বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলছেন, নির্বাচনকে সামনে রেখে আওয়ামী লীগ রিগিং (কারচুপি) শুরু করে দিয়েছে। পুলিশে ব্যাপক রদবদল করা হয়েছে।ব্যাপক হারে পদোন্নতি দেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, সচিবদের রদবদল করা হয়েছে। প্রশাসনেও পরিবর্তন আনা হচ্ছে। নির্বাচনকে সামনে রেখে প্রশাসনকে নিজেদের মতো করে সাজিয়ে নেওয়া হচ্ছে। বাকশাল করেছিল, নিজেদের মতো করে সাজিয়েছিল, কিন্তু রক্ষা করতে পারে নাই। বৃহস্পতিবার (১৫ জুন) ‘সংবাদপত্রের কালো দিবস’ উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। মোশারফ আহমেদ ঠাকুরের সভাপতিত্বে সভায় আরও বক্তব্য রাখেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু, বিএনপির মিডিয়া সেলের আহ্বায়ক জহির উদ্দিন স্বপন, বিএনপি নেতা রুহুল কুদ্দুস দুলু ও সাংবাদিক নেতা আব্দুল আজিজ প্রমুখ।
মির্জা ফখরুল বলেন, লড়াই শুরু হয়ে গেছে। প্রতিপক্ষ গুম করতে দ্বিধা করে না, খুন করতে দ্বিধা করে না। আপনি কোর্টে যাবেন, সেখানে বিচার পাবেন না। পুলিশের কাছে যাবেন, সেখানে অভিযোগ লেখাতে পারবেন না। আপনি কোথায় যাবেন? এ জন্যই সরকারকে সরাতে হবে। এই সরকারকে সরিয়ে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে।
তিনি বলেন, দেশনেত্রী খালেদা জিয়াকে অন্যায়ভাবে, রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে, রাজনৈতিক প্রতিপক্ষতে সরিয়ে দেওয়ার জন্য মিথ্যা মামলা সাজিয়ে আটক করে রাখা হয়েছে। তিনি এখন জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছে। চিকিৎসকরা তাকে বিদেশে নিয়ে চিকিৎসার কথা বলছেন। তার পরিবারের পক্ষ থেকে বার বার আবেদন করা হয়েছে।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, গতকাল তিনি (ওবায়দুল কাদের) বলেছেন, বেগম জিয়ার অসুস্থতা নিয়ে নাকি আমরা রাজনীতি করছি। এর উত্তর কী দেব, এর উত্তর দেওয়ার ভাষা আমার জানা নেই। ভাষা এখন একটাই, জনগণের অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে জবাব দিতে হবে।
শামসুজ্জামান দুদু বলেন, স্বাধীনতার পর সবচেয়ে বড় অপকর্ম হলো বাকশাল গঠন করা। শেখ মুজিব কেমন দেশ চালাবেন, সেই ইঙ্গিত দিয়েছিলেন এই বাকশাল গঠন করে। ডিজিটাল সিকিউরটি অ্যাক্ট সব মানবিক সৃজনশীলতা ধ্বংস করে দিয়েছে। তরুণদের বিদ্রোহ করার সময় এসেছে। তরুণরা না জাগলে বন্দিশালা থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে না। বিদ্রোহের নেতৃত্ব দেবেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
জহির উদ্দিন স্বপন বলেন, বিএনপি গণমাধ্যমের বিকাশে কাজ করতে চায়। সংবাদপত্রের বিকাশে বিএনপি কাজ করছে। আগামী দিনেও এই ধারা অব্যাহত থাকবে।
অ্যাডভোকেট রুহুল কুদ্দুস দুলু বলেন, ৭৫ সালে যখন পত্রিকা বন্ধ করে সাংবাদিকদের বেকার করে দেওয়া হয়েছিল, তখন বেকার সাংবাদিকেরা জীবিকার তাগিদে রাস্তায় ফল বিক্রি করা শুরু করেন। এখন ৭৫ এর চেয়ে খারাপ অবস্থা বিরাজ করছে। লিখলেই চাকরি থাকে না, কথা বললেই চাকরি চলে যায়।
আব্দুল আজিজ বলেন, গণতন্ত্রের অন্তর্নিহিত শক্তি হলো সংবাদপত্র। সংবাদপত্রের স্বাধীনতা মানে মুক্ত গণতন্ত্র। রাষ্ট্র মেরামতে যে আন্দোলন বিএনপি শুরু করেছে, সেই আন্দোলনের অংশ হিসেবে সংবাদপত্রের কাঠামো পরিবর্তন করতে হবে। সাংবাদিকেরা এখন ভৃত্য হয়ে বেঁচে আছেন। লিখলেই চাকরি চলে যায়। এই সংবাদপত্রের খোল-নলচে পরিবর্তন করতে হবে।
মোশারফ আহমেদ ঠাকুর বলেন, ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় সুযোগ থাকার পরও যারা স্বাধীনতা যুদ্ধে যায়নি, তারা এখন স্বাধীনতা বিরোধী রাজাকার হিসাবে চিহ্নিত, তারা আজ অনুশোচনা করে। শেখ হাসিনার সরকারকে হটানোর জন্য আন্দোলনে আজ যারা যাবে না, তারাও একদিন অনুশোচনা করবে।