তুরস্ক এবং সিরিয়ায় ভূমিকম্পে মৃতের সংখ্যা ১৫ হাজার ছাড়িয়ে গেল। আহতের সংখ্যা ৩৫ হাজারেরও বেশি। ভূমিকম্পের পর প্রবল শীতে উদ্ধারকাজ ব্যাহত হয়েছে দুই দেশেই। উদ্ধারকাজে ত্রুটি স্বীকার করে নিয়েছেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তায়িপ এর্দোয়ান।বিপর্যয় মোকাবিলার নীতি নিয়ে আন্তর্জাতিক স্তরে সমালোচনার মুখে পড়েছিল তুরস্ক সরকার। উদ্ধারকাজে সমস্যার কথা স্বীকার করেছেন প্রেসিডেন্ট। ভূমিকম্পে দেশের সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলিতে গিয়েছিলেন তিনি। বলেন, ‘‘নিশ্চয়ই ত্রুটি হয়েছে। পরিস্থিতি তো স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে। এত বড় বিপর্যয়ের জন্য আমরা কেউ প্রস্তুত ছিলাম না। এর জন্য আগে থেকে প্রস্তুত হওয়া সম্ভবও নয়।’’সোমবার সকালে তুরস্কে ভূমিকম্প শুরু হয়। রিখটার স্কেলে মূল কম্পনের মাত্রা ছিল ৭.৮। তার পরে আরও দু’বার জোরালো ভূমিকম্প হয় তুরস্ক এবং সিরিয়ায়। এই কম্পনের মাঝে আফটার শকে অন্তত ১০০ বার কেঁপেছে দুই দেশের মাটি। এই ভূমিকম্পকে ইতিমধ্যে শতাব্দীর অন্যতম ভয়ঙ্কর এবং প্রাণঘাতী বলে মেনে নেওয়া হয়েছে।
মাটির কম্পনে হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়েছে অসংখ্য বাড়ি। ধ্বংসস্তূপে চাপা পড়ে বহু মানুষের মৃত্যু হয়েছে। বিপর্যয়ের পর তীব্র শীত এবং ক্ষুধার জ্বালায় মৃত্যুমুখে আরও অনেকে। বৃহস্পতিবারের পরিসংখ্যান বলছে, মৃতের সংখ্যা ১৫ হাজার পেরিয়ে গিয়েছে। মৃত্যু আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা। ধ্বংসস্তূপের নীচে এখনও অনেকে আটকে থাকতে পারেন। ভূমিকম্প বিধ্বস্ত তুরস্ক আর সিরিয়ায় এখন শুধুই মৃত্যুমিছিল। কেউ খিদের জ্বালায় ছটফট করছেন, কেউ আপনজনকে ধ্বংসের নীচে চাপা পড়ে মরতে দেখছেন অসহায় ভাবে।প্রবল ঠান্ডা আর বৃষ্টির মধ্যে উদ্ধারকাজ ব্যাহত হচ্ছে বলে তুরস্ক প্রশাসন সূত্রে জানানো হয়েছে। বহু এলাকায় রাস্তাঘাট ধ্বংস হয়ে যাওয়ায় উদ্ধারকারীরা পৌঁছতে পারছেন না। পৌঁছচ্ছে না ত্রাণও। ফলে এলাকায় এলাকায় ক্ষোভ বাড়ছে। বাসিন্দাদের অভিযোগ, ভূমিকম্পে বেঁচে গিয়েও প্রাণ সংশয় তৈরি হচ্ছে। স্বাস্থ্যবিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, এই ঠান্ডায় খোলা আকাশের নীচে যাঁরা দিন কাটাচ্ছেন, তাঁদের হাইপোথার্মিয়ায় আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বাড়ছে। এতে শরীরের তাপমাত্রা দ্রুত কমে যাবে। এমনকি মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে।
বিধ্বস্ত তুরস্কের পাশে দাঁড়িয়েছে ভারত-সহ একাধিক দেশ। ত্রাণ পাঠানো হয়েছে বিপর্যয় কবলিত এলাকায়। ভারত থেকে উদ্ধারকারী দলও গিয়েছে তুরস্কে।