ঢাকা, শনিবার ২০ই এপ্রিল ২০২৪ , বাংলা - 

যুবলীগের ৫০ বৎসরের ইতিহাস

অধ্যাপক জাহাঙ্গীর আলম

2022-11-12, 12.00 AM
যুবলীগের  ৫০ বৎসরের ইতিহাস

সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশে একটি সুন্দর সুশিক্ষিত জাতি গড়ে তোলার লক্ষে মুক্তিযুদ্ধ ফেরত সৎ,পরিক্ষীত, বিনয়ী ও ত্যাগী ছাত্রনেতাদের সমন্বয়ে ও কঠোর মনিটরিং এর মাধ্যমে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবুর রহমানের সুদুর প্রসারী পরিকল্পনা ও সুনিপুন নির্দেশনায় ১৯৭২ সালের ১১ই নভেম্বর মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক ও ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক শেখ ফজলুল হক মনির নেতৃত্বে যে যুব সংগঠন এর সূচনা হয়েছিল - সুদীর্ঘ প্রায় ৫০ বৎসরের সফল নৈপুন্য এবং সর্বোচ্চ ত্যাগ এর মাধ্যমে তা আজ আওয়ামী লীগ প্রধান শেখ হাসিনার অত্যন্ত প্রিয় ও পরীক্ষিত সংগঠন নয় শুধু দেশের জনগণের আশা আকাঙ্খার অন্যতম পার্লামেন্ট হিসেবে বাংলাদেশের সর্ব বৃহৎ যুব সংগঠনে পরিণত হয়েছে। 

বাংলাদশেরে স্বাধীনতা ও মুক্তযিুদ্ধরে মূলমন্ত্র গণতন্ত্র, শোষণমুক্ত সমাজ র্অথাৎ সামাজকি ন্যায়বচিার,  জাতীয়তাবাদ,  র্ধম নরিপক্ষেতা, সকল র্ধমরে  মানুষরে স্ব স্ব র্ধম স্বাধীনভাবে পালনরে অধকিার তথা জাতীয় চার মুলনীতকিে সামনে রখেে বকোরত্ব দূরীকরণ, দারদ্রি দূরীকরণ, দারদ্রি বমিোচন, শক্ষিা সম্প্রসারণ, গণতন্ত্রকে প্রাতষ্ঠিানকি রূপদান, অসাম্প্রদায়কি বাংলাদশে ও আত্মনর্ভিরশীল  র্অথনীতি গড়ে তোলা এবং যুবসমাজরে ন্যায্য অধকিারসমুহ প্রতষ্ঠিার লক্ষ্যে যুবলীগরে প্রতষ্ঠিা।

এ লক্ষ্য বাস্তবায়নে দশেরে সকল শ্রণেী ও পশোর মানুষরে মধ্য থকেে স্বাধীনতা ও প্রগতকিামী যুবক ও যুব মহলিাদরে ঐক্যবদ্ধ করে তাদরে রাজনতৈকি শক্ষিায় শক্ষিতি করে একটি সুশৃঙ্খল সংগঠন গড়ে তোলাই  যুবলীগরে উদ্দশ্যে।  

জন্ম লগ্নতেই যুবলীগ যেমন দায়িত্ব পেয়েছিল জাসদ এবং তথা কথিত গণবাহিনী নামধারী সশ্রস্ত্র লুটেরাদের রাজনৈতিক ভাবে প্রতিরোধ করে যুব ও জন সচেতনতা বৃদ্ধি করা ও দেশের শান্তি প্রিয় মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে রাষ্ট্রযন্ত্রকে সার্বিকভাবে সহযোগিতা করা  তেমনি ২০০১-২০০৬ সালে এডভোকেট জাহাঙ্গীর কবীর নানক ও মির্জা আজম এমপি'র নেতৃত্বে যুবলীগ দেশের গণতন্ত্র রক্ষায় মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী শক্তির ঐক্য গড়ে তুলে বিএনপি জামায়াতের নেতৃত্বাধীন জঙ্গীবাদ সরকার  বিরোধী আন্দোলনে শেখ হাসিনার বিশ^ন্ত ভ্যানগার্ড হিসেবে ভুমিকা পালন করেছিল।

যুবলীগ মানেই শুধু আন্দোলনের অগ্নিবীণা-রাজপথ কাপানো ঝঞ্জা বিক্ষুব্দ উত্তাল সাইক্লোন কিংবা নিয়ন্ত্রণহীণ দাবানল নয় দেশ জাতির প্রয়োজনে যুবলীগ এখন দেশের অন্যতম মানবিক হৃদয়ের রাজনৈতিক সংগঠন হিসেবেও আত্বপ্রকাশ করেছে।২০২০ এবং ২০২১ সালের বিশ^ব্যাপী ভয়াল করোনার সময় যুবলীগ দেশের লাখো মানুষকে খাদ্য সাহায্য প্রদান,অক্সিজেন ও চিকিৎসা সামগ্রী প্রদান , করোনাক্রান্তদের দাফন ব্যবস্থা, রক্ত দান , অসহায় গৃহহীনদের গৃহ দান , অন্ধজনে সাদা ছড়ি দান , হাফেজগণকে কোরআন ও পাগড়ী প্রদান সহ নানাহবীধ প্রসংশনীয় কাজের মাধ্যমে মানবিক হৃদয়ের রাজনৈতিক সংগঠন হিসেবে দেশখ্যাতি পেয়েছে।

সংক্ষিপ্ত ইতিহাস : দেশের সুশিল সমাজে প্রশংসিত আজকের এ সুশৃংখল বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ'র জন্ম হয়েছিল ১৯৭২ সালের ১১ই নভেম্বর ঢাকার ইঞ্জিনিয়ার্স ইনিস্টিটিউটে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু মুজিব-এর হাতে। তৎকালীন যুব সমাজের প্রধান আকর্ষণ মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক মাত্র ২০ বৎসর বয়সে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক পদে নির্বাচিত যুবনেতা শেখ ফজলুল হক মনিকে চেয়ারম্যান এবং ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ও স্বাধীন বাংলাদেশের ছাত্র আন্দোলনের কিংবদন্তী চার খলিফার অন্যতম যুবনেতা নূর আলম সিদ্দিকীকে সাধারণ সম্পাদক করে যুবলীগের প্রথম কমিটি গঠিত হয়। বাংলাদেশের মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে প্রত্যক্ষ অংশ গ্রহণকারী প্রাক্তণ ছাত্রনেতাদের চৌকস টিম নিয়ে যুবলীগের প্রথম কমিটি গঠিত হওয়ার আগে দীর্ঘ আলাপ আলোচনা ও পরিকল্পনা চূড়ান্ত করা হয় শেখ ফজলুল হক মনির মতিঝিলস্থ মধুমতি মুদ্রণালয়ে (বর্তমানে বাংলার বাণী ভবনে)। সমগ্র বিষয়টি সুক্ষভাবে মনিটর করেন বঙ্গবন্ধু মজিব এবং তার নির্দেশে যুবলীগের নেতৃত্বে আসেন মেধাবী ছাত্র নেতাদের একটা বিশাল অংশ। শেখ ফজলুল হক মনি, নূর আলম সিদ্দিকীর নেতৃত্বাধীন প্রথম কমিটির প্রেসিডিয়াম সদস্য পদে ডাকসুর জিএস (মরহুম) আবদুল কুদ্দুস মাখন ,  যশোরের (মরহুম) ডঃ হায়দার আলী, সিলেটের (মরহুম) ডঃ চঞ্চল, সৈয়দ রেজাউর রহমান (কুমিল্লা), সুলতান শরীফ ( বর্তমানে লন্ডনে), আমির হোসেন আমু , আব্দুর রাজ্জাক (মরহুম), যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পদে চুয়াডাঙ্গার (মরহুম) ডঃ আলী হায়দার সেলিম (তিনি লিবিয়াতে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হন), সাংগঠনিক সম্পাদক পদে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন ভিপি ফরিদপুরের এম. এ. রেজা (মরহুম), দপ্তর সম্পাদক পদে এ, এফ, এম, মেজবাহ উদ্দিন (পরবর্তীতে বিচারপতি), আইন সম্পাদক পদে এডভোকেট এ, কে, এম, সাইফুদ্দিন নির্বাচিত হন। এছাড়া গুরূত্বপূর্ণ পদে ছিলেন চট্টগ্রামের এ,বি,এম মহিউদ্দিন চৌধুরী (মরহুম), ফেনীর জয়নাল হাজারী, কুমিল্লার মাইনুল হুদা, সাংবাদিক (মরহুম) শফিকুল আজিজ মুকুল, পটুয়াখালীর এম.এ.রশিদ, শেখ ফজলুল করিম  সেলিম, মোঃ নাসিম ( মরহুম ), আবদুল জলিল ( মরহুম ), আবুল হাসনাত আবদুল্লাহ, মুন্সিগঞ্জের ফজলে এলাহী প্রমুখ। যুব সমাজের দীর্ঘ পরীক্ষিত ও কাঙ্খিত যুবলীগের ঢাকা মহানগর কমিটির সভাপতি পদে মোস্তফা মহসিন মন্টু এবং সাধারণ সম্পাদক পদে কাজী ফিরোজ রশিদ (বর্তমানে জাতীয় পার্টির নেতা) নির্বাচিত হন। 

তৎকালিন ঢাকা মহানগরের ৯টি থানার প্রত্যেকটিতে আহ্ব¦ায়ক কমিটি করা হয়। আহব্বায়ক কমিটির নেতৃত্বে আসেন তেজগাঁও থানায় এডভোকেট সাইদুর রহমান ( মরহুম), রমনায় দুলু, সূত্রাপুর থানায় মাইজ উদ্দিন (মরহুম), কোতোয়ালীতে আক্তার উল আলম (মরহুম ), লালবাগে জয়নাল আবেদীন, মোহাম্মদপুর থানায় কামরুজ্জামান, মিরপুরে হারুন মোল্লা, ডেমরায় ফতেহ উল্লাহ, গুলশানে আবুল হাসেম ভূঁইয়া প্রমুখ। এছাড়া নগর কমিটির গুরুত্বপূর্ণ পদে ছিলেন মগবাজারের মতিউর রহমান মতি, লাবলু, ফজলে এলাহী, কুদরতে এলাহী পনির, তেজগাঁও শিল্প এলাকার শফি, মোখলেসুর রহমান টয়।

বঙ্গবন্ধু সরকারের বিরুদ্ধে পশ্চিমাদের বিশেষ করে সিআইএর ইন্ধনে সৃষ্ট জাসদ ও তথাকথিত গণবাহিনীর লুটপাট, ব্যাংক ডাকাতি, রাজনৈতিক নেতা-কর্মী হত্যার মাধ্যমে দেশব্যাপী ভয়াবহ অরাজগতা সৃষ্টির বিরুদ্ধে জনমত ও জনপ্রতিরোধ গড়ে তোলার শুরুতেই যুবলীগ ঢাকা মহানগরসহ দেশব্যাপী যুব সমাজের প্রিয় সংগঠনে পরিণত হয়। যুবলীগ করতে আগ্রহী হয়ে উঠেন দেশের যুব সমাজ এবং এটা অনেকটা বাঁধভাঙ্গা জোয়ারের মত ধেয়ে আসেন তারা।

১৯৭৪ সালে প্রথম জাতীয় কংগ্রেসের মাধ্যমে শেখ ফজলুল হক মনি ২য় বারের মত চেয়ারম্যান এবং কিশোরগঞ্জের এডভোকেট সৈয়দ আহম্মেদ (মরহুম : ট্যাক্সেস বারের সাবেক সভাপতি) সাধারণ সম্পাদক পদে অধিষ্টিত হন। ঢাকা নগর এবং কেন্দ্রীয় কমিটির অধিকাংশ নেতাই পূর্ব পদে বহাল থেকে দ্বিতীয় মেয়াদে কাজ করেন। 

১৯৭৫ সালের ১৫ই আগস্ট আওয়ামী লীগ এবং যুবলীগ শীর্ষ নেতৃত্বের উপর নেমে আসে ইতিহাসের ভয়াবহ নিমর্ম হত্যাযজ্ঞ। ধানমন্ডির ৩২নং বাড়ীতে সপরিবারে বঙ্গবন্ধু মুজিবকে হত্যা করার পর খুনিরা প্রথমেই আঘাত করে যুবলীগ চেয়ারম্যান শেখ ফজলুল হক মনিকে। ধানমন্ডির ৬নং রোডের বাড়ীতে গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান শেখ মনির অন্ধঃসত্ত্বা স্ত্রী বেগম আরজু মনি এবং গুলিতে প্রায় ঝাঁঝরা শেখ মনিকে নিয়ে ঢাকা মেডিকেলে ছুটে যান শেখ মনির ছোট ভাই শেখ মারুফ , শেখ মনির পিএস কাম ব্যক্তিগত নিরাপত্তা রক্ষী শাহাবুদ্দিন শাহা (যুবলীগের সাবেক কেন্দ্রীয় নেতা)।

শেখ মনির গুলিবিদ্ধ হওয়ার খবর শুনে দ্রুত ঢাকা মেডিকেল ছুটে যান তাঁর অনুজ শেখ সেলিম, তৎকালিন ঢাকা মহানগর সভাপতি মোস্তফা মহসিন মন্টু, তেজগাঁওর সভাপতি এডভোকেট সাইদুর রহমান প্রমুখ। মাত্র ৩৫ বছর বয়সে পৃথিবী থেকে চির বিদায় নেন বিশে^র অন্যতম জনপ্রিয় যুব সংগঠক শেখ ফজলুল হক মনি।

১৯৭৫ সালের এ নির্মম হত্যাকান্ডের পর মূল দল আওয়ামী লীগ সহ অন্যান্য অংঙ্গ সংগঠনে যখন চলছে কঠোর নিস্তব্দতা তখন যুবলীগের কর্মী বাহিনী সারাদেশে কঠোর প্রতিরোধ আন্দোলন শুরু করে। সম্মুখ সমরে নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে নিহত হন বগুড়া জেলা সভাপতি খসরু এবং সাধারণ সম্পাদক রানা সহ বিভিন্ন স্থানে বহু যুবলীগ নেতা কর্মী। প্রেসিডেন্ট জিয়ার নির্দেশে সেনাবাহিনী ধরে নিয়ে নির্যাতন করে হত্যা করে চট্টগ্রাম জেলার সভাপতি মৌলভী সৈয়দ আহম্মেদ এবং ঝিনাইদহের ডঃ আলী হায়দারকে। 

“১০০ বৎসরেও আর আওয়ামী লীগ পূণঃগঠিত হতে পারবে না” খুনিদের এই রণহুংকারকে মিথ্যা প্রমাণিত করে মাত্র কিছু দিন পরই আওয়ামী লীগ পূণঃগঠন ও ঐক্যবদ্ধ করার কাজে হাত দেন সাজেদা চৌধুরী, সাহারা খাতুন (মরহুম), মোঃ হানিফ (সাবেক মেয়র ), সালাহ উদ্দিন ইউসুফ, অধ্যাপক আলী আশরাফ (মরহুম), অধ্যাপক হানিফ (নোয়াখালী), মুন্সিগঞ্জের আনোয়ার চৌধুরী, মাইজ উদ্দিন, এলিফ্যান্টে রোডের লিলি চৌধুরী, সুত্রাপুরের ফজলুল করীম ও হাবিবুর রহমান, মাদারীপুরের মরহুম ইলিয়াস চৌধুরী (দাদা ভাই : বর্তমান যুবলীগ নেতা নিক্সন চৌধুরী এমপি ও লিটন চৌধুরী এমপি’র বাবা ), দিনাজপুরের মরহুম সিরাজুল ইসলাম এমপি। 

তখন ছাত্রলীগকে সুসংগঠিত করেন ওবায়দুল কাদের , র.আ.ম মোক্তাদির চৌধুরী  জাহাঙ্গীর কবির নানক ,মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, খ.ম.জাহাঙ্গীর, রকিবুল ইসলাম (স্টক এক্সচেঞ্জ সাবেক চেয়ারম্যান), এস.এম.ইউসুফ, রাজবাড়ীর শাহ আবু জাফর (বর্তমানে বিএনপির নেতা), তেজগাঁও কলেজের ভিপি আকবর আলী মির্জা প্রমুখ। 

একই সময়ে যুবলীগ পূণঃগঠনে হাত দেন আমির হোসেন আমু, মোস্তফা মহসিন মন্টু, সৈয়দ রেজাউর রহমান, সাংবাদিক শফিকুল আজিজ মুকুল, সাংবাদিক ফকীর আব্দুর রাজ্জাক এবং সার্বিক সহযোগিতাও পরামর্শ দেন শেখ সেলিম, এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরী, আবুল হাসনাত আব্দুল্লাহ প্রমুখ। এজন্য মোস্তফা মহসিন মন্টু তার কেরানীগঞ্জের কালিন্দীর বাড়ীতে প্রায়ই গোপন মিটিং করতেন এবং সরকারের গোয়েন্দা সংস্থা চোখ ফাঁকি দেয়ার জন্য কবর জেয়ারাত করার নামে মাঝে মাঝে আজিমপুর কবরস্থানের ভিতর গোপন বেঠক করেন। শেষ দিকে ২/৩ বার মতিঝিলের ইডেন হোটেল মিটিং করে যুবলীগ পূণঃগঠন করেন। তখন ভারপ্রাপ্ত সভাপতি হিসাবে কিছুদিন দায়িত্ব পালন করেন আমির হোসেন আমু এবং সাধারণ সম্পাদক পদে কুমিল্লার এডভোকেট সৈয়দ রেজাউর রহমান।

১৯৭৮ সালে ২য় জাতীয় কংগ্রেসে পূর্ণাঙ্গ সভাপতি হন আমির হোসেন আমু এবং সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন ফকির আব্দুর রাজ্জাক । এ কমিটির প্রেসিডিয়াম সদস্য পদে ছিলেন সামরিক সরকারের হুলিয়া মাথায় নিয়ে কলকাতা প্রবাসী শেখ সেলিম, আবুল হাসনাত আবদুল্লাহ, এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরী, মোস্তফা মহসিন মন্টু, মোঃ নাসিম, আবদুল কুদ্দুস মাখন এবং গুরুত্বপূর্ণ পদে ছিলেন এডভোকেট সৈয়দ আহম্মেদ, সৈয়দ রেজাউর রহমান, সাংবাদিক (মরহুম) শফিকুল আজিজ মুকুল, ডঃ আলী হায়দার, নূরুল মজিদ হুমায়ুন, ফুলু সরকার, কিশোরগঞ্জের এডভোকেট আফজাল হোসেন প্রমুখ। 

১৯৮৬ সালের ৬ই নভেম্বর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনিস্টিটিউট চত্ত্বরে ৩য় জাতীয় কংগ্রেসে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্বে আসেন যথাক্রমে মোস্তফা মহসিন মন্টু ও ফুলু সরকার। এরশাদ বিরোধী আন্দোলনের সাহসী যোদ্ধাদের সংগঠন যুবলীগের ঢাকা মহানগরের সভাপতি পদে আবুল হাসেম ও সাধারণ সম্পাদক পদে এডভোকেট সাঈদুর রহমান নির্বাচিত হন। ৯০ এর গণ আন্দোলনের অন্যতম নায়ক জাহাঙ্গীর কবীর নানক ছিলেন যুবলীগের তৎকালিন কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক এবং ঢাকা নগর কমিটির আন্দোলন কর্মসূচী পরিকল্পনাকারী ও প্রধান সমন্বয়ক। তার পরিকল্পনা ও তত্ত্বাবধানে ’৯০ এর উত্তাল দিন গুলোতে রাজধানীর রাজপথে যুবলীগ ছিল প্রকৃত লড়াকু সৈনিক। জাহাঙ্গীর কবীর নানক ও এডভোকেট সাঈদুর রহমান এর আবিস্কার সূত্রাপুরের নেতা নূর হোসেন বুকে পিটে, “স্বৈরাচার নিপাত যাক  -গণতন্ত্র মুক্তি পাক” লিখে ’৯০ এর ১০ই নভেম্বর ঢাকা অবরোধ কালে পুলিশের গুলিতে নিহত হয় এবং তার স্মরণে প্রতি বৎসর ১০ই নভেম্বরকে আওয়ামী লীগ ও অন্যান্য সংগঠন “নূর হোসেন দিবস” হিসেবে পালন করে। ঐ দিন গোলাপ শাহ মাজার এলাকায় পুলিশের নির্মম নির্যাতনে মারাত্বক আহত হন তৎকালিন মহানগর যুবলীগ দপ্তর সম্পাদক আব্দুস সাত্তার মাসুদ (বর্তমানে ঢাকা মহানগর অওয়ামী লীগ নেতা ), নূরুল হুদা বাবুল ( লাল ভাই)। এরশাদ বিরোধী আন্দোলনের সময় বোমা বিস্ফোরনে নিহত হয় লালবাগের ইউসুফ সেলিম এবং কার্র্ফুু ভঙ্গ করতে গিয়ে হাতিরপুলে সেনাবাহিনীর গুলিতে নিহত হয় যুবলীগ নেতা দীলু। 

ছাত্রদলের বহিস্কৃত কিছু ক্যাডার ছাত্রলীগে যোগদানকে কেন্দ্র করে ফাস্ট ওয়ার্ল্ড (বৃহত্তর ফরিদপুর গ্রুপ) + সেকেন্ড ওয়ার্ল্ড  (বৃহত্তর বরিশাল গ্রুপ) বনাম থার্ড ওয়ার্ল্ড গ্রুপ (ফরিদপুর + বরিশাল বাদে সমগ্র বাংলাদেশ) ছাত্রলীগের সংঘর্ষে জনপ্রিয় ছাত্রনেতা মনিরুজ্জামান বাদল নিহত হলে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে ছাত্রলীগ ও যুবলীগের কিছু নেতার সাথে যুবলীগ চেয়ারম্যান মোস্তফা মহসিন মন্টুকে  বহিস্কার করে নেত্রী দলে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনেন। একারণে ১৯৯২ সালের জানুয়ারীতে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্বে আসেন নূরুল মজিদ হুমায়ুন ( বর্তমান শিল্পমন্ত্রী )।  ১৯৮৬ সাল থেকে প্রায় ১১ বৎসর যুবলীগের এ কমিটির যুগ্ম সম্পাদক পদে কাজী ইকবাল ও মজিবুল হক মজিব (সাবেক রেলপথ মন্ত্রী ) এবং সাংগঠনিক সম্পাদক পদে জাহাঙ্গীর কবীর নানক দায়িত্ব পালন করেন। 

১৯৯৪ সালের জানুয়ারীতে ৪র্থ জাতীয় কংগ্রেসে  চেয়ারম্যান পদে শেখ ফজলুল করিম সেলিম ও সাধারণ সম্পাদক পদে কাজী ইকবাল , সিনিয়র প্রেসিডিয়াম সদস্য পদে মজিবুল হক মজিব, যুগ্ম সম্পাদক পদে জাহাঙ্গীর কবীর নানক এবং সাংগঠনিক সম্পাদক পদে তরুন সাংসদ মির্জা আজম এম.পি নির্বাচিত হন। অল্প কিছু সংখ্যক বাদে অধিকাংশ কেন্দ্রীয় ও নগর নেতা অবারও যুবলীগে বহাল থাকেন।

২০০৩ সালের ২৩ শে জানুয়ারী ৫ম কংগ্রেস এর মাধ্যমে চেয়ারম্যান পদে  জাহাঙ্গীর কবীর নানক ও সাধারণ সম্পাদক মির্জা আজম এম.পি দায়িত্ব গ্রহণ করেন। এ কমিটির প্রেসিডিয়াম সদস্য পদে ডঃ মিজানুর রহমান, শেখ মারুফ, এডভোকেট সাঈদুর রহমান, ওমর ফারুক, জাহাঙ্গীর কবীর রানা, শহীদ সেরনিয়াবাত, হারুনুর রশিদ, আলতাফ হোসেন বাচ্চু, চয়ন ইসলাম, যুগ্ম সম্পাদক পদে মজিবুর রহমান চৌধুরী, এডভোকেট নজিবুল্লাহ হীরু , ফারুক হোসেন, সাংগঠনিক সম্পাদক পদে ৯০'র ছাত্র-গণ অভ্যুত্থানের অন্যতম ছাত্রনেতা আতাউর রহমান আতা, এডভোকেট বেলাল হোসেন, মঞ্জুরুল আলম শাহীন, আব্দুস সাত্তার মাসুদ, মাহবুবুর রহমান হীরণ, এডভোকেট মামুনুর রশীদ, এনায়েত কবীর চঞ্চল, অর্থ সম্পাদক পদে আবুল হাসেম, দপ্তর সম্পাদক পদে অধ্যাপক আমজাদ হোসেন, আইন সম্পাদক পদে এডভোকেট জাহিদ হোসেন সহ ছাত্র আন্দোলনের গৌরব উজ্জল ইতিহাস সমৃদ্ধ এক ঝাঁক সাহসী যুবককের অংশ গ্রহনে সমৃদ্ধ যুবলীগ তৈরী হয়। 

২০১২ সালের ৬ষ্ঠ কংগ্রেস এর মাধ্যমে চেয়ারম্যান পদে মোহাম্মদ ওমর ফারুক চৌধুরী এবং সাধারণ সম্পাদক পদে মোঃ হারুনুর রশিদ দায়িত্বে আসেন।

এ কমিটির গুরুত্বপূর্ণ পদে ছিলেন ডঃ মিজানুর রহমান, শেখ মারুফ, জাহাঙ্গীর কবীর রানা, শহীদ সেরনিয়াবাত, আলতাফ হোসেন বাচ্চু, চয়ন ইসলাম, মজিবুর রহমান চৌধুরী, এডভোকেট নজিবুল্লাহ হীরু , ফারুক হোসেন, আতাউর রহমান আতা, এডভোকেট বেলাল হোসেন, আব্দুস সাত্তার মাসুদ, মাহবুবুর রহমান হীরণ, , অধ্যাপক আমজাদ হোসেন, এডভোকেট জাহিদ হোসেন , মঞ্জুরুল আলম শাহীন , এডভোকেট মামুনুর রশীদ , মহি উদ্দিন মহি ,  সুব্রত পাল , বদি উল ইসলাম বদি সহ ছাত্র আন্দোলনের গৌরব উজ্জল ইতিহাস সমৃদ্ধ এক ঝাঁক সাহসী যুবক। 

২৩ নভম্বের, ২০১৯ ইং তারখিে ইঞ্জনিয়র্িাস ইন্সটটিউিটে যুবলীগরে সপ্তম জাতীয় কংগ্রসেরে দ্বতিীয় সভায় চয়োরম্যান হসিবেে  দায়িত্বে আসেন প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান শেখ ফজলুল হক মনির জেষ্ঠ সন্তান যুক্তরাষ্ট্ররে কলোরাডো ইউনভর্িাসটিি থকেে পএিইচডি ডিগ্রিধারী অধ্যাপক  শখে ফজলে শামস্ পরশ এবং সাধারন সম্পাদক পদে আসেন রাজপথের লড়াকু সেনিক আলহাজ্ব মো: মাইনুল হোসনে খান নখিলি। 

বর্তমান কমিটিতে কাজ করছেন বহু ডাক্তার , প্রকৌশলী, আইনজীবি , কলেজ ও বিশ^বিদ্যালয়ের শিক্ষক , জাতীয় ও আর্ন্তজাতিক স্বনামধন্য বিভিন্ন পেশাজীবি সহ সাবেক ছাত্রলীগ নেতাদের একটা বড় গ্রুপ। তাদের সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় যুবলীগ এখন ” মানবিক যুবলীগ” নামে দেশ বিদেশে সুনাম অর্জন করেছে। জাতির জনকের স্বপ্ন বাস্তবায়নের জন্য জন বান্ধব নেতা-কর্মী তৈরীর অন্যতম পাদপীঠ যুবলীগের সাবেক নেতারাই এখন দেশব্যাপী স্বাধীনতার স্বপক্ষ শক্তির নেতৃত্ব প্রদানের মাধ্যমে জাতির নির্ভরতার শেষ ঠিকানা জননেত্রী শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করছেন।

লেখক ঃ অধ্যাপক জাহাঙ্গীর আলম ,কার্যনির্বাহী সদস্য,যুবলীগ কেন্দ্রীয় কমিটি