সাভার (ঢাকা): উচ্চ মাধ্যমিক শেষ করে লেখাপড়ার পাশাপাশি ২০১৮ সালে সোনালি মুরগি পালতে শুরু করেন তাবিন। ২০০ মুরগি নিয়ে পরীক্ষামূলকভাবে খামার শুরু করেন তিনি।এতে লাভ হওয়ায় ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে মুরগির সংখ্যা। আজ তার খামারে সোনালি মুরগির সংখ্যা ২৮০০।
এ মুরগি পালন করে তাবিন নিজের হাত খরচের পাশাপাশি পরিবারের খরচও মেটাচ্ছেন। এছাড়া তার মুরগির খামার দেখে আশপাশের অনেক তরুণই খামার করতে আগ্রহী হয়ে উঠছেন।
ঢাকার সাভার উপজেলার সাদাপুর এলাকায় সোনালি মুরগির খামার গড়ে তুলেছেন তাবিন। ওই খামারে গিয়ে কথা হয় তাবিনের সঙ্গে।
তাবিন বাংলানিউজকে জানান, তার বড় ভাই ইকবাল ও তার ইচ্ছা ছিল, কোনো চাকরি করবেন না বা চাকরির জন্য কারো কাছে যাবেন না। সেই ভাবনা থেকে বড় ভাই গরুর খামার এবং ছোটো ভাই মুরগির খামার করেছেন। প্রথমে মাত্র কয়েকটি মুরগি নিয়ে একটি খামার করেন। নিজেদের জমিতে পরে বড় করে একটি সেড তৈরি করেন এবং ধীরে ধীরে সেই খামারে মুরগির সংখ্যা দাঁড়ায় ২৮০০।
তিনি আরও জানান, প্রথমে দু’দিনের মুরগির বাচ্চা কিনে আনেন। পরে বাচ্চাগুলোকে এক থেকে সাতদিনের মাথায় রানীক্ষেত রোগের ওষুধ দিতে হয়। আবার ১০ থেকে ১৫ দিনের মাথায় ওষুধ দিতে হয়। এছাড়া মুরগির বাচ্চার বাজারমূল্য প্রায় ১৫ টাকা পিস। বাচ্চা মুরগি প্রায় ৬৫ দিন থেকে ৭০ দিন পালন করলে ৮০০ গ্রাম থেকে এক কেজি ওজনের হয়ে থাকে। যাতে খরচ হয় ১৩০ টাকা থেকে ১৪০ টাকা পর্যন্ত। সেই মুরগি অধিকাংশ সময় পাইকারি ১৫০ থেকে ১৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করেন। খুরচা বাজারে এ মুরগির দাম ২১০ টাকা থেকে ২৩০ টাকা পর্যন্ত। তিনি বছরে দুই থেকে তিনবার মুরগির চালান তুলে থাকেন।
তাবিন বলেন, আমার টিনসেড খামারটিতে মাত্র ২৮০০ মুরগি রয়েছে। সহজ শর্তে কোনো ব্যাংক-বীমা কিংবা সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ঋণ দিলে আগামীতে খামারটি বড় করতে চাই।
তাবিনের সাফল্য দেখে আশপাশের বেকার যুবকরা সোনালি জাতের মুরগি পালন শুরু করেছেন। তাবিন বলেন, চাকরি নামের সোনার হরিণের পেছনে না ঘুরে সোনালি মুরগি চাষ করে স্বাবলম্বী হওয়া সম্ভব। সোনার হরিণ চাকরির চেয়ে সোনালি মুরগি পালা ভালো। এতে বেকারত্ব ঘুচবে এবং আর্থিকভাবে লাভবান হওয়া যায়।
তিনি শিক্ষিত বেকার যুবকদের সোনালি মুরগি চাষ করার আহ্বান জানান।
সাভার উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মোহাম্মদ ফজলে রাব্বী মণ্ডল বলেন, অনেকেই সোনালি মুরগির খামার করে সফল হয়েছেন। দেশের মুরগির মাংসের মোট লক্ষ্যমাত্রার সিংহভাগই সোনালি মুরগি থেকে আসছে। আশা করছি, আগামীতে এর পরিধি আরো বাড়বে।