত্রকে জিজ্ঞাসা করেছি, আজকাল ছাত্ররা আসে না কেনো? আমি দশম শ্রেনীতে পড়ে একজন ছাত্রকে জিজ্ঞাসা করেছিলো তোমাদের ক্লাসের বন্ধুরা কি হতে চায়? সে বলছে পলিটিক্স করতে চায়। আমি অবাক হয়েছি, বিস্মিত হয়েছি। কারণ সে যে স্কুলে পড়ে সেখানে সমস্ত বড়লোকদের ছেলেরা পড়ে। কেনো পলিটিক্স করতে চায় জানতে চাইলাম। সে বললো যে, পলিটিশিয়ানদের অনেক টাকা।

 

এ সময়ে অনুষ্ঠানে অনেকে হাসতে থাকেন।

 

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘‘ এটা হাসির কথা নয়। আপনাকে হিসাব করতে হবে। আজকে যে সমাজ তৈরি হয়েছে, আজকে যে রাষ্ট্র ব্যবস্থা তৈরি হয়েছে, আজকে যে তার চোখের সামনে সে দেখলো পলিটিশিয়ানদের অনেক টাকাৃ অর্থাত যারা সরকারি দল করছে তারা এতো বেশি বিত্তশালী হয়ে উঠেছে যেটা দেখে মনে হয় যে ওটাই দরকার।”

 

‘‘আমরা যখন ছাত্র আমরা আকৃষ্ট হয়েছি যে, সমাজ পরিবর্তনের কথা কে বলছে? আমাদের খুব বেশি আকৃষ্ট করতো সুকান্তের সেই কবিতাৃ অবাক পৃথিবী অবাব করলে তুমি, জন্মেই দেখি ক্ষুব্ধ স্বদেশ ভূমি। তখন শিশু ছিলাম, এখন তো বৃদ্ধ। এখনও একই কথা বলতে হচ্ছে, অবাক ‍পৃথিবী অবাক করলে তুমি জন্মেই দেখি ক্ষুব্ধ স্বদেশ ভূমি। তাহলে এই যে ৭৫ বছর বয়স, ৭০ বছর বয়স ৬০ বছর বয়সৃ এই সময়গুলো আজকে আমাদের ব্যর্থ হয়ে গেলো, ‍বৃথা হয়ে গেছে। এটার পরিবর্তন দরকার। এসবের পরিবর্তন আসতে হবে তরুনদের কাছ থেকে।”

 

তরুন-যুবকরা জাগিয়ে তোলার ওপর গুরুত্বারোপ করেন বিএনপি মহাসচিব।

 

ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি কার্যালয় ভবনের মিলনায়তনে বাংলাদেশ গণঅধিকার পরিষদ(নূর) উদ্যোগে ‘নাগরিকদের সাংবিধনিক মৌলিক ও মানবাধিকার সুরক্ষা’ শীর্ষক এই আলোচনা সভা হয়।

 

‘আওয়ামী লীগের মিথ্যাচার’

 

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘‘ আওয়ামী লীগ অনর্গল মিথ্যাচার করে। গতকাল তাদের সাধারণ সম্পাদক (ওবায়দুল কাদের)সাহেব অত্যন্ত বিশিষ্ট ভদ্রলোক মানুষ। তিনি বলছেন যে, গুজবের কান দেবেন না। বিএনপি অনেকগুলো ফ্রন্ট তৈরি করেছে যে ফ্রন্ট গুলোতে তারা এখন পয়সা দিয়ে মিথ্যা গুজব ছড়াচ্ছে।”

 

‘‘তাদের(আওয়ামী লীগ সরকার) তো পুরোটাই মিথ্যার ওপরে। এই যে প্রবৃদ্ধি বা গ্রোথ এর কথা বলে না। এই গ্রোথের যত ডাটা বাংলাদেশে পরিসংখ্যান ব্যুরোর(বিবিএস)ৃ এটা আমার কথা নয়, এটা গবেষকদের কথাৃ আপনি যদি জিয়া হাছানের ‘উন্নয়ন বিভ্রম’ বইটা পড়েন সেই বইতে খুব পরিস্কারভাবে বিবিএসের পরিসংখ্যান দিয়ে প্রমাণ করছে যে, পুরোটাই হচ্ছে মিথ্যা। আজকে এতো প্রবৃদ্ধি দেখেন, মাথাপিছু আয় দেখেন সব কিছু তাদের নিজেদের তৈরি করা।”

 

আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দের বক্তব্যের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, ‘‘ আজকে পত্রিকায় উঠেছে যে, আমার মতো মিথ্যাবাদী আর নাই। আমরা তো একটা রুচিশীলতার মধ্য দিয়ে বড় হয়েছি। তারা যেভাষায় কথা বলে আমরা তো সেই ভাষায় কথা বলতে অভ্যস্ত নই। বিষয়টা হচ্ছে যে, উনারা নাম ধরে গালিগালাজ করেন। আমরা মনে করি এটা কোনো রাজনৈতিক শিষ্টাচার না।”

 

‘‘ অবশ্যই আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক শিষ্টাচার থাকার কথাও না। কারণ তাদের বডি ল্যাংগুয়েজ হচ্ছে সন্ত্রাসী ল্যাংগুয়েজ। আমি  এই কারণে বলি, আওয়ামী লীগ মানেই হচ্ছে একটা সন্ত্রাসী কালচার।আপনি গ্রামে চায়ের দোকানে যাবেন কেমন করে বুঝবেন কে আওয়ামী লীগ করে কে করে না। দেখবেন যে টেবিলে ওপর যে সবচেয়ে বেশি টেবিল থাপড়াচ্ছে, জোরে কথা বলছে তাকে গালি দিচ্ছে আপনি নিশ্চিত থাকবেন সে আওয়ামী লীগ।”

 

সংগঠনের সভাপতি ডাকুস সাবেক ভিপি নুরুল হক নূর বলেন, ‘‘ কত ভীত সন্ত্রস্ত হলে আজকে টেলিভিশনেও একটা বৃহত বিরোধী দল বিএনপির চেয়ারম্যান তার বক্তব্য টেলিভিশনে পত্রিকায় প্রচার করা যাচ্ছে না। এর চেয়ে কুতসিত রাষ্ট্রব্যবস্থা কি হতে পারে? জঘন্য সরকারের পদক্ষেপ আর কি হতে পারে যে, বিরোধী দলের লিডারের বক্তব্য টেলিভিশনে প্রচার করা যাবে না। এখন তিনি(তারেক রহমান) ইউটিউবে,ভার্চুয়ালি বক্তব্য দেন সেটাও বন্ধ করার জন্য নাকি হাইকোর্টের দৃষ্টিতে আনা হয়েছে।”

 

‘‘ হাইকোর্টকে তো আপনারা ক্যাংগারু কোর্টে পরিণত করেছেন। আজকে বিচারপতিরা দাবি করছে শপথবাক্য রাজনীতিবিদ, আশ্চরযজনক বক্তব্য। আরেকজন বিচারপতি তো আরেকটি রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন বাতিল করতে চান। তো এই দলকানা দলবাজরা কিভাবে বিচারপতি হন? সুপ্রিম কোর্ট থেকে ইউনাইটেড ল‘ইয়ার্স ফ্রন্ট আওয়াজ তুলেছে, তারা সারাদেশের আইনজীবীদের নিয়ে যে কর্মসূচি করছেন আমরা এই সমাবেশ থেকে তাদের প্রতি সংহতি জানাচ্ছি।”

 

এই সরকারের পতনে সকলকে সর্বাত্মক প্রস্তুতি নেয়ার আহ্বানও জানান নূর।

 

তিনি বলেন, ‘‘ সরকার পরিবর্তন হবে এটা আল্লাহ আসমানে ফয়সালা হয়ে গেছে। যেকোনো সময় পরিবর্তন হবে, মাস্ট বি চেঞ্জ হবে।”

 

নূরের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খানের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় কল্যাণ পার্টির সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম, বিএনপির সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, ন্যাশনাল পিপলস পার্টির ফরিদুজ্জামান ফরহাদ, জাতীয় পার্টি(কাজী জাফর) আহসান হাবিব লিংকন, এবি পার্টির এএফএম সোলায়মান চৌধুরী, জাতীয় দলের সৈয়দ এহসানুল হুদা, জাগপার রাশেদ প্রধান, এনডিপির আবু তাহের, বাংলাদেশ রিপাবলিকান পার্টির কেএম আবু হানিফ, জাঙ্গীরনগর বিশ্বদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক আবদুল লতিফ মাসুম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক রুহুল আমীন, গণঅধিকার পরিষদের এসএম নূরে এরশাদ সিদ্দিকী, রাখাল রাহা প্রমূখ বক্তব্য রাখেন।

সরকার হাটতে ‘বড় রকমের ঝাঁকুনি’ দরকার বলে মন্তব্য করেছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।বুধবার দুপুরে এক আলোচনা সভায় বিএনপি মহাসচিব এই মন্তব্য করেন।

তিনি বলেন, ‘‘ আওয়ামী লীগের নিজেদেরকে এদেশের মালিক মনে করে। নূরুল হক নূর সাহেব বলছিলেন সংবিধানে দেখিয়ে যে, এদেশের মালিক হচ্ছে জনগন। না। তারা মনে করে এদেশের মালিক হচ্ছে আওয়ামী লীগ, আরো সঠিক করে বলতে গেলে.. একজন ব্যক্তি অথবা তার পরিবার। এটা হচ্ছে বাস্তবতা।”

 

‘‘ এই বাস্তবতা থেকে বেরিয়ে আসতে হলে বড় রকমের ঝাকুনি দেয়া দরকার, বড় রকমের একটা যুদ্ধ দরকার-সংগ্রাম দরকার। এই সংগ্রাম এই যুদ্ধে আমরা আছি। যুদ্ধ-সংগ্রাম করে সবসময় পরিবর্তন এসেছে। আমরা যেকথাটা বার বার বলতে চাই যে, অভ্যুত্থান, সুনামির মতো অভ্যুত্থান ছাড়া এই ভয়াবহ যে দানব আমাদের বুকে চেপে বসে আছে একে সরাতে হবে না, সম্ভব হয় না।”

 

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘‘আমরা সবাই একসাথে কাজ করছি, লড়াই করছি-সংগ্রাম করছি। সমস্ত রাজনৈতিক দলগুলো আমরা একত্রিত হয়েছি।শুধু রাজনৈতিক দল এক সাথে আসলে হবে না, মানুষকে এক সাথে হতে হবে এবং মানুষকে নিয়ে সংগ্রামে মধ্য দিয়ে এদেরকে সরাতে হবে।”

 

‘‘ আমাদের কোনো বিকল্প নাই। আমাদের একটাই মাত্র লক্ষ্য যে, এদেরকে সরিয়ে জনগনের একটা সরকার, জনগনের একটা পার্লামেন্ট তৈরি করতে হবে। আজকের সংগ্রাম-যুদ্ধ সবটাই করতে হবে তরুনদের। আসুন আমরা আমাদের তরুন সমাজকে সংগঠিত করি। তাদেরকে আরও সামনে আসার জন্য আমরা আহ্বান জানাই। সকলকে সঙ্গে নিয়ে আমরা এই অবস্থার পরিবর্তন করব ইনশাল্লাহ।”

 

‘নিজের কষ্টের কথা বললেন’

 

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার এক সময়ের ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি মির্জা ফখরুল বলেন, ‘‘আমি খুব কষ্ট পাই যখন দেখি যে, জঘন্যতম একটা ঘটনা ঘটেছেৃ একজন নারী বা একজন ছাত্রী নির্যাতিত হয়েছে সেই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের তরুনরা-ছাত্ররা এর প্রতিবাদে রাস্তায় নামে না। অথবা সমাজে রাষ্ট্রে মানুষের আজকে সাংবিধানিক অধিকার হরণ করে নেয়া হচ্ছে, মানবাধিকার হরণ করে নেয়া হচ্ছেৃ কোথায় আমরা তো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বা অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সেইভাবে কোনো প্রতিবাদ দেখতে পারছি না, রাস্তায় নামছে না।”

 

‘‘ অথচ আমরা পাকিস্তান আমলে যখন ছাত্র ছিলাম সবচেয়ে অগ্রনী ভুমিকা পালন করেছে কিন্তু ছাত্ররা সমাজের জন্যে, পরিবর্তনের জন্য, অর্থনৈতিক ব্যবস্থার পরিবর্তনের জন্য, রাষ্ট্র পরিবর্তনের জন্য তরুনরাই অগ্রনী ভূমিকা পালন করেছে। এমনকি নব্বইযের যে ছাত্র গনঅভ্যূত্থান সেখানেও কিন্তু নেতৃত্ব ও আন্দোলনের মূল ভূমিকায় ছিলো ছাত্ররা। দুর্ভাগ্য আমাদের এখন পর্যন্ত সেই ধরনের তরুনদের সেই যুবকদের সেই ছাত্রদের সেইভাবে সামনে দেখতে পারছিনা।”

 

তিনি বলেন, ‘‘ আমি অনেক ছাত্রকে জিজ্ঞাসা করেছি, আজকাল ছাত্ররা আসে না কেনো? আমি দশম শ্রেনীতে পড়ে একজন ছাত্রকে জিজ্ঞাসা করেছিলো তোমাদের ক্লাসের বন্ধুরা কি হতে চায়? সে বলছে পলিটিক্স করতে চায়। আমি অবাক হয়েছি, বিস্মিত হয়েছি। কারণ সে যে স্কুলে পড়ে সেখানে সমস্ত বড়লোকদের ছেলেরা পড়ে। কেনো পলিটিক্স করতে চায় জানতে চাইলাম। সে বললো যে, পলিটিশিয়ানদের অনেক টাকা।

 

এ সময়ে অনুষ্ঠানে অনেকে হাসতে থাকেন।

 

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘‘ এটা হাসির কথা নয়। আপনাকে হিসাব করতে হবে। আজকে যে সমাজ তৈরি হয়েছে, আজকে যে রাষ্ট্র ব্যবস্থা তৈরি হয়েছে, আজকে যে তার চোখের সামনে সে দেখলো পলিটিশিয়ানদের অনেক টাকাৃ অর্থাত যারা সরকারি দল করছে তারা এতো বেশি বিত্তশালী হয়ে উঠেছে যেটা দেখে মনে হয় যে ওটাই দরকার।”

 

‘‘আমরা যখন ছাত্র আমরা আকৃষ্ট হয়েছি যে, সমাজ পরিবর্তনের কথা কে বলছে? আমাদের খুব বেশি আকৃষ্ট করতো সুকান্তের সেই কবিতাৃ অবাক পৃথিবী অবাব করলে তুমি, জন্মেই দেখি ক্ষুব্ধ স্বদেশ ভূমি। তখন শিশু ছিলাম, এখন তো বৃদ্ধ। এখনও একই কথা বলতে হচ্ছে, অবাক ‍পৃথিবী অবাক করলে তুমি জন্মেই দেখি ক্ষুব্ধ স্বদেশ ভূমি। তাহলে এই যে ৭৫ বছর বয়স, ৭০ বছর বয়স ৬০ বছর বয়সৃ এই সময়গুলো আজকে আমাদের ব্যর্থ হয়ে গেলো, ‍বৃথা হয়ে গেছে। এটার পরিবর্তন দরকার। এসবের পরিবর্তন আসতে হবে তরুনদের কাছ থেকে।”

 

তরুন-যুবকরা জাগিয়ে তোলার ওপর গুরুত্বারোপ করেন বিএনপি মহাসচিব।

 

ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি কার্যালয় ভবনের মিলনায়তনে বাংলাদেশ গণঅধিকার পরিষদ(নূর) উদ্যোগে ‘নাগরিকদের সাংবিধনিক মৌলিক ও মানবাধিকার সুরক্ষা’ শীর্ষক এই আলোচনা সভা হয়।

 

‘আওয়ামী লীগের মিথ্যাচার’

 

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘‘ আওয়ামী লীগ অনর্গল মিথ্যাচার করে। গতকাল তাদের সাধারণ সম্পাদক (ওবায়দুল কাদের)সাহেব অত্যন্ত বিশিষ্ট ভদ্রলোক মানুষ। তিনি বলছেন যে, গুজবের কান দেবেন না। বিএনপি অনেকগুলো ফ্রন্ট তৈরি করেছে যে ফ্রন্ট গুলোতে তারা এখন পয়সা দিয়ে মিথ্যা গুজব ছড়াচ্ছে।”

 

‘‘তাদের(আওয়ামী লীগ সরকার) তো পুরোটাই মিথ্যার ওপরে। এই যে প্রবৃদ্ধি বা গ্রোথ এর কথা বলে না। এই গ্রোথের যত ডাটা বাংলাদেশে পরিসংখ্যান ব্যুরোর(বিবিএস)ৃ এটা আমার কথা নয়, এটা গবেষকদের কথাৃ আপনি যদি জিয়া হাছানের ‘উন্নয়ন বিভ্রম’ বইটা পড়েন সেই বইতে খুব পরিস্কারভাবে বিবিএসের পরিসংখ্যান দিয়ে প্রমাণ করছে যে, পুরোটাই হচ্ছে মিথ্যা। আজকে এতো প্রবৃদ্ধি দেখেন, মাথাপিছু আয় দেখেন সব কিছু তাদের নিজেদের তৈরি করা।”

 

আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দের বক্তব্যের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, ‘‘ আজকে পত্রিকায় উঠেছে যে, আমার মতো মিথ্যাবাদী আর নাই। আমরা তো একটা রুচিশীলতার মধ্য দিয়ে বড় হয়েছি। তারা যেভাষায় কথা বলে আমরা তো সেই ভাষায় কথা বলতে অভ্যস্ত নই। বিষয়টা হচ্ছে যে, উনারা নাম ধরে গালিগালাজ করেন। আমরা মনে করি এটা কোনো রাজনৈতিক শিষ্টাচার না।”

 

‘‘ অবশ্যই আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক শিষ্টাচার থাকার কথাও না। কারণ তাদের বডি ল্যাংগুয়েজ হচ্ছে সন্ত্রাসী ল্যাংগুয়েজ। আমি  এই কারণে বলি, আওয়ামী লীগ মানেই হচ্ছে একটা সন্ত্রাসী কালচার।আপনি গ্রামে চায়ের দোকানে যাবেন কেমন করে বুঝবেন কে আওয়ামী লীগ করে কে করে না। দেখবেন যে টেবিলে ওপর যে সবচেয়ে বেশি টেবিল থাপড়াচ্ছে, জোরে কথা বলছে তাকে গালি দিচ্ছে আপনি নিশ্চিত থাকবেন সে আওয়ামী লীগ।”

 

সংগঠনের সভাপতি ডাকুস সাবেক ভিপি নুরুল হক নূর বলেন, ‘‘ কত ভীত সন্ত্রস্ত হলে আজকে টেলিভিশনেও একটা বৃহত বিরোধী দল বিএনপির চেয়ারম্যান তার বক্তব্য টেলিভিশনে পত্রিকায় প্রচার করা যাচ্ছে না। এর চেয়ে কুতসিত রাষ্ট্রব্যবস্থা কি হতে পারে? জঘন্য সরকারের পদক্ষেপ আর কি হতে পারে যে, বিরোধী দলের লিডারের বক্তব্য টেলিভিশনে প্রচার করা যাবে না। এখন তিনি(তারেক রহমান) ইউটিউবে,ভার্চুয়ালি বক্তব্য দেন সেটাও বন্ধ করার জন্য নাকি হাইকোর্টের দৃষ্টিতে আনা হয়েছে।”

 

‘‘ হাইকোর্টকে তো আপনারা ক্যাংগারু কোর্টে পরিণত করেছেন। আজকে বিচারপতিরা দাবি করছে শপথবাক্য রাজনীতিবিদ, আশ্চরযজনক বক্তব্য। আরেকজন বিচারপতি তো আরেকটি রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন বাতিল করতে চান। তো এই দলকানা দলবাজরা কিভাবে বিচারপতি হন? সুপ্রিম কোর্ট থেকে ইউনাইটেড ল‘ইয়ার্স ফ্রন্ট আওয়াজ তুলেছে, তারা সারাদেশের আইনজীবীদের নিয়ে যে কর্মসূচি করছেন আমরা এই সমাবেশ থেকে তাদের প্রতি সংহতি জানাচ্ছি।”

 

এই সরকারের পতনে সকলকে সর্বাত্মক প্রস্তুতি নেয়ার আহ্বানও জানান নূর।

 

তিনি বলেন, ‘‘ সরকার পরিবর্তন হবে এটা আল্লাহ আসমানে ফয়সালা হয়ে গেছে। যেকোনো সময় পরিবর্তন হবে, মাস্ট বি চেঞ্জ হবে।”

 

নূরের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খানের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় কল্যাণ পার্টির সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম, বিএনপির সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, ন্যাশনাল পিপলস পার্টির ফরিদুজ্জামান ফরহাদ, জাতীয় পার্টি(কাজী জাফর) আহসান হাবিব লিংকন, এবি পার্টির এএফএম সোলায়মান চৌধুরী, জাতীয় দলের সৈয়দ এহসানুল হুদা, জাগপার রাশেদ প্রধান, এনডিপির আবু তাহের, বাংলাদেশ রিপাবলিকান পার্টির কেএম আবু হানিফ, জাঙ্গীরনগর বিশ্বদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক আবদুল লতিফ মাসুম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক রুহুল আমীন, গণঅধিকার পরিষদের এসএম নূরে এরশাদ সিদ্দিকী, রাখাল রাহা প্রমূখ বক্তব্য রাখেন।

সরকার হাটতে ‘বড় রকমের ঝাঁকুনি’ দরকার বলে মন্তব্য করেছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।বুধবার দুপুরে এক আলোচনা সভায় বিএনপি মহাসচিব এই মন্তব্য করেন।

তিনি বলেন, ‘‘ আওয়ামী লীগের নিজেদেরকে এদেশের মালিক মনে করে। নূরুল হক নূর সাহেব বলছিলেন সংবিধানে দেখিয়ে যে, এদেশের মালিক হচ্ছে জনগন। না। তারা মনে করে এদেশের মালিক হচ্ছে আওয়ামী লীগ, আরো সঠিক করে বলতে গেলে.. একজন ব্যক্তি অথবা তার পরিবার। এটা হচ্ছে বাস্তবতা।”

 

‘‘ এই বাস্তবতা থেকে বেরিয়ে আসতে হলে বড় রকমের ঝাকুনি দেয়া দরকার, বড় রকমের একটা যুদ্ধ দরকার-সংগ্রাম দরকার। এই সংগ্রাম এই যুদ্ধে আমরা আছি। যুদ্ধ-সংগ্রাম করে সবসময় পরিবর্তন এসেছে। আমরা যেকথাটা বার বার বলতে চাই যে, অভ্যুত্থান, সুনামির মতো অভ্যুত্থান ছাড়া এই ভয়াবহ যে দানব আমাদের বুকে চেপে বসে আছে একে সরাতে হবে না, সম্ভব হয় না।”

 

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘‘আমরা সবাই একসাথে কাজ করছি, লড়াই করছি-সংগ্রাম করছি। সমস্ত রাজনৈতিক দলগুলো আমরা একত্রিত হয়েছি।শুধু রাজনৈতিক দল এক সাথে আসলে হবে না, মানুষকে এক সাথে হতে হবে এবং মানুষকে নিয়ে সংগ্রামে মধ্য দিয়ে এদেরকে সরাতে হবে।”

 

‘‘ আমাদের কোনো বিকল্প নাই। আমাদের একটাই মাত্র লক্ষ্য যে, এদেরকে সরিয়ে জনগনের একটা সরকার, জনগনের একটা পার্লামেন্ট তৈরি করতে হবে। আজকের সংগ্রাম-যুদ্ধ সবটাই করতে হবে তরুনদের। আসুন আমরা আমাদের তরুন সমাজকে সংগঠিত করি। তাদেরকে আরও সামনে আসার জন্য আমরা আহ্বান জানাই। সকলকে সঙ্গে নিয়ে আমরা এই অবস্থার পরিবর্তন করব ইনশাল্লাহ।”

 

‘নিজের কষ্টের কথা বললেন’

 

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার এক সময়ের ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি মির্জা ফখরুল বলেন, ‘‘আমি খুব কষ্ট পাই যখন দেখি যে, জঘন্যতম একটা ঘটনা ঘটেছেৃ একজন নারী বা একজন ছাত্রী নির্যাতিত হয়েছে সেই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের তরুনরা-ছাত্ররা এর প্রতিবাদে রাস্তায় নামে না। অথবা সমাজে রাষ্ট্রে মানুষের আজকে সাংবিধানিক অধিকার হরণ করে নেয়া হচ্ছে, মানবাধিকার হরণ করে নেয়া হচ্ছেৃ কোথায় আমরা তো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বা অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সেইভাবে কোনো প্রতিবাদ দেখতে পারছি না, রাস্তায় নামছে না।”

 

‘‘ অথচ আমরা পাকিস্তান আমলে যখন ছাত্র ছিলাম সবচেয়ে অগ্রনী ভুমিকা পালন করেছে কিন্তু ছাত্ররা সমাজের জন্যে, পরিবর্তনের জন্য, অর্থনৈতিক ব্যবস্থার পরিবর্তনের জন্য, রাষ্ট্র পরিবর্তনের জন্য তরুনরাই অগ্রনী ভূমিকা পালন করেছে। এমনকি নব্বইযের যে ছাত্র গনঅভ্যূত্থান সেখানেও কিন্তু নেতৃত্ব ও আন্দোলনের মূল ভূমিকায় ছিলো ছাত্ররা। দুর্ভাগ্য আমাদের এখন পর্যন্ত সেই ধরনের তরুনদের সেই যুবকদের সেই ছাত্রদের সেইভাবে সামনে দেখতে পারছিনা।”

 

তিনি বলেন, ‘‘ আমি অনেক ছাত্রকে জিজ্ঞাসা করেছি, আজকাল ছাত্ররা আসে না কেনো? আমি দশম শ্রেনীতে পড়ে একজন ছাত্রকে জিজ্ঞাসা করেছিলো তোমাদের ক্লাসের বন্ধুরা কি হতে চায়? সে বলছে পলিটিক্স করতে চায়। আমি অবাক হয়েছি, বিস্মিত হয়েছি। কারণ সে যে স্কুলে পড়ে সেখানে সমস্ত বড়লোকদের ছেলেরা পড়ে। কেনো পলিটিক্স করতে চায় জানতে চাইলাম। সে বললো যে, পলিটিশিয়ানদের অনেক টাকা।

 

এ সময়ে অনুষ্ঠানে অনেকে হাসতে থাকেন।

 

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘‘ এটা হাসির কথা নয়। আপনাকে হিসাব করতে হবে। আজকে যে সমাজ তৈরি হয়েছে, আজকে যে রাষ্ট্র ব্যবস্থা তৈরি হয়েছে, আজকে যে তার চোখের সামনে সে দেখলো পলিটিশিয়ানদের অনেক টাকাৃ অর্থাত যারা সরকারি দল করছে তারা এতো বেশি বিত্তশালী হয়ে উঠেছে যেটা দেখে মনে হয় যে ওটাই দরকার।”

 

‘‘আমরা যখন ছাত্র আমরা আকৃষ্ট হয়েছি যে, সমাজ পরিবর্তনের কথা কে বলছে? আমাদের খুব বেশি আকৃষ্ট করতো সুকান্তের সেই কবিতাৃ অবাক পৃথিবী অবাব করলে তুমি, জন্মেই দেখি ক্ষুব্ধ স্বদেশ ভূমি। তখন শিশু ছিলাম, এখন তো বৃদ্ধ। এখনও একই কথা বলতে হচ্ছে, অবাক ‍পৃথিবী অবাক করলে তুমি জন্মেই দেখি ক্ষুব্ধ স্বদেশ ভূমি। তাহলে এই যে ৭৫ বছর বয়স, ৭০ বছর বয়স ৬০ বছর বয়সৃ এই সময়গুলো আজকে আমাদের ব্যর্থ হয়ে গেলো, ‍বৃথা হয়ে গেছে। এটার পরিবর্তন দরকার। এসবের পরিবর্তন আসতে হবে তরুনদের কাছ থেকে।”

 

তরুন-যুবকরা জাগিয়ে তোলার ওপর গুরুত্বারোপ করেন বিএনপি মহাসচিব।

 

ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি কার্যালয় ভবনের মিলনায়তনে বাংলাদেশ গণঅধিকার পরিষদ(নূর) উদ্যোগে ‘নাগরিকদের সাংবিধনিক মৌলিক ও মানবাধিকার সুরক্ষা’ শীর্ষক এই আলোচনা সভা হয়।

 

‘আওয়ামী লীগের মিথ্যাচার’

 

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘‘ আওয়ামী লীগ অনর্গল মিথ্যাচার করে। গতকাল তাদের সাধারণ সম্পাদক (ওবায়দুল কাদের)সাহেব অত্যন্ত বিশিষ্ট ভদ্রলোক মানুষ। তিনি বলছেন যে, গুজবের কান দেবেন না। বিএনপি অনেকগুলো ফ্রন্ট তৈরি করেছে যে ফ্রন্ট গুলোতে তারা এখন পয়সা দিয়ে মিথ্যা গুজব ছড়াচ্ছে।”

 

‘‘তাদের(আওয়ামী লীগ সরকার) তো পুরোটাই মিথ্যার ওপরে। এই যে প্রবৃদ্ধি বা গ্রোথ এর কথা বলে না। এই গ্রোথের যত ডাটা বাংলাদেশে পরিসংখ্যান ব্যুরোর(বিবিএস)ৃ এটা আমার কথা নয়, এটা গবেষকদের কথাৃ আপনি যদি জিয়া হাছানের ‘উন্নয়ন বিভ্রম’ বইটা পড়েন সেই বইতে খুব পরিস্কারভাবে বিবিএসের পরিসংখ্যান দিয়ে প্রমাণ করছে যে, পুরোটাই হচ্ছে মিথ্যা। আজকে এতো প্রবৃদ্ধি দেখেন, মাথাপিছু আয় দেখেন সব কিছু তাদের নিজেদের তৈরি করা।”

 

আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দের বক্তব্যের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, ‘‘ আজকে পত্রিকায় উঠেছে যে, আমার মতো মিথ্যাবাদী আর নাই। আমরা তো একটা