রবিবার (২০ আগস্ট) সকালে মাটিরাঙ্গা বাজারের মুক্তিযোদ্ধা চত্তরে উপজেলার সর্বস্তরের জনগণের আয়োজনে মানববন্ধনে সাবেক ছাত্রলীগ নেতা মো: সাইফুল ইসলাম এর সভাপতিত্বে মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মো: আলী হোসেন, মাটিরাঙ্গা সাংবাদিক ফোরামের সহসভাপতি অ্যাডভোকেট আবুল কালাম আজাদ, মাটিরাঙ্গা উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি তসলিম উদ্দিন রুবেল, পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক পরিষদের মাটিরাঙ্গা উপজেলা সভাপতি মো: রবিউল আলম, পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক পরিষদের মাটিরাঙ্গা পৌর আহ্বায়ক ওসমান চিশতীসহ প্রমুখ।
মানববন্ধন হতে বক্তারা বলেন, মাটিরাঙ্গা উপজেলার প্রায় দুই লক্ষ মানুষের একমাত্র চিকিৎসাকেন্দ্র মাটিরাঙ্গা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি নানা সমস্যা আর অব্যস্থাপনায় জর্জরিত। ডাঃ খায়রুলের ননক্যাডার জটিলতায় ও বাজে আচরণের কারণে ভাল ডাক্তার স্টাপদের অধিকাংশ প্রেষনে অন্য হাসপাতালে চাকুরি করছে, বেতন ভাতা নিচ্ছে মাটিরাঙ্গা হাসপাতাল থেকে। এই হাসপাতাল হতে বদলি হয়ে অনেক ভাল ডাক্তার ঢাকা চট্টগ্রাম হতে এসে সাপ্তাহে দুইদিন মাটিরাঙ্গায় চেম্বার করছে, অথচ মাটিরাঙ্গা হাসপাতালে থাকতে চায় না, কারণ ডাঃ খায়রুল।
উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলের বিভিন্ন গ্রামের অনেক রোগী এ হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসেন। শয্যা সংকট, ডাক্তার সংকট, পরীক্ষার নিরীক্ষা করা যায় না, অপারেশন থিয়েটার নাই, বাচ্চা ডেলিভারীর ব্যবস্থা নাই। দায়িত্বপ্রাপ্ত ডাঃ খায়রুলের অবহেলাসহ নানা কারণে হাসপাতালটিতে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীরা পদে পদে হয়রানির শিকার হচ্ছেন। বহিঃ বিভাগে সেবা নিতে আসা রোগীরা অত্যাধিক গরমে অতিষ্ট হয়, একটি পাখাও তাদের জন্য নাই। হাসপাতালটির সর্বত্র ময়লা দূঃগন্ধ নোংরা, পরিবেশ।
বক্তারা বলেন, মনে হয় না কোনো ভদ্র লোক হাসপাতালটি দেখবাল করছেন। সরকারের স্বাস্থ্য খাতের এত্ত টাকা কোথায় যাচ্ছে, এখানে কি বরাদ্ধ আসে না?
বক্তারা আরো বলেন, হাসপাতালটির এত্ত এত্ত সমস্যার কোনো সমাধান না করে এই নিধিরাম সর্দার ভারপ্রাপ্ত ডাঃ খায়রুল আলম উন্নয়নকাজ বাস্তবায়নের নামে উর্ধ্বত্তন কর্তৃপক্ষের অনুমোদনহীন ভাবে (২৩ জুলাই) হাসপাতালের সৌন্দর্য বর্ধন ও ছায়া দানকারী ৩০ বছরের পুরাতন ২১বৃক্ষ নিধন করেছে।
এছাড়া হাসপাতালের টয়লেটগুলো ব্যবহার অনুপযোগী, ময়লা আবর্জনার দুর্গন্ধে ভর্তিকৃত, বিশুদ্ধ পানির সংকট, রোগী ও চিকিৎসা নিতে আসা লোকজন অসুস্থ হওয়ার উপক্রম হয়েছে। এ কারণে গ্রাম থেকে আসা সহজ-সরল রোগীদের ভোগান্তির শেষ নেই। সরকারি এ হাসপাতালটিতে বিনামূল্যে চিকিৎসা পাওয়ার কথা থাকলেও পদে ভোগান্তিতে পোহাতে হচ্ছে রোগীদের। কাগজপত্রে হাসপাতালটি ৩১ শয্যা বিশিষ্ট হলেও অবকাঠামো রয়েছে মাত্র ১০ শয্যার। জেলার অন্য উপজেলার হাসপাতাল গুলো সকল আধুনিক সুযোগ সুবিধা ও ৫০ শয্যায় উন্নীত করা হলেও এই হাসপাতালে গত ১০ বছরে ভারপ্রাপ্ত ডাঃ খায়রুলের কারনে কোনো উন্নয়ন হয়নি।
এসব অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে মানববন্ধন হতে বক্তারা ১০ শয্যা থেকে ৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালে রুপান্তরিত করার দাবি করেন ও আগামী সাত দিনের মধ্যে ডাঃ খায়রুল আলমকে প্রত্যাহার করতে হবে। অন্যথায় কঠোর আন্দোলন ও হাসপাতাল ঘেরাও এর মধ্যে দিয়ে তাকে মাটিরাঙ্গা থেকে বিতারিত করা হবে।
মানববন্ধন শেষে মাটিরাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী অফিসার ডেঙ্গি চক্রবর্তীর মাধ্যমে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করা হয়।