খাগড়াছড়িতে প্রতিদিন বাড়ছে ডেঙ্গু ও ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা। গত এক মাসে খাগড়াছড়িতে ম্যালেরিয়া ও ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত শনাক্ত হয়েছে শতাধিক।খাগড়াছড়ি জেলা সদর, মাটিরাঙ্গা, গুইমারা উপজেলায় ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বেশি। পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা ও মশক নিধন কার্যক্রম চালু না থাকায় ডেঙ্গু ও ম্যালেরিয়া বৃদ্ধি পেয়েছে বলে অভিযোগ করেছে স্থানীয়রা।খাগড়াছড়ির স্বাস্থ্য বিভাগ জানায়, মাটিরাঙ্গা পৌরসভা এবং গুইমারা উপজেলার জালিয়াপাড়া এলাকায় বেশি ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছে। এরিমধ্যে মাটিরাঙ্গা পৌরসভার চৌধুরীপাড়াকে ডেঙ্গুর হটস্পট হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলোতে চিকিৎসার পাশাপাশি অনেকে ছুটে যাচ্ছেন জেলা সদর হাসপাতাল ছাড়াও চট্টগ্রামের বিভিন্ন হাসপাতালে।
পুরো জেলায় জুন মাসে ম্যালেরিয়া আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়েছে ৭১ জন এবং ডেঙ্গু আক্রান্ত ২১ জন। চলতি মাসে ডেঙ্গু আক্রান্ত শনাক্ত হয়েছে ৩২ জন। চলতি বছরে এখন পর্যন্ত ডেঙ্গু ও ম্যালেরিয়াতে কেউ মারা যায়নি।
মাটিরাঙ্গা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক চিকিৎসক ডা. মিটন ত্রিপুরা সাংবাদিকদের বলেন, ঢাকাসহ সারা দেশে থেকে কুরবানির ঈদে আসার পর থেকে ডেঙ্গু ও ম্যালেরিয়ার প্রকোপ বেড়েছে। আসার সময় তারা ডেঙ্গুর লক্ষণ নিয়ে এসেছে। মাটিরাঙ্গার চৌধুরীপাড়া, কাজীপাড়া এলাকাসহ আশপাশে ডেঙ্গুর প্রকোপ বেশি।
খাগড়াছড়ি আধুনিক জেলা সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক ডা. রিপল বাপ্পী চাকমা বলেন, হাসপাতালে অধিকাংশ রোগী মাটিরাঙ্গা থেকে আসা। আমরা মনে করছি, মাটিরাঙ্গার নির্দিষ্ট কোনো জায়গা থেকে রোগ ছড়াচ্ছে। স্থানীয়দের সচেতন থাকতে হবে ও এলাকার আশেপাশে পরিষ্কার রাখতে হবে।
স্থানীয়রা বলছেন, পৌর কর্তৃপক্ষের উদাসীনতার কারণে মাটিরাঙ্গায় বেড়েছে এসব রোগীর সংখ্যা। ময়লা ও আবর্জনা পরিষ্কার না করা এবং মশা নিধনে কার্যকর পদক্ষেপ না থাকায় এ দশা। তারা স্থানীয় পৌর মেয়রদের কাছে মশা নিধনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।
মাটিরাঙ্গা পৌরমেয়র শামছুল হক সাংবাদিকদের বলেন, আমরা মশা নিধনে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিয়েছি। পৌর এলাকায় ইতোমধ্যে মশা নিধনে কাজ শুরু হয়েছে। স্থানীয় নাগরিককেও সচেতন হওয়ার আহ্বান জানান তিনি।
মশার বিস্তার ঠেকাতে মশক নিধন কার্যক্রম জোরালো করতে সংশ্লিষ্টদের সহযোগিতা চেয়ে পরিস্থিতি মোকাবিলায় জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে পর্যাপ্ত প্রস্তুতি রয়েছে বলছেন সিভিল সার্জন।
খাগড়াছড়ির সিভিল সার্জন ডা. মো. ছাবের বলেন, খাগড়াছড়িতে ম্যালেরিয়ার প্রকোপ বেশি। এর সঙ্গে নতুন করে ডেঙ্গুর সংক্রমণ বেড়েছে। ঈদের পর থেকে জেলায় ডেঙ্গু শনাক্ত বেশি হচ্ছে। আমরা সব উপজেলা স্বাস্থ্য কমেপ্লক্সে ডেঙ্গু শনাক্তের জন্য কীট সরবরাহ করেছি। আমরা সব প্রস্তুতি রয়েছে। আক্রান্তদের আমরা চিকিৎসা দিচ্ছি।