ঢাকা, বুধবার ৮ই মে ২০২৪ , বাংলা - 

সরিষার বাম্পার ফলন কৃষকের মূখে হাসি

এ কে আজাদ, খাগড়াছ‌ড়ি জেলা সংবাদদাতাঃঢাকাপ্রেস২৪.কম

2023-01-19, 12.00 AM
সরিষার বাম্পার ফলন কৃষকের মূখে হাসি

সরিষার উৎপাদন খরচ কম  অধিক মুনাফা হওয়ায় দিন দিন সরিষার আবাদ বাড়ছে খাগড়াছড়ি জেলা‌তে।  আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় সঠিক পরিচর্যায় উপজেলায় চলতি মৌসুমে  এ বছর সরিষার বাম্পার ফলন হয়েছে। ‌জেলার উপজেলা গু‌লোর বিস্তীর্ণ ফসলের মাঠ জুড়ে চারদিকে শুধু হলুদের ঢেউ।বাজারে সরিষার ভালো দাম থাকায় চাষিরা দিন দিন সরিষা চাষের দিকে ঝুঁকছেন। সরিষার বাম্পার ফলনে কৃষকের মুখে হাসি  ফুটেছে।

 

 

জেলার উপ‌জেলা গু‌লো প্রতিটি ইউনিয়নে  সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়,বিস্তীর্ণ ফসলের মাঠ জুড়ে সরিষা ফুলের হলুদ রঙে অপরূপ শোভা ধারণ করেছে। মাঠে পরিচর্যার কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকেরা। চলতি বছরে মাটিরাঙ্গা উপজেলায় ১শ ১৫ হেক্টর জমিতে সরিষার আবাদ হয়েছে।

 

 

উপজেলায় মাঠের পর মাঠ সরিষার হলুদ ফুলে ভরে গেছে। কৃষকের রঙিন স্বপ্ন দুলছে শিশির ভেজা সরিষার হলুদ ফুলের ডগায়। কিন্তু লাগাতার ধান-পাটসহ উৎপাদিত কৃষি পণ্যের দাম না পাওয়ায় কৃষকরা ঝুঁকছেন লাভজনক ফসল সরিষা চাষের দিকে।

 

 

গত মৌসুমে স্থানীয় বাজারগুলোতে সরিষার দাম ভালো পাওয়ায় কৃষকরা চলতি মৌসুমে সরিষা চাষে অধিক আগ্রহী  হয়েছেন। বর্তমানে এ উপজেলার মাঠে মাঠে সরিষার হলুদ ফুল শোভা পাচ্ছে। মৌমাছিরা সরিষা ক্ষেতে ভিড় করছে মধু সংগ্রহ করতে। চলতি মৌসুমে উপজেলায় সরিষার বাম্পার ফলনের আশা করছেন কৃষকরা।

 

উপজেলার সরিষা চাষী ক‌রেন ত্রিপুরা রাই‌জিং‌বি‌ডি কে বলেন, কম খরচ, কম পরিশ্রম আর কম সময়ে সরিষা চাষ করা যায় বলে এটি অত্যন্ত লাভজনক ফসল। প্রতি বিঘা জমিতে খরচ ৩হাজার ৫শ টাকা  জমি থেকে চলতি মৌসুমে ৪-৫ মণ হারে সরিষা পাওয়া যাবে।

অন‌্য এক কৃষক আলী মিয়া বলেন, জানুয়ারী শেষ সপ্তাহে সরিষা কর্তন করা হবে।  বর্তমানে বাজারে প্রতি মণ সরিষা চার হাজার টাকার বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে।

 

উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, হলুদ ফুলে ছেয়ে গেছে দিগন্ত জোড়া মাঠের পর মাঠ। সরিষা ফুলের হলুদ রাজ্যে মৌমাছির গুঞ্জনে মুখর হয়ে উঠেছে মাঠ। সরিষা চাষাবাদের ফলে আমন ও বোরো ধানের মাঝে উপরি ফসল পেয়ে তাদের লাভ হয়। পাশাপাশি নিজেদের সংসারে তেলের চাহিদাও পূরণ হয়।

 

মাটিরাঙ্গা  উপজেলা কৃষি অফিসার মো: মোস্তাফিজুর রহমান জানান, চলতি মৌসুমে উপজেলায় ৩৩ হেক্টর  জমিতে সরিষা চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল। সেখানে সাময়িক পতিত এক ফসলী  ১শ,১৫ হেক্টর   জমিতে উন্নত জাতের সরিষা চাষ হয়েছে। সরিষায় ফুল আসাও শুরু করেছে। তেল জাতীয় ফসল চাষে কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করতে চলতি মৌসুমে উপজেলার ৪শ জন কৃষককে কৃষি প্রণোদনার অংশ হিসেবে বিনামূল্যে উন্নত জাতের সরিষার বীজ ও সার দেওয়া হয়েছে।

 

তিনি আরো বলেন, বাজারে সয়াবিনসহ অন্যান্য ভোজ্য তেলের মূল্য বৃদ্ধির ফলে গত মৌসুমে সরিষার ব্যাপক চাহিদা ছিলো। এবারও সরিষার ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। গাছ দেখে বোঝা যাচ্ছে ফলন ভালো হবে। সরিষা একটি লাভজনক ঝুঁকিমুক্ত ফসল।

 

 

সরিষার আবাদ বৃদ্ধিতে সরকার কৃষকদের বীজ, সার ও পরামর্শ দিয়ে উদ্বুদ্ধ করছে। সরিষা চাষ সম্প্রসারণের জন্য কৃষি বিভাগ অক্লান্ত পরিশ্রম করে যাচ্ছে। সরকারিভাবে প্রায় ৪শ৩০ জন   কৃষকের মাঝে সরিষা বীজ, সার ও ৪শ,২০ জন কৃষকের মাঝে সরিষা বীজ বিতরণ করা  হয়েছে। সরিষার ভালো দাম থাকায় চাষিরা দিন দিন সরিষা চাষের দিকে ঝুঁকছে বলে জানান এই কৃষি অফিসার মো:মোস্তাফিজুর রহমান। ###