ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে খাগড়াছড়ির ৩ সাংবাদিক সহ ৭ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দীঘিনালা উপজেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও মেরুং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাহমুদা বেগম লাকী। গত ২৩ জানুয়ারি চট্টগ্রাম সাইবার ট্রাইবুনাল আদালতে মাহমুদা বেগম লাকী বাদী হয়ে এ মামলা দায়ের করেন। সাইবার ট্রাইবুনালের বিচারক মামলাটি ৪ এপ্রিলের মধ্যে সিআইডিকে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন। মামলায় দৈনিক মুক্তখবরের খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি মিজানুর রহমান সবুজ, সময়ের কাগজের প্রতিনিধি এম ইদ্রিছ আলী, দৈনিক গণকন্ঠ ও পাহাড় বার্তার প্রতিনিধি আবদুল জলিলসহ ৭ জনকে আসামী করা হয়। মামলার অন্যান্য আসামীরা হলেন, দীঘিনালার মধ্য বেতছড়ির সাবেক ইউপি সদস্য আবুল কালামের ছেলে মো. সোহাগ, বেলছড়ির নেওয়াজ আলীর ছেলে মো. সোহাগ মিয়া, বেতছড়ির মো. হেকমত আলীর ছেলে মো. রবিউল ইসলাম ও বড় মেরুং'র আবদুল করিম'র ছেলে মোহাম্মদ আলী।
মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, বিগত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে সাবেক চেয়ারম্যান বিদ্রোহী প্রার্থী রহমান কবির রতন মনোনয়ন বঞ্চিত হয়ে নিজেকে নির্বাচন থেকে প্রত্যাহার করে নিলেও আসামীগনসহ তার সন্ত্রাসী সাঙ্গপাঙ্গ দ্বারা বাদীকে জনসম্মুখে হেয় প্রতিপন্ন করার চেষ্টায় রত। এছাড়া মেরুং (উত্তর) ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক গুলজার হোসেন তার ২-৪ জন সাঙ্গপাঙ্গকে সাথে নিয়ে আসামীগনকে মঞ্চের সামনে মোবাইল সহ দাঁড় করিয়ে দলীয় কিছু অপেশাদার ও অনিবন্ধিত ব্যক্তিকে সাংবাদিক সাজিয়ে বাদীকে হেয় প্রতিপন্ন করার লক্ষ্যে বাদীর বিরুদ্ধে মিথ্যা ও মানহানিকর বক্তব্য ভিডিও ধারণ করেন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেজবুকে পোস্ট করে।এছাড়া গত ৬ জানুয়ারি থেকে ১৩ জানুয়ারি পর্যন্ত আসামিরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে বাদীর বিরুদ্ধে মানহানিকর পোস্ট কমেন্ট করে। এই অভিযোগ নিয়ে দীঘিনালা থানায় গেলে দ্বায়িত্বরত কর্মকর্তা তাকে সাইবার ট্রাইবুনালে মামলা দায়েরের পরামর্শ দেন।
মামলায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ২০১৮-এর ২৫,২৯,৩১ ও ৩৫ ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে।
ভুক্তভোগী ৩ সাংবাদিক জানান, গতবছরের ৩১ ডিসেম্বর মেরুং ইউনিয়নের ৫ নং ওয়ার্ডে "খাদ্য বান্ধব কর্মসূচির ৩ কার্ড সম্পদশালী একই পরিবারে" এমন অভিযোগ পেয়ে বেশ কয়েকটি জাতীয় দৈনিক পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশ করা হয়৷ পাশাপাশি গত ৬ জানুয়ারি মেরুং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাহমুদা বেগম লাকীর বিরুদ্ধে নানা দূর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগ এনে বর্ধিত সভা করে মেরুং ইউনিয়ন (উত্তর-দক্ষিণ) আওয়ামী লীগ। সে বর্ধিত সভা থেকে হাজার লোকের উপস্থিতিতে চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে ঝাড়ু মিছিল করে দলীয় নেতাকর্মী ও সাধারণ জনগণ। পরবর্তীতে বেশ কয়েকজন ইউপি সদস্যসহ সংবাদ সম্মেলন করে অভিযুক্ত সেই ইউপি চেয়ারম্যান। চেয়ারম্যান পক্ষে শতাধিক জনতা মানববন্ধনও করে। সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে চেয়ারম্যানের পক্ষে প্যানেল চেয়ারম্যান ঘনশ্যাম ত্রিপুরা মানিক বলেন,"সূলভ মূল্যের সে ৩ কার্ড চেয়ারম্যান, ইউপি সদস্য ও উদ্যোক্তার সুপারিশে হয়েছে"। এসব ঘটনার প্রকাশিত সংবাদ ও বক্তব্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেজবুকে প্রচারের জেরেই এ অভিযোগ করা হয়েছে বলে জানান তারা।