সাপ পোষার খেসারত দিতে হবে। বারাক ওবামার জমানায় আমেরিকার বিদেশ সচিব হিলারি ক্লিন্টন সন্ত্রাসে মদত প্রসঙ্গে সতর্ক করেছিলেন পাকিস্তানের তৎকালীন বিদেশমন্ত্রী হিনা রব্বানি খারকে। বলেছিলেন, ‘‘তুমি নিজের উঠোনে সাপ পুষবে, অথচ ভাববে, সেটা শুধু পড়শিকেই কামড়াবে, তা হয় না!” এ বার রাষ্ট্রপুঞ্জে সন্ত্রাস প্রসঙ্গে ইসলামাবাদকে নিশানা করতে হিলারির সেই মন্তব্যকেই হাতিয়ার করলেন বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। ঘটনাচক্রে, সেখানে উপস্থিত ছিলে হিনাও। এক দশক পরে এখন তিনি পাকিস্তানের বিদেশ প্রতিমন্ত্রী।
হিনা বৃহস্পতিবার ভারতের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসে মদত দেওয়ার অভিযোগ তুলেছিলেন রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদে। তার জবাবে সরাসরি ওসামা বিন লাদেনকে আশ্রয় দেওয়া এবং সংসদে হামলার প্রসঙ্গে ইসলামাবাদকে বিঁধেছিলেন ভারতের বিদেশমন্ত্রী। এর পর রাষ্ট্রপুঞ্জে ‘গ্লোবাল কাউন্টার টেররিজম অ্যাপ্রোচ: চ্যালেঞ্জেস অ্যান্ড ওয়ে ফরওয়ার্ড’ শীর্ষক এক আলোচনাসভায় জয়শঙ্করের মন্তব্য, ‘‘ওরা (পাকিস্তান) আজ যা বলেছে, তার প্রেক্ষিতে একটাই কথা বলা যায়— বিশ্ব আজ ওদের সন্ত্রাসের আঁতুড়ঘর হিসাবে দেখছে।’’ এর পরেই হিলারির সেই মন্তব্য শোনা যায় জয়শঙ্করের গলায়।
রাষ্ট্রপুঞ্জ নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠকে আফগানিস্তানে সন্ত্রাস প্রসঙ্গ নিয়েও সরব হন জয়শঙ্কর। তিনি বলেন, ‘‘আমরা আশা করব, নতুন করে সন্ত্রাসের কেন্দ্র হবে না আফগানিস্তান।’’ পাকিস্তানের নাম না করে আগানিস্তানে সন্ত্রাস রফতানিতে ‘প্রতিবেশী দেশের ভূমিকার’ অভিযোগও করেন বিদেশমন্ত্রী। নিরাপত্তা পরিষদের ওই বৈঠকে সভাপতি জয়শঙ্করের বক্তৃতায় নিউ ইয়র্কের ৯/১১ সন্ত্রাস এবং ২৬/১১ মুম্বই হামলার প্রসঙ্গও এসেছে। সন্ত্রাস মোকাবিলার জন্য তিনি নাম না করে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক সক্রিয়তার পক্ষে সওয়াল করেন। হিলারির ‘সাপ’ মন্তব্য হাতিয়ার করে হিনাকে খোঁচা দিয়ে বলেন, ‘‘আমি জানি, আমরা কোভিডের আড়াই বছর পার করেছি এবং এর ফলে আমাদের অনেকেরই মস্তিষ্কে ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছে৷ কিন্তু আমি আপনাকে আশ্বাস দিচ্ছি যে সন্ত্রাসের উৎপত্তি এবং বিস্তারে কাদের ভূমিকা রয়েছে, তা বিশ্ব ভুলে যায়নি।’’