ফের ভয়াবহ রুশ গোলাবর্ষণ ইউক্রেনে। এ দেশের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জ়েলেনস্কি সাংবাদিক বৈঠকে জানিয়েছেন, খেরসনে রুশ গোলায় তিন জনের মৃত্যু হয়েছে। খারকিভে প্রাণ হারিয়েছেন এক জন। এ অবস্থায় জ়েলেনস্কি নতুন করে আমেরিকা ও পশ্চিম ইউরোপের বন্ধু দেশগুলির কাছে অস্ত্র-সাহায্য চেয়েছেন। ইউক্রেনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রক জানিয়েছে, তাদের অস্ত্রের ভান্ডার ফুরিয়ে এসেছে। যুদ্ধে জিততে হলে প্রয়োজন শক্তিশালী অস্ত্রের সরবরাহ।জ়েলেনস্কি জানিয়েছেন, খেরসনে গত কাল দিনভর গোলাবর্ষণ চলেছে। একটি হাসপাতালে হামলা চালায় রুশ বাহিনী। এই ঘটনায় দুই মহিলা ও হাসপাতালের কিছু নার্স জখম হয়েছেন। মৃতদের মধ্যে দু’জন পুরুষ ও এক জন মহিলা। যুদ্ধের শুরু থেকে বারবারই রাশিয়ার বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে, তারা সাধারণ মানুষের বাসস্থান বা সরকারি পরিষেবায় হামলা চালাচ্ছে। মস্কো অবশ্য কখনওই এই অভিযোগ স্বীকার করেনি। তাদের দাবি, তারা শুধুমাত্র সামরিক ক্ষেত্রগুলিতেই হামলা চালাচ্ছে।
ইউক্রেন জানিয়েছে, গত কাল খেরসন রিজিওনাল ক্লিনিক্যাল হাসপাতাল, একটি স্কুল, একটি বাস স্টেশন, পোস্ট অফিস, ব্যাঙ্ক ও বসতি এলাকার উপরে গোলাবর্ষণ করে রুশ বাহিনী। পূর্ব খারকিভে একটি চারতলা আবাসনে হামলা করা হয়। খারকিভের সেনা আধিকারিক ওলে সিনেহুবোভ বলেন, ‘‘তিন জন সামান্য জখম হয়েছেন। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক ভাবে এক বয়স্ক মহিলার মৃত্যু হয়েছে। বাড়িটির একাংশ ভেঙে পড়েছে হামলায়।’’
দক্ষিণ ইউক্রেনের জ়াপোরিজিয়া অঞ্চলেও হামলা চালিয়েছে রুশ সেনাবাহিনী। একটি স্থানীয় সংবাদ সংস্থার দাবি, সম্প্রতি হামলার গতিবেগ বেড়েছে এই অঞ্চলে। এলাকাটি যুদ্ধ শুরুর পরপরই রাশিয়ার দখলে চলে যায়। এখনও মস্কোর নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। তাদের দাবি, কিভের বাহিনী রেলসেতু নিশানা করে হামলা চালিয়েছে। তাতে প্রাণহানি ঘটেছে। জ়াপোরিজিয়ায় রাশিয়ার নিযুক্ত প্রশাসক ইয়েভগেনি বালিতস্কি দাবি করেছেন, ইউক্রেনের হিমারস রকেট মোলোচনায়া নদীর উপরে রেলসেতুতে এসে পড়েছিল। সেতুটি মেলিটোপোল শহরের কাছে। এই শহরও রাশিয়ার নিয়ন্ত্রণে। বালিতস্কি বলেন, ‘‘চার জন রেলকর্মী প্রাণ হারিয়েছেন। পাঁচ জন জখম।’’ইতিমধ্যে একটি ব্রিটিশ সংবাদ সংস্থার তথ্যচিত্রে ব্রিটেনের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন দাবি করেছেন, ফেব্রুয়ারি মাসে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর আগে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন তাঁকে হুমকি দিয়েছিলেন। সে সময়ে যুদ্ধ শুরু হল বলে। রাষ্ট্রনেতারা রুশ আগ্রাসন রুখতে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছেন। এমন একটা পরিস্থিতিতে বরিস জনসনকে ফোন করেছিলেন পুতিন। বরিস বলেন, ‘‘একটা পয়েন্টেই আমাকে হুমকি দেন। উনি বলেন, ‘বরিস আমি আপনাকে আঘাত দিতে চাই না। কিন্তু একটা ক্ষেপণাস্ত্র, এক মিনিট সময় লাগবে...। তবে কেউ কোনও দিনও জানতে পারবেন না, সত্যিই পুতিন হুমকি দিতে চেয়েছিলেন কি না।’’