আওয়ামী লীগ সরকারের পদত্যাগের এক দফা দাবি আদায়ের লক্ষ্যে আগামী ১৮ ও ১৯ জুলাই অনুষ্ঠিত হবে বিএনপির পদযাত্রা। বিষয়টি নিয়ে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) খুব একটি আপত্তি নেই বলে জানিয়েছেন দলটির প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি।রোববার (১৬ জুলাই) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ডিএমপি কমিশনার কার্যালয়ের সামনে উপস্থিত সাংবাদিকদের তিনি এ কথা জানান।এর আগে বেলা ১১টার দিকে ডিএমপি কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুকের সঙ্গে পদযাত্রার বিষয়ে বৈঠক করতে ডিএমপি সদর দপ্তরে যান এ্যানির নেতৃত্বাধীন বিএনপির একটি প্রতিনিধি দল। প্রায় আধা ঘণ্টা বৈঠক শেষে সাড়ে ১১টার দিকে তারা ডিএমপি কমিশনারের কার্যালয় থেকে বের হন।
বিএনপির ঢাকা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুস সালাম আজাদ পৃথক গাড়িতে ডিএমপি কমিশনারের কার্যালয়ে আসেন। এ্যানির গাড়িতে ছিলেন ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির সদস্য সচিব আমিনুল হক।
ডিএমপি কমিশনারের সঙ্গে বৈঠক শেষে শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি গণমাধ্যমকর্মীদের বলেন, আমরা ডিএমপি কমিশনারের সঙ্গে আলোচনা করেছি। বিশেষ করে গত ১২ জুলাই আমরা যে এক দফা দাবি করেছি, সেই দাবি আদায়ের পরবর্তী কর্মসূচি নিয়ে আমাদের মধ্যে আলোচনা হয়েছে। আলোচনাটি বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ছিল।
তিনি আরও বলেন, আমরা আগামী ১৮ এবং ১৯ জুলাই দুটি কর্মসূচি ঘোষণা করেছি। এর মধ্যে একটি হলো গাবতলী থেকে শুরু করে বাহাদুর শাহ পার্ক পর্যন্ত পদযাত্রা। আরেকটি হলো উত্তরা আবদুল্লাহপুর থেকে যাত্রাবাড়ী পর্যন্ত। এই পদযাত্রা নিয়ে তাদের (ডিএমপি) খুব একটি আপত্তি নেই। আমরা ওনাদের সহযোগিতা কামনা করেছি। আশা করি তারা আমাদের সহযোগিতা করবেন।
তবে ১৮ জুলাইয়ের পদযাত্রার রুট নিয়ে ডিএমপির কিছু পরামর্শ ছিল জানিয়ে তিনি বলেন, আমরা আমাদের দলের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করে এটি সমন্বয় করে নেব। খুব একটি সমস্যা হবে না। তারা (ডিএমপি) ওইদিনের পদযাত্রার রুটটি পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের সামনে থেকে ডাইভার্ট করে অন্যদিকে নিতে বলেছেন। এটি আমরা আমাদের দলের নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেব।
আগামী ২২ জুলাই বিএনপির তারুণ্যের সমাবেশ রয়েছে উল্লেখ করে এ্যানি বলেন, সেটি আমাদের দলীয় কার্যালয়ের সামনে অনুষ্ঠিত হবে। আমার এ বিষয়েও তাদের (ডিএমপি) সহযোগিতা কামনা করেছি।
বিএনপি আন্দোলনের মাঠে রয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এই আন্দোলনের মধ্য দিয়ে আমাদের যে দাবি, একটি নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকার বা যে নামেই হোক না কেন, সেই নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন- এটিই মুখ্য। আমরা দেশে একটি শান্তিপূর্ণ অংশগ্রহণমূলক নিরপেক্ষ নির্বাচন চাই। সেজন্য আমরা এক দফা ঘোষণা করেছি। আশা করব এই সরকার পদত্যাগ করবে, সংসদ ভেঙে দিয়ে নিরপেক্ষ নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের উদ্যোগ নেবে।
ডিএমপির পক্ষ থেকে পদযাত্রার জন্য মৌখিক অনুমতি দেওয়া হয়েছে কি না জানতে চাইলে বিএনপির এই নেতা বলেন, এখানে আমরা অনুমতি চাইনি। আমরা তাদের অবহিত করেছি। আমরা তাদের (ডিএমপি) সহযোগিতা চেয়েছি। তারা (ডিএমপি) সহযোগিতা করবেন। পাশাপাশি আমাদের একটি বিশেষ স্বেচ্ছাসেবক টিম প্রতিটি স্পটে দায়িত্বশীলতার সঙ্গে কাজ করবে। আমরা সম্পূর্ণভাবে শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালন করছি। জনগণকে সম্পৃক্ত করার মধ্য দিয়ে দেশে যে কঠিন এবং কঠোর আন্দোলন করতে চাচ্ছি, সেটি আমরা বেগবান করব, শক্তিশালী করব। আশা করি সরকারের শুভবুদ্ধির উদয় হবে এবং সরকার পদত্যাগ করবে।