গ্রেফতার হলেন প্রয়াত অভিনেত্রী রিয়া কুমারীর স্বামী প্রকাশ কুমার। রিয়ার পরিবারের দাবি, তাঁদের মেয়েকে পরিকল্পনা করে খুন করেছেন তাঁর স্বামীই। বুধবার রিয়ার হত্যাকাণ্ডে তদন্তের আর্জি জানালেন তাঁরা।বুধবার সকাল ৬টা নাগাদ সেই ভয়াবহ ঘটনা ঘটে। ঝাড়খণ্ড থেকে কলকাতা আসার পথে হাওড়ার বাগনানের রাজাপুর এলাকায় জাতীয় সড়কের উপর মহিষরেখা সেতুর কাছে গুলি করে খুন করা হয় ওই গাড়ির মহিলা যাত্রী রিয়া কুমারীকে। কিন্তু তাঁর মৃত্যুর ঘটনা সামনে আসতেই দানা বাঁধে রহস্য।
পরিবারের অভিযোগ, রোজগার করতেন বলেই রিয়ার উপর সব রাগ গিয়ে পড়েছিল প্রকাশের। ইউটিউবার হওয়ায় রিয়ার গতিবিধি নিয়েও প্রশ্ন তোলা হত। প্রতিনিয়ত তাঁকে সন্দেহ করতেন প্রকাশ। পাশাপাশি চলত মানসিক এবং শারীরিক নির্যাতন। রিয়ার উপার্জন করা অর্থ হাতিয়ে নিতেন প্রকাশ, এমনও বলছে অভিনেত্রীর পরিবার। সেই থেকেই অশান্তির সূত্রপাত। দাম্পত্যকলহ বড় আকার নিয়েছিল।
ঝাড়খণ্ডের বাসিন্দা রিয়া। বুধবার স্বামী এবং তাঁর আড়াই বছরের শিশুকন্যাকে নিয়ে গাড়ি করে রাঁচী থেকে কলকাতায় আসছিলেন রিয়া। গাড়ি চালাচ্ছিলেন প্রকাশ।বাগনানের মহিষরেখা সেতুর কাছে প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে গাড়ি দাঁড় করিয়ে দেন প্রকাশ। গাড়ি থেকে নামার সঙ্গে সঙ্গে তাঁকে ঘিরে ধরে ৩ জন দুষ্কৃতী। তারা সকলেই সশস্ত্র ছিল বলে দাবি প্রকাশের। টাকা ছিনতাইয়ের চেষ্টাও করে দুষ্কৃতীরা। বাধা দিতে গাড়ি থেকে নেমে পড়েন রিয়া।
সেই মুহূর্তে রিয়াকে লক্ষ্য করে গুলি চালায় দুষ্কৃতীরা। পয়েন্ট ব্ল্যাঙ্ক রেঞ্জ থেকে গুলি করা হয় রিয়াকে। কানের তলায় গুলি লেগে রক্তাক্ত অবস্থায় মাটিতে লুটিয়ে পড়েন রিয়া। দুষ্কৃতীরা সেই সুযোগে ছিনতাই করে পালিয়ে যায়।ঘটনাস্থলের আশপাশে কেউ না থাকায় প্রকাশ তাঁর আহত স্ত্রীকে নিয়ে পৌঁছন রাজাপুর থানার পীরতলা এলাকায়। স্থানীয়দের এই বিষয়ে জানালে তাঁরা সঙ্গে সঙ্গে পুলিশকে খবর দেন। ঘটনাস্থলে পুলিশ এসে পৌঁছলে রিয়াকে উলুবেড়িয়ার হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকেরা রিয়াকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
প্রাথমিক তদন্তে নেমে প্রকাশকে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করে পুলিশ। প্রকাশের বক্তব্যে কিছু ‘অসঙ্গতি’ দেখে পুলিশ, তখনই সন্দেহের জাল সামনে আসে। প্রকাশের সব বয়ান খতিয়ে দেখে পুলিশ। সেতুর কাছে গাড়ি দাঁড় করানো এবং ঠিক সেই সময়েই দুষ্কৃতীদের প্রকাশকে ঘিরে ফেলা— এই দুই ঘটনার সমাপতন ভাবাচ্ছে পুলিশকে।