বরগুনার আমতলী ইউনিক স্পেশালাইজড হসপিটালের ভুল আল্ট্রাসাউন্ড প্রতিবেদনে রুবিনা বেগম ও রুমা আক্তার নামের দুই রোগীর চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। ওই চিকিৎসা পত্রের ওষুধ সেবনে রোগীর অবস্থা সংঙ্কটজনক বলে দাবী করেন রোগীরা। ঘটনা ঘটেছে আমতলী উপজেলার নয়াবেঙ্গলী ও ঘটখালী গ্রামে।জানা গেছে, আমতলী পৌর শহরের একে স্কুল সংলগ্ন ইউনিক স্পেশালাইজড হসপিটালে গত ১৯ জানুয়ারী নয়াবেঙ্গলী গ্রামের রুবিনা বেগম ও ঘটখালী গ্রামের রুমা আক্তার গাইনী চিকিৎসক ডাঃ আনোয়ার হোসেনকে দেখাতে আসেন। রোগীর ধরন দেখে ডাক্তার তাদের আল্ট্রাসাউন্ড করতে নির্দেশ দেন। চিকিৎসকের পরামর্শ মোতাবেক দুই রোগী ইউনিক স্পেশালাইজড হসপিটালে আল্ট্রাসাউন্ড করেন। কিন্তু আল্ট্রাসাউন্ড বিশেষজ্ঞ ডাঃ মেহেরীন আশ্রাফ রোগী রুবিনার আল্ট্রাসাউন্ডের পরিবর্তে রুমা বেগমের আল্ট্রাসাউন্ড দিয়ে দেন। ডাঃ মেহেরীন আশ্রাফ রোগী রুবিনার প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছেন রোগী রুবিনা বেগমের গর্ভে ওভামের মধ্যে বাচ্চা খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। ওই আল্ট্রাসাউন্ড দেখে ডাঃ আনোয়ার হোসেন চিকিৎসা পত্র দেন। ওই চিকিৎসাপত্রের ওষুধ খেয়ে রোগী রুবিনা বেগম ও তার গর্ভের সন্তানের অবস্থা সংঙ্কটজনক বলে দাবী করেন রোগী রুবিনা। পরবর্তিতে তিনি বেগম দি মেডিনোভা ক্লিনিক ডিজিটাল ডায়াগনিস্টিক সেন্টারে আল্ট্রাসাউন্ড করেছেন। ওই ক্লিনিকের আল্ট্রাসাউন্ড বিশেষজ্ঞ ডাঃ টিকে নাথ তার প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছেন রোগী রুবিনার গর্ভের ওভামে বাচ্চা রয়েছে কিন্তু বাচ্চার হার্টের অবস্থান খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। অপর দিকে রোগী রুমা আক্তারের আল্ট্রাসাউন্ডের পরিবর্তে হামিদার আল্ট্রাসাউন্ড দেয়া হয়েছে।
অভিযোগ রয়েছে ইউনিক স্পেশালাইজড হসপিটালে প্রায়ই এভাবে একজনের আল্ট্রাসাউন্ড প্রতিবেদন অন্যজনকে দিয়ে থাকেন।
রুমা বেগম বলেন, আমার আল্ট্রাসাউন্ড না দিয়ে হামিদা নামের এক রোগীর আল্ট্রাসাউন্ড দিয়েছে। ওই আল্ট্রাসাউন্ড দেখে ডাঃ আনোয়ার হোসেন চিকিৎসা পত্র দিয়েছেন। ডাক্তারের দেয়া ওষুধ সেবনে শরীরের অবস্থা খারাপ দেখে সেবন বন্ধ করে দিয়েছি।
রোগী রুবিনা বেগম বলেন, ইউনিক স্পেশালাইজড হসপিটালে আল্ট্রাসাউন্ড করেছি। তারা আমার আল্ট্রাসাউন্ডের পরিবর্তে রুমার আল্ট্রাসাউন্ড দিয়েছে। ওই আল্ট্রাসাউন্ড দেখে ডাক্তার ওষুধ লিখে দিয়েছেন। ওই ওষুধ সেবন করে আমি খুবই অসুস্থ হয়ে পরেছি।
তিনি আরো বলেন, আমার গর্ভের বাচ্চা কি অবস্থায় আছে জানিনা?
ইউনিক স্পেশালাইজড হসপিটালের আল্ট্রাসাউন্ড বিশেষজ্ঞ ডাঃ মেহেরীন আশ্রাফ নামের ভুলের কথা স্বীকার করে বলেন, আল্ট্রাসাউন্ডের প্রতিবেদনে ভুল নেই। তিনি আরো বলেন, ওই রোগীদের পুনরায় ডেকে এনে আল্ট্রাসাউন্ড করেছি।
গাইনী বিশেষজ্ঞ ডাঃ আনোয়ার হোসেন বলেন, আল্ট্রাসাউন্ডে এ রকম ভুল আমিও পেয়েছি। ইউনিক স্পেশালাইজড হসপিটাল কর্তৃপক্ষকে ভুল সংশোধনের নির্দেশ দিয়েছি। তিনি আরো বলেন, এ রকম ভুল হলে চিকিৎসা করাই সমস্যা। এতে রোগীদেরতো সমস্যা হচ্ছেই আমারও সুনাম ক্ষুন্ন হয়।
আমতলী ইউনিক স্পেশালাইজড হসপিটালের পরিচালক মোঃ রকিব চৌধুরী রাজু বলেন, একজনের আল্ট্রাসাউন্ড প্রতিবেদন অন্যজনকে দেয়া হয়নি। নামের ভুল ছিল তা কেটে সংশোধন করে দেয়া হয়েছে।
আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ মুনয়েম সাদ বলেন, ভুক্তভোগীরা অভিযোগ দিলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
আমতলী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মুহাম্মদ আশরাফুল আলম বলেন, অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া হবে।