এক দিকে বলিউডের ‘হি ম্যান’ ধর্মেন্দ্র, অন্য দিকে বলিজগতের ‘ড্রিম গার্ল’ হেমা মালিনী। ক্যামেরার সামনে দুই তারকার জুটি দর্শকের প্রশংসা কুড়োলেও পর্দার পিছনে ধর্মেন্দ্র এবং হেমা সাতপাকে বাঁধা পড়তেই কটাক্ষের শিকার হন। কখনও হেমাকে ‘সংসার ভাঙার কারণ’ আবার কখনও ধর্মেন্দ্রকে ‘নারীতে আসক্ত পুরুষ’ তকমা দেওয়া হয়। তার কারণ, বিবাহিত হওয়া সত্ত্বেও হেমাকে বিয়ে করেন ধর্মেন্দ্র।বলি ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে কেরিয়ার শুরুর আগে ১৯ বছর বয়সে প্রকাশ কউরকে বিয়ে করেন ধর্মেন্দ্র। ১৯৫৪ সালে প্রকাশের সঙ্গে গাঁটছড়া বাঁধেন অভিনেতা। স্ত্রী-সহ দুই পুত্র এবং দুই কন্যাসন্তান নিয়ে সংসার ছিল ধর্মেন্দ্রের।ধর্মেন্দ্র অভিনয় শুরু করার পর বলিপাড়ায় কানাঘুষো শোনা যায়, সহ-অভিনেত্রীদের সঙ্গে বিবাহবহির্ভূত সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন অভিনেতা। প্রকাশের সঙ্গে সংসার করার পর ধর্মেন্দ্র যখন তাঁর সহ-অভিনেত্রী হেমাকে বিয়ে করেন তখন ধর্মেন্দ্রকে ঘিরে আরও বেশি সমালোচনা শুরু হয়।বলিপাড়ায় ধর্মেন্দ্র দুই দশকের বেশি সময় কাটিয়ে ফেললেওঅভিনেতার স্ত্রী প্রকাশ সব সময়ই আলোর রোশনাই থেকে নিজেকে দূরে সরিয়ে রেখেছিলেন। মুম্বইয়ে জুহুর বাংলোর চার দেওয়ালের ভিতরেই জগত ছিল প্রকাশের।এমনকি, জুহুর বাংলোর সামনে কোনও সাংবাদিক প্রকাশের সঙ্গে দেখা করতে চাইলেও তাঁর ভৃত্যরা দেখা করতে দিতেন না। কখনও জানাতেন যে, প্রকাশ বাড়িতে নেই। কখনও বলতেন, প্রকাশ ঘুমোচ্ছেন।কিন্তু হেমাকে বিয়ে করার পর ধর্মেন্দ্রকে নিয়ে যখন সমালোচনা এবং বিতর্ক তুঙ্গে, তখনই প্রথম ক্যামেরার লেন্সে ধরা দেন প্রকাশ। ১৯৮১ সালে একটি পত্রিকায় সাক্ষাৎকারও দেন তিনি।প্রকাশের সংসার ভাঙার পরেও ধর্মেন্দ্রের পাশে দাঁড়ান তিনি। সাক্ষাৎকারে জানান, হেমাকে বিয়ে করে কোনও ভুল করেননি ধর্মেন্দ্র। প্রকাশ বলেন, ‘‘হেমা এত সুন্দরী, ওঁর জন্য তো যে কোনও পুরুষ পাগল হয়ে যাবে। ধর্মেন্দ্রের জায়গায় যে কেউ থাকলে একই কাজ করতেন।’’ধর্মেন্দ্র যে দ্বিতীয় বার বিয়ে করেছেন, তা নিয়েও নিজের মতামত দেন প্রকাশ। তিনি বলেন, ‘‘অর্ধেক ইন্ডাস্ট্রিই তো পরকীয়া করছে। ধর্মেন্দ্র তো আলাদা কিছু করেনি। ওকে নিয়ে কেন এত কথা হচ্ছে, তাই তো বুঝতে পারছি না।’’প্রকাশের দাবি, স্বামী হিসাবে না হলেও বাবা হিসাবে সব দায়িত্ব পালন করেন ধর্মেন্দ্র। প্রকাশ বলেন, ‘‘আমি বলব না যে আমার জন্য রোজ রাতে ধর্মেন্দ্র বাড়ি ফিরে আসে। তবে ও যে আমাদের সন্তানদের সঙ্গে সময় কাটানোর জন্য বা়ড়ি আসে তা আমি হলফ করে বলতে পারি।’’প্রকাশের দাবি, স্বামী হিসাবে না হলেও বাবা হিসাবে সব দায়িত্ব পালন করেন ধর্মেন্দ্র। প্রকাশ বলেন, ‘‘আমি বলব না যে আমার জন্য রোজ রাতে ধর্মেন্দ্র বাড়ি ফিরে আসে। তবে ও যে আমাদের সন্তানদের সঙ্গে সময় কাটানোর জন্য বা়ড়ি আসে তা আমি হলফ করে বলতে পারি।’’হেমার জন্যও খানিকটা সমর্থনের সুর চড়ান প্রকাশ। তিনি বলেন, ‘‘হেমার উপর দিয়েও যে কী ঝড় যাচ্ছে, তা এক জন নারী হয়ে আমি বুঝতে পারছি। আত্মীয়স্বজন, বন্ধুবান্ধব সকলের সম্মুখীন হতে হচ্ছে তাঁকে। নারী হিসাবে ওঁর পাশে থাকলেও এক জন স্ত্রী, এক জন মা হিসাবে আমি হেমাকে সমর্থন করি না।’’হেমার সঙ্গে ধর্মেন্দ্রের বিয়ের পর কানাঘুষো শোনা যায়, ধর্মেন্দ্রের পুত্র সানি দেওল নাকি ছুরি নিয়ে হেমাকে আক্রমণ করতে গিয়েছিলেন। প্রকাশ সেই প্রসঙ্গে বলেন, ‘‘আমার সন্তানের চোখে আমিই বিশ্বের শ্রেষ্ঠ মহিলা। ওরা ওদের বাবাকে সব সময় কাছে চায়। বাবা অন্য কোনও মহিলার প্রেমে পড়ুক, তা সহজে মেনে নিতে পারবে না ওরা। কিন্তু আমি সন্তানদের এমন শিক্ষা দিইনি যে অন্য কাউকে আঘাত করবে। এ সব মিথ্যা কথা।’’বলিপাড়ায় কানাঘুষো শোনা যায়, প্রকাশ নাকি এই বিয়ে মেনে নেওয়ার জন্য ধর্মেন্দ্রের সঙ্গে শর্ত রেখেছিলেন। ধর্মেন্দ্র যদি সানির কেরিয়ার তৈরি করে দেন, তবেই প্রকাশ দ্বিতীয় বিয়ে মেনে নেবেন।এর পর সানির কেরিয়ার তৈরির জন্য ব্যস্ত হয়ে পড়েছিলেন ধর্মেন্দ্র। তাই আরও সমালোচনার শিকার হন অভিনেতা। তবে প্রকাশ সাক্ষাৎকারে জানান যে, এ সবই মিথ্যা। বাবা হিসাবেই শুধুমাত্র দায়িত্ব পালন করেছেন ধর্মেন্দ্র।