ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ, হাইতিতে বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি ও মেক্সিকোতে অপরাধী চক্রগুলোর ক্রমবর্ধমান সহিংসতার জেরে গত বছরের তুলনায় ২০২২ সালে আরও বেশি সংখ্যক সাংবাদিক পেশাগত দায়িত্ব পালনকালে নিহত হয়েছেন। ২০২২ সালে সারাবিশ্বে নিহত হয়েছেন ৬৭ জন সাংবাদিক। যেখানে ২০২১ সালে নিহত হন ৪৭ জন।শুক্রবার ( ৯ ডিসেম্বর) ইন্টারন্যাশনাল ফেডারেশন অব জার্নালিস্টস (আইএফজে) এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, এ বছর সারা বিশ্বে ৬৭ জন সাংবাদিক ও গণমাধ্যমকর্মী নিহত হয়েছেন। গত বছর এ সংখ্যা ছিল ৪৭।
আইএফজে বলছে, এ বছর অন্য যেকোনো দেশের তুলনায় ইউক্রেনে যুদ্ধের সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়ে সবচেয়ে বেশি সংখ্যক গণমাধ্যমকর্মী নিহত হয়েছেন। এই নিহতের সংখ্যা মোট ১২ জন।
আইএফজে আরও বলছে, ফিলিস্তিনি শরণার্থী শিবিরে সংবাদ সংগ্রহের সময় আল-জাজিরার সাংবাদিক শিরিন আবু আকলেহকে গুলি করে হত্যা করা হয়। চলতি সপ্তাহে সেই হত্যা মামলার তদন্তের জন্য আন্তর্জাতিক অপরাধবিষয়ক আদালতে (আইসিসি) আবেদন করেছে আল-জাজিরা গণমাধ্যম।
ব্রাসেলস-ভিত্তিক সংস্থাটি জাতিসংঘের মানবাধিকার দিবসকে সামনে রেখে এ প্রতিবেদন প্রকাশ করলো। কর্মরত অবস্থায় কারাবন্দি হওয়া সাংবাদিকদের একটি পরিসংখ্যানও দেখিয়েছে তারা। এ বছর কর্মরত অবস্থায় কারাবন্দি সাংবাদিকের সংখ্যা ৩৭৫ জন। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি বন্দি রয়েছে চীন, মিয়ানমার, তুরস্ক, ইরান ও বেলারুশে। গত বছরের প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল, কারাগারে বন্দি সাংবাদিকের সংখ্যা ৩৬৫ জন।
আইএফজে জানিয়েছে, পাকিস্তানে এ বছর রাজনৈতিক সংকটের মধ্যে পাঁচজন সাংবাদিকের মৃত্যু রেকর্ড করা হয়েছে। সংস্থাটি কলম্বিয়ার সাংবাদিকদের জন্য নতুন হুমকি তৈরি হয়েছে বলে জানিয়েছে। এ ছাড়া নতুন নেতৃত্ব থাকা সত্ত্বেও ফিলিপাইনে সাংবাদিকদের জন্য সতর্কবার্তা দিচ্ছে সংস্থাটি।
আইএফজে আরও বলছে মেক্সিকোতে অপরাধী চক্রগুলোর ক্রমবর্ধমান সহিংসতা ও হাইতিতে আইন-শৃঙ্খলার পরিস্থিতি ভেঙে পরার কারণেও নিহতের সংখ্যা বেড়েছে।
গণমাধ্যম কর্মীদের হত্যার সংখ্যা বাড়ার জেরে সরকারগুলোকে সাংবাদিকদের পাশাপাশি গণমাধ্যমের স্বাধীনতা রক্ষার জন্য আরও দৃঢ় পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে সংস্থাটি। ব্রাসেলস-ভিত্তিক আইএফজে ১৪০টির বেশি দেশে ট্রেড ইউনিয়ন ও অ্যাসোসিয়াশনের ৬ লাখ গণমাধ্যম পেশাদারদের প্রতিনিধিত্ব করে আসছে।সূত্র: আল-জাজিরা, ভয়েজ অব আমেরিকা