খালেদা জিয়াকে সরকার তার প্রাপ্য চিকিতসা সুবিধা থেকে বঞ্চিত করছে বলে অভিযোগ করেছেন আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী।রোববার দুপুরে গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে গণতান্ত্রিক বাম ঐক্যের সাথে বৈঠক শেষে এক সংবাদ ব্রিফিঙে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য এই অভিযোগ করেন।তিনি বলেন, ‘‘ উনাকে অন্যায়ভাবে মিথ্যা মামলা দিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়েছে, উনাকে চিকিতসা দেয়া হচ্ছে না। কারণ উনাকে চিকিতসা থেকে বঞ্চিত করছে।”‘‘ বেগম খালেদা জিয়ার অবস্থা ভালো না। উনার বিদেশে যে স্পেশালাইজড ট্রিটমেন্ট দরকার, যে স্পেশালাইজড হসপিটাল দরকার সেটা থেকে তাকে বঞ্চিত করা হচ্ছে। বার বার বলার পরেও উনার বিদেশে উন্নত চিকিতসার ক্ষেত্রে ডাক্তাররা বিভিন্ন পরামর্শে যা বলেছেন সেটাকে তারা(সরকার) গ্রাহ্য করছে না।”
আমির খসরু বলেন, ‘‘ এদেশে রাষ্ট্রপতি থেকে শুরু করে একেবারে নিম্ন পর্যায়ে রাজনৈতিক কর্মী পর্যন্ত বিদেশে গিয়ে চিকিতসা নিচ্ছেন। অথচ দেশনেত্রী গণতন্ত্রের মা বেগম খালেদা জিয়াকে সেখানে থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে। উনাকে বিদেশে যেতে দেয়া হচ্ছে না।”
‘‘ উনার(খালেদা জিয়া) পরিবারের পক্ষ থেকে বলার পরেও অনুমতি দেয়া হচ্ছে না। এসবের উদ্দেশ্যটা কি? একটাই যে, উনাকে এই রাজনৈতিক কর্মকান্ড থেকে বাইরে রেখে অবৈধভাবে ক্ষমতা দখলের যে প্রক্রিয়া সেটা যাতে তারা সফলভাবে করতে পারে। তারা(ক্ষমতাসীনরা) ভীত, শঙ্কিত হয়ে উনাকে আটকিয়ে রেখে রাজনীতিতে সম্পৃক্ত হতে দিচ্ছে না।”
তিনি বলেন, ‘‘ সরকারের এই উদ্দেশ্য(খালেদা জিয়াকে রাজনীতি থেকে দূরে রাখা) সফল হবে না। কারণ আজকে দেশের মানুষ খুব ভালোভাবে জানেন যে, উনাকে কেনো জেলে রাখা হয়েছে, উনাকে কেনো মিথ্যা মামলা সাজিয়ে সাজা দেয়া হয়েছে, উনাকে কেনো চিকিতসা করতে দেয়া হচ্ছে না।”
‘‘ উনাকে এই অবস্থায় রেখে আবারো তারা ক্ষমতা দখল করতে চাচ্ছে তার প্রতিবাদ বাংলাদেশের মানুষ করবে, তার জবাব বাংলাদেশের মানুষ দেবে- এটাই ওদের(সরকার) ভয়। দেশনেত্রীকে জেলে দিয়েও ওরা রক্ষা পাচ্ছে না, জেলে দিয়েও ওরা নিপীড়ন-নির্যাতন-খুন-মিথ্যা মামলা চালিয়ে যাচ্ছে। আজকেও ওরা চট্টগ্রামে মিথ্যা মামলা দিয়ে বিএনপি নেতা-কর্মীদের গ্রেফতার করে নিয়ে গেছে, তারা বোম ফাটিয়ে, আগুন লাগিয়ে বিএনপি নেতা-কর্মীদের গ্রেফতার করে নিয়ে যাচ্ছে। এর উদ্দেশ্য একটাই জনগনকে বাইরে রেখে ক্ষমতা দখল করা, ভোটাধিকার কেড়ে নিয়ে ক্ষমতা দখল করা।”
খসুর বলেন, ‘‘ এই সরকার কোনো মতেই জনগনের ভোটাধিকার ফিরিয়ে দিতে রাজি না। তাদের বটোম লাইন হচ্ছে, জনগনের ভোটাধিকার ফিরিয়ে দেবে না, জনগনকে বাইরে রেখে তারা ক্ষমতায় দখলে রাখবে।”
গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে গণতান্ত্রিক বাম ঐক্যের লিয়াজোঁ কমিটির সাথে বিএনপির লিয়াজোঁ কমিটির এই বৈঠক হয়। বৈঠকে চলমান যুগপত আন্দোলনে বেগবান ও এর কর্মসূচি নিয়ে আলোচনা হয়।
বৈঠকে গণতান্ত্রিক বাম ঐক্যের সমন্বয়ক প্রগতিশীল গণতান্ত্রিক দলের মহাসচিব হারুন আল রশিদ খান, বাংলাদেশের সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক হারুন চৌধুরী, সমাজতান্ত্রিক মজদুর পার্টির সাধারণ সম্পাদক সামসুল আলম ও সোশ্যাল ডেমোক্রেটিক পার্টির আহ্বায়ক আবদুল কালাম আজাদ উপস্থিত ছিলেন।
বিএনপির প্রতিনিধি দলের আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী ছাড়া ছিলেন দলের ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু ও যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল।
বৈঠকের পর গণতান্ত্রিক বাম ঐক্যের সমন্বয়ক হারুন আল রশিদ খান বলেন, ‘‘ আমাদের মধ্যে আলোচনা ফলোপ্রসু হয়েছে। অনির্বাচিত অগণতান্ত্রিক ফ্যাসিস্ট এই সরকারকে হটানোর জন্য একদফা আন্দোলনের পরবর্তি যে কর্মসূচি তার কর্মপন্থা নিয়ে আমরা আলোচনা করেছি।”
‘‘ আমরা ঐক্যমতে পৌঁছেছি যে, আমরা সকল কর্মসূচি ধারাবাহিকভাবে যুগপতভাবে আন্দোলনে মাধ্যমে বাস্তবায়ন করেই তারপরে রাজপথ থেকে ঘরে ফিরে যাবো এই সরকারের পতন ঘটিয়ে।”