গত দু’দিনে ঐন্দ্রিলা শর্মার শারীরিক পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়। এক সময় তাঁর মৃত্যুর ভুয়ো খবর পর্যন্ত রটে যায়। গত কয়েক দিনের উৎকণ্ঠার পরে মধ্যরাতে সব্যসাচী চৌধুরীর একটি পোস্ট কিছুটা স্বস্তি দিয়েছে আশঙ্কিত টলিউডকে। অভিনেত্রীর কাছের মানুষ জানিয়েছেন, শারীরিক অবস্থার উন্নতি হয়েছে ঐন্দ্রিলার। তাঁর মাথার কাছে ঠায় বসে থাকা সব্যসাচীই দেখতে পান হঠাৎ হাত নড়ে উঠতে। যদিও তার একটু আগেই হাল ছেড়ে দিয়ে চলে গিয়েছিলেন স্নায়ুচিকিৎসক। তবে সব্যসাচীর মন এত তাড়াতাড়ি হাল ছাড়তে নারাজ।ঈশ্বরে কিংবা অলৌকিকে আস্থা রেখেছিলেন সব্যসাচী। কারণ, ঐন্দ্রিলার ক্ষেত্রে ‘মিরাক্ল’ তো আগেও হয়েছে। দু’বার ক্যানসারের গ্রাস থেকে ফিরে এসে স্বাভাবিক জীবন যাপন করছিলেন যে মেয়ে, তাঁকেই তো অনেক বেশি করে চেনেন সব্যসাচী। তাই আশা ছিল। প্রার্থনা করতে অনুরোধ জানিয়েছিলেন সকলকে। সেই পোস্ট দেখে কটাক্ষ ভেসে এসেছিল। ফেসবুকে প্রার্থনার যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন অভিনেতা ঋত্বিক চক্রবর্তী। যদিও তাতে ঐন্দ্রিলা প্রসঙ্গে কোনও সরাসরি মন্তব্য ছিল না। কিন্তু বিতর্ক উস্কে দিয়েছিল দু’দিন আগের সেই পোস্ট। গত বুধবার ঋত্বিক লিখেছিলেন, “অনেককেই দেখি নানা কারণে ফেসবুকে প্রার্থনা করেন। কিন্তু যার কাছে প্রার্থনা করা হয় তিনি ফেসবুক করেন তো”।
ঐন্দ্রিলার শারীরিক অবস্থার একটু উন্নতি হতেই ঋত্বিকের সেই পোস্ট নিয়েও মুখ খুললেন সব্যসাচী। নাম না করলেও বোঝা যায়, তিনি সেই পোস্টের প্রেক্ষিতেই জবাব দিচ্ছেন। ঐন্দ্রিলাকে নিয়ে দীর্ঘ বার্তার এক অংশে লেখা ছিল, “ঈশ্বর ফেসবুক করেন না আমি জানি, তাই লিখেছিলাম মন থেকে প্রার্থনা করুন, ‘ফোন’ থেকে করুন লিখিনি। চিকিৎসাশাস্ত্রে যে বিজ্ঞানই শেষ কথা, আমি সে কথাও জানি। তবে পর পর তিনজন নিউরোসার্জন যদি বলেন ‘ঈশ্বরকে ডাকুন’, তাহলে আর না ডেকে উপায় কি? ওঁদের তুলনায় আমি নিতান্তই অশিক্ষিত। তবে কেবল আমি একা নই, মুর্শিদাবাদের প্রতিটা মন্দির, প্রতিটা মসজিদে মানুষ ওর জন্য প্রার্থনা করেছে। বিভিন্ন ধর্মের বিভিন্ন প্রসাদ এবং অজস্র আশীর্বাদী হাসপাতালে এসেছে নিয়মিত। তোমাদের সকলকে ধন্যবাদ জানিয়ে আমি ছোট করতে পারবো না। অনেকে অবশ্য হেসেছে বা অপমান করেছে, তাতেও আমি বিন্দুমাত্র কিছু মনে করিনি। এই ক্ষুদ্র জীবনে বহুবার কাদায় পড়েছি তো, তাই গায়ের চামড়া বেশ মোটা হয়ে গেছে।’’সব্যসাচীর আস্থা ছিল ভালবাসায়। তিনি জানতেন অনেক মানুষ ভালবাসা নিয়েও পাশে আছেন। তাঁদের উদ্দেশেই ঐন্দ্রিলার খবরাখবর ভাগ করে নেন বলে জানান। তাই শুক্রবার রাতে আশাপ্রদ সেই পোস্টের শুরুতেই লিখেছিলেন, ‘‘কয়েক হাজার মানুষের নিঃস্বার্থ ভালোবাসার জন্য এতখানি লেখা প্রয়োজন ছিল। একটু কষ্ট করে পড়ে নিও।...’’ বৃহস্পতিবার রাতে হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছিল, হৃদ্রোগে আক্রান্ত হওয়ার পর তখনও পর্যন্ত তেমন উন্নতি হয়নি ঐন্দ্রিলার। তাঁর রক্তচাপ ওঠানামা করছে। সংক্রমণের জন্য চলছে কড়া কড়া ওষুধ। বাড়ানো হয়েছে অ্যান্টিবায়োটিকের মাত্রা। চোখ খুলছেন না। পুরো অসাড়। মুখের কোনও প্রতিক্রিয়া নেই। শুক্রবার সামান্য উন্নতি হয়েছে অবস্থার। আর রাতে সব্যসাচী দাবি করলেন, অভিনেত্রীর শারীরিক অবস্থার কিছুটা উন্নতি ঘটছে।