ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ও সাইবার সিকিউরিটি এ্যাক্টসহ সকল কালা কানুন বাতিলের দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন (ডিইউজে)।আজ বুধবার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এ বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি শহিদুল ইসলামের সভাপতিত্বে ও সাংগঠনিক সম্পাদক সাঈদ খানের সঞ্চলনায় সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বিএফইউজের সাবেক সভাপতি রুহুল আমিন গাজী। এছাড়াও আরো বক্তব্য রাখেন জাতীয় প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি কামাল উদ্দিন সবুজ, সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের সদস্য সচিব ও ডিইউজের সাবেক সভাপতি কাদের গনি চৌধুরী, জাতীয় প্রেসক্লাবের সাধারন সম্পাদক সৈয়দ আবদাল আহমেদ, বিএফইউজের সিনিয়র সহ সভাপতি মোদাব্বের হোসেন, ডিইউজের সহ সভাপতি রাশেদুল হক,বিএফইউজের কোষাধ্যক্ষ খাইরুল বাশার, ডিইউজের সাবেক সহ সভাপতি আমিরুল ইসলাম কাগজী, শাহিন হাসনাত, ফটোজার্নালিস্টের সাবেক সভাপতি এ কে এম মোহসিন, র্যাকের সাবেক সভাপতি মহিউদ্দিন আহমেদ, ডিইউজের যুগ্ম সম্পাদক দিদারুল আলম, কোষাধ্যক্ষ খন্দকার আলমগীর, জনকল্যাণ সম্পাদক সালাহউদ্দিন রাজ্জাক, দফতর সম্পাদক ইকবাল মজুমদার তৌহিদ, সাবেক দফতর সম্পাদক ডিএম আমিরুল ইসলাম অমর, মফস্বল সাংবাদিক অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি শাখওয়াত হোসেন ইবনে মঈন চৌধুরী, বর্তমান নির্বাহী সদস্য রাজু আহমেদ, সাবেক নির্বাহী সদস্য এইচ এম আল-আমিন।
এসময় আরো উপস্থিত ছিলেন, ডিইউজের নির্বাহী সদস্য নিজাম উদ্দিন দরবেশ, এম মোশাররফ, আব্দুল্লাহ মজুমদার, ফখরুল ইসলাম, মিয়াজী সেলিম আহমেদ, সদস্য সর্দার আব্দুল কাদের, মোশাররফ হোসেন ভুঁইয়া, রাসেল আহমেদ, ফয়জুল্লাহ মানিক, তালুকদার বেলাল, তাজুল ইসলাম প্রমুখ।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে রুহুল আমিন গাজী বলেন, আপনারা জানেন এই সরকার ক্ষমতায় আসার পর নিজেদের অপকর্ম গোপন করার জন্য ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট নামে একটি আইন করেছে। এরপরও তাদের মনভূত না হওয়ায় আইসিটি অ্যাক্টের ৫৭ধারর মতো ভয়াবহ আইন নিয়ে আসলেন। সাংবাদিক সমাজসহ সবাই এই ডিজিটাল নিরপত্তা আইনের বিরুদ্ধে কথা বলেছে। তাই তারা নতুন মৌড়ক এনেছে, "সাইবার সিকিউরিটি অ্যাক্ট"। ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্টের সকল ধারা তারা এই আইনে অন্তর্ভুক্ত করেছে। পাশাপাশি সাংবাদিকদের ২৫লাখ টাকা জরিমানার ব্যবস্থা করেছে।
তিনি বলেন, ডিজিটাল সিকিউরিটি আইনে মামলা করা ৯০ভাগ সরকার দলীয় লোক। এটাই প্রমাণ করে সাইবার সিকিউরিটি অ্যাক্টের মতো আইন দিয়ে তারা অবৈধ শেখ হাসিনাকে রক্ষা করতে চায়। যারা ভাবে সরকারের তোষামোদী করে পার পেয়ে যাবে তারা রক্ষা পাবেন না। তাই আসুন এক দফার দাবিতে ঐক্যবদ্ধ হয়ে এই সরকারের পতনের মধ্য দিয়ে সকল কালাকানুন বাতিলে বাধ্য করি।
সভাপতির বক্তব্যে শহিদুল ইসলাম বলেন, সাইবার সিকিউরিটি অ্যাক্টের মধ্য দিয়ে আপনাদের সাবধান করে দেয়া হয়েছে। রাস্তার পাশে একজন ছিনতাইকারী গণপিটুনিতে মারা গেলে আপনি সেই নিউজ করতে গেলে ১০বার ভাবতে হবে। কারণ তার মা গিয়ে আদালতে যদি মামলা করে যে ছিনতাইকারী শব্দ লেখায় আমার ছেলের মানহানি হয়েছে তবে আপনার ২৫ লাখ টাকা জরিমান গুনতে হবে। ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্টের নাম পরিবর্তন করে সাইবার সিকিউরিটি অ্যাক্ট করেছেন। এই আইন সংবিধান পরিপন্থী। রাতের ভোটের সরকারকে টিকিয়ে রাখতে এই আইন করা হয়েছে। এই আইন সাংবাদিক সমাজ মানে না।
কামাল উদ্দিন সবুজ বলেন, আমরা দীর্ঘদিন ধরে ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্টের বিরুদ্ধে আন্দোলন করে আসছিলাম। আন্তর্জাতিকভাবেও এই আইনের বিরুদ্ধে সরকারের প্রতি চাপ ছিলো। সেই চাপের কারণে তারা নাম বদল করে সাইবার সিকিউরিটি অ্যাক্ট নামে নতুন আইন নিয়ে আসা হয়েছে। এটা নতুন বোতলে পুরাতন মদের ন্যায়।
কাদের গনি চৌধুরী বলেন, যখন ডিজিটাল সিকিউরিটি আইনের বিরুদ্ধে বিশ্ব জনমত গড়ে উঠেছে তখন এই সরকার নামটা কেবল পরিবর্তন করে নতুন আইন চালু করলেন। যেখানেম নিপীড়নমূলক সকল ধারাগুলো রেখে দিয়েছেন। এই আইনের মাধ্যমে সরকার সাংবাদিক সমাজের সাথে মিথ্যাচার করেছে। আমরা এই সরকারের পতন ঘটিয়ে এর জবাব দিবো।
খুরশীদ আলম বলেন, ডিজিটাল সিকিউরিটি আইনের বিরুদ্ধে সারা বিশ্ব যখন প্রতিবাদ মুখর তখন সরকার নমনীয়তা দেখিয়েছে। আমরা ভেবেছিলাম তারা ডিজিটাল কালো আইন বাতিল করবে। কিন্তু তা না করে সরকার এদেশের মানুষের সাথে প্রতারণা করেছে, ভাঁওতাবাজির আশ্রয় নিয়েছে। তাই আমি এসকল কালো আইন প্রত্যাখ্যান করছি।সৈয়দ আবদাল আহমেদ বলেন, ডিজিটাল সিকিউরিটি আইনের নাম বদলে সাইবার আইনে ২৫লাখ টাকা জরিমানার বিধান রাখা হয়েছে। মোটকথা এই সরকার গত ১৫বছর যাবৎ সরকার একের পর এক ধোকাবাজি ও প্রতারণা করে আসছে। তাই আজকে বাংলাদেশকে গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ হিসেবে গড়তে হলে এসব আইন বাতিল করতে হবে। তাই যে গণতান্ত্রিক আন্দোলন চলছে তার বিজয়ের মাধ্যমে বাস্তবায়ন করা হবে।