নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ থানার সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) মো.রুবেল মিয়ার বিরুদ্ধে মো.সুজন নামে এক যুবককে আটকের নাটক সাজিয়ে টাকা আদায়ের অভিযোগ উঠেছে। গত রোববার (৩০ অক্টোবর) দুপুরে উপজেলা আইন শৃঙ্খলা কমিটির মাসিক সভায় ভুক্তভোগীর বরাত দিয়ে এমন অভিযোগ করেন সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের ভাগনে উপজেলার রামপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়াম্যান সিরাজীস সালেকিন রিমন। সরেজমিন ঘটনাস্থলে গেলে অভিযোগের সত্যতা মেলে।ভুক্তভোগী মো.সুজন (২৯) উপজেলার রামপুর ইউনিয়নের ২নম্বর ওয়ার্ডের হালিম স্বর্ণকার বাড়ির মৃত মো.হানিফের ছেলে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সুজন উপজেলার রামপুর ইউনিয়নের বাসিন্দা। দুই মাস আগে সে নিজের দোকান বিক্রি করে দেয়। বর্তমানে সে বেকার জীবন যাপন করছে। গত শুক্রবার (২৮ অক্টোবর) রাত ৩টার দিকে রাত্রিকালীন ডিউটি পালনকালে কোম্পানীগঞ্জ থানার সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) মো.রুবেল মিয়া নেতৃত্বে টহল পুলিশের একটি দল উপজেলার বামনী বাজার থেকে সুজনকে মাদক সম্পৃক্ততার অভিযোগে আটক করে। এরপর ঘটনাস্থলে তাকে ছেড়ে দিতে ১০হাজার টাকা দাবি করে। ভুক্তভোগী ৫হাজার টাকা দিতে সম্মতি প্রকাশ করলেও তাকে ১০হাজার টাকা আদায় করার জন্য ছাড়া হয়নি। এরপর শুক্রবার দুপুর ১২টার দিকে এএসআই রুবেল রামপুর ইউনিয়নে তার স্থানীয় সোর্স ইমরান মধ্যস্থতায় ১৫হাজার ৫শত টাকা আদায় করে সুজনের স্ত্রী,বড় ভাই ও মামার কাছ থেকে।
ভিকটিমের বড় ভাই সিএনজি চালক মো.শাকিল অভিযোগ করে বলেন, ছোট ভাইকে ছাড়াতে থানায় গেলে এএসআই রুবেল তার থেকে ৫শত টাকা আদায় করে। ১৫হাজার ৫শত টাকা আদায়ের পর সুজনকে গত শুক্রবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার নির্দেশে থানা থেকে দেওয়া হয়।
ভুক্তভোগী সুজন অভিযোগ করে বলেন, এএসআই রুবেল মিয়া তার বসত ঘরে ৫গ্রাম গাঁজা পেয়ে মুঠোফোনে ভিডিও ধারণ করে। এরপর তাকে আটক করে ১০হাজার টাকা দাবি করে। ৫হাজার টাকা দিতে চাইলে থানায় নিয়ে যায়। পরে থানার সোর্স ইমরান ও এএসআই রুবেল মাদক মামলার ভয় দেখিয়ে দ্ইু দফায় আমার স্ত্রী,বড় ভাই শাকিল ও মামা জুয়েলের থেকে ১৫হাজার ৫শত টাকা আদায় করে। আমার স্ত্রী সুদের উপর ১৫হাজার টাকা নিয়ে এএসআই রতনকে দিতে বাধ্য হয়।
বিশ্বস্ত সূত্রে জানা যায়, ওই পুলিশ কর্মকর্তা ভিকটিমের বসত ঘরে ৫গ্রাম গাঁজা পায়। ওই গাঁজা উদ্ধারের একটি ভিডিও চিত্র পুলিশ কর্মকর্তা তার মুঠোফোনে ধারণ করে রাখে। পরে তাকে আটকের নাটক সাজিয়ে থানায় নিয়ে মাদক মামলার ভয় দেখিয়ে টাকা আদায় করে।
এ বিষয়ে জানতে একাধিকবার অভিযুক্ত কোম্পানীগঞ্জ থানার সহকারী উপ-পরিদর্শক মো.রুবেল মিয়ার মুঠোফোনে কল করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি। তাই এ বিষয়ে তার কোন বক্তব্য পাওয়া যায়নি। অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে কোম্পানীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো.সাদেকুর রহমান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন,বিষয়টি আমি সমাধান করে দিয়েছি। অপর এক প্রশ্নের জবাবে ওসি বলেন,ওই অফিসারকে বদলি করে দিয়েছি।