ঢাকা, শুক্রবার ২৯ই মার্চ ২০২৪ , বাংলা - 

ভোলার মুর্তিমান এক আতঙ্কের নাম স্বপন

চৌধুরী আনিসুর রহমানঃ

2022-07-09, 12.00 AM
ভোলার মুর্তিমান এক আতঙ্কের নাম স্বপন

ভোলার ত্রাস ও অদৃশ্য শক্তির নাম স্বপন চেয়ারম্যান। ভোলার চরে জেগে ওঠা সরকারী-বেসরকারি ২৬ হাজার ৯শ একর চর দখল করে নিয়েছেন এই চেয়ারম্যান। বর্তমানে তিনি শত শত কোটি টাকার মালিক। দুদকের ভয়ে বেশির ভাগ এক্যাউন্টই করেছেন তার ভাই, বোন, ভাগিনা, ভাগ্নীদের নামে ও বেনামে। ভোলা সদর উপজেলার দক্ষিণ দিঘলদী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ইফতারুল হাসান (স্বপন) ও তার সিন্ডিকেটের দুর্নীতি-অনিয়ম, জুলুম নিপীড়ন ও নারী নির্যাতনের কাছে ইউনিয়নসহ পার্শ্ববর্তী হাজারো মানুষ জিম্মি হয়ে আছে। সাংবাদিক পেটানো থেকে শুরু করে হেন অন্যায় নেই যে তিনি করেননা। স্বপন চেয়ারম্যানের ভয়ে ভোলার সাংবাদিকরাও নির্বিকার। তার ভয়ে কেউ মুখ খুলতে সাহস পায় না। গত ৪/৮/২০২১ ইং তারিখে ভোলার দুই সাংবাদিক ফরিদুল ইসলাম ও দাউদ ইব্রাহিমকে অপহরণ করে তুলে নিয়ে দিনভর নির্মম নির্যাতন চালিয়ে মিথ্যা চাঁদাবাজির মামলা দিয়ে ওই দুই সাংবাদিককে প্রায় দুই মাস জেল খাটায় এই প্রভাবশালী চেয়ারম্যান। বিচার দাবিতে ঢাকার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।

 

হাজারো অন্যায়ের পর এক অদৃশ্য শক্তির দোহাই দিয়ে পার পেয়ে যাচ্ছেন ৫৬ বছর বয়সী অবিবাহিত নারী লোভী এই চেয়ারম্যান। তার ছোট ভাই-বোন সবাই বিবাহ করলেও আজো তিনি বিয়ে করেননি। গ্রামের সুন্দরী মেয়েদের তলব, চাকুরী দেওয়ার নামে তরুণীদের জিম্মি করে তাদের সাথে যৌন মেলামেশা ও আমোদ প্রমোদসহ এমন কোন ছোট অপরাধও নেই যা তিনি করেন না। কিন্তু শত অন্যায় করেও তিনি পার পেয়ে যাচ্ছেন এক অদৃশ্য শক্তির জোড়ে।

 

তদন্ত সাপেক্ষে স্বপন চেয়ারম্যানের অপরাধের কিছু অংশের বর্ণনা এবং ভুক্তভোহীদের নাম ও ঠিকানা তুলে ধরা হলোঃ

 

বাগমারাসহ বিভিন্ন চরে ভূমি দখল ও বাণিজ্যঃ

 তেঁতুলিয়া নদী ভোলার শেষ সীমানা এবং বোরহানউদ্দিন উপজেলার অর্ন্তগত সীমান্তবর্তী নাজিরপুর  চরে ১৫শ একর, পাতাবুনিয়ার চর ২ হাজার একর জমি, ভাসান চর ৩ হাজার একর, কেরামনিয়া চর ১৭শ একর, গাজীর চর ১৭শ একর, ভেলুমিয়ার চর ৭শ একর, চর হোসেন ৪ হাজার একর, কেলাগাছিয়া চর ২ হাজার একর, ধুলিয়া চর ৮শ একর, রাবেয়ার চর ২ হাজার একর, বয়ার চর ১৮শ একর, তাবলীগের চর ১৫শ একর, ইউনুছ মিয়ার চর ২ হাজার একর, ট্যারগার চর ২২শ একর, পশ্চিমে বাউফলসহ জেগে ওঠা সরকারী-বেসরকারি প্রায় ২৬ হাজার ৯শ একর চর দখল করে নিয়েছেন চেয়ারম্যান। এসব চর থেকে বছর প্রতি ১০ থেকে ১২ কোটি টাকা কামিয়ে নিচ্ছেন। শুধু সরকারী জমি-ই নয়, তিনি বিভিন্ন ব্যক্তি মালিকানাধীন জমির উপরও খবরদারী করছেন। কৃষকদের থেকে টাকা নিয়েও ওই জমিতে চাষাবাদ করতে দিচ্ছেন না। চরের মধ্যে যারা গরু-মহিষ পালন করছে, তাদের কাছ থেকেও তিনি চাঁদা নিচ্ছেন। গরু মহিষের জন্য ঘাস নিতে হলেও তাকে চাঁদা দিতে হয়। চাঁদা নিয়েও তিনি ক্ষ্যান্ত হন না, মাঝে মধ্যে কৃষকদের গরু-মহিষ ডাকাতি করে নিয়ে যান।

 

স্বপন চেয়ারম্যান এর চাকুরীর নামে অর্থ বাণিজ্য ও প্রতারণা ঃ

 স্বপন চেয়ারম্যান চাকুরীর নামে প্রায় শতাধিক যুবক যুবতির কাছ থেকে ৩ লাখ, ৫ লাখ, ৭ লাখ করে টাকা নিয়ে কাউাকে আর চাকুরী দেননি, টাকাও ফেরত দেয়নি। আবার অনেক সুন্দরী যুবতিদের চাকুরীর প্রলোভনে দিনের পর দিন তো ভোগ করে আসছেই।

 

 দক্ষিণ দিঘলদী ০১ নং ওয়ার্ডের টনি বাড়ীর ইসমাইল এর ছেলে নাজিম উদ্দিন লিংকন কে ঈদগাহ সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পিয়ন পদে চাকুরী দেওয়ার নামে ৩ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে স্বপন চেয়ারম্যান। টাকার শোকে লিংকনের পিতা ইসমাইল মারা গিয়েছেন। লিংকনের মাতা শাহানাজ বেগম, ০১৭৫১১২৩১৪০৭।

 উত্তর দিঘলদী আওয়ামী লীগের নির্যাতিত কর্মী আজাদ এর স্ত্রী জান্নাত বেগম কে ফ্যামিলি প্লানের চাকুরী দেওয়ার নামে ২ লক্ষ ৭০ হাজার টাকা হাতিয়ে নিয়েছে স্বপন চেয়ারম্যান। আজাদ, মোবাইল নংঃ ০১৭২৫৪২১৯৫৪।

 দক্ষিণ দিঘলদী ৯ নং ওয়ার্ডের আবদুল হকের ছেলে মনিরকে হর্নি সরকারী প্রাঃ বিদ্যালয়ের পিয়ন পদে চাকুরী দেওয়ার নামে ১ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। আবদুল হক, মোবাইল নংঃ ০১৭৫২২৪৯৯৩১৮।

 

 দক্ষিণ দিঘলদী ৭ নং ওয়ার্ডের নকুল এর ছেলে সাগর কে পুলিশের চাকুরী দেওয়ার নামে ৩ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। টাকার শোকে নকুল স্ট্রক করে অসুস্থ হয়ে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছে। নকুল, মোবাইল নংঃ ০১৭১৮১৬১১১৩।

 

 ভেলুমিয়ার কবির এর ছেলে হাসান কে পুলিশে চাকুরী দেওয়ার কথা বলে সেলিম মেম্বার এর মাধ্যমে ৭ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। কবিরঃ ০১৭৪০-৭৭৫৮৪২।

 দক্ষিণ দিঘলদী ২ নং ওয়ার্ডের ফারুকের ছেলে এমদাদকে মধ্য পশ্চিম বালিয়া দাখিল মাদ্রাসায় নিরাপত্তা কর্মী পদে চাকুরী দেওয়ার নামে তার কাছ থেকে ৩ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়ে চাকুরীও দেয়নি টাকাও ফেরত দেয়নি। সেখানে আয়া পদে রুমা বেগম এর কাছ থেকে ৩ লাখ এবং নিরপত্তাকর্মী পদে রায়হান কাছ থেকে ৩ লাখ টাকা নিয়ে তাদেরকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। এক ওই পদে কোড়ালিয়া দাখিল মাদ্রাসায় রাকিব ও শাহানাজ এর কাছ থেকে ৩ লাখ টাকা করে নিয়ে তাদেরকে ঐ পদে নিয়োগ দেওয়া  হয়েছে।

 

খায়ের হাট বাজারে জমি দখলঃ

 খায়ের হাট বাজারে সরকারী ও মালিকানা জমি দখল করে অবৈধভাবে বহুতল ভবন নির্মাণ করে মার্কেট  তৈরি এবং আইচ প্লান্ট স্থাপন করেছেন। ঐ বাজারে কাসেম প্রভাষকের মার্কেট ভবনে রুপালী ব্যাংক থাকা অবস্থায় প্রভাব খাটিয়ে স্বপন চেয়াম্যানের নির্মিত নতুন ভবনে রূপালী ব্যাংক স্থানান্তর করে নিয়েছেন। অপরদিকে কাশেম প্রফেসর এর গাড়ি ঘাটার আইস প্লান্ট জোর পূর্বক বন্ধ করে দিয়েছেন। তার হাই কোটে মামলা চলমান থাকা অবস্থায় প্রায় কোটি টাকার মূল্যের জমি জবর দখল করে রেখেছেন। বর্তমানে নিঃস্ব প্রায়। কাসেম প্রফেসরঃ ০১৭১৫-০৪৫৭৬৩

 

 খায়ের হাট বাজারে নিরব কবিরাজ, কাদের ফকির, ছিডু সর্দার ও লিটন মেম্বারের ঘর জোড় করে ভেঙ্গে দিয়ে সেখানে আইচ প্লান্ট স্থাপন করেছেন স্বপন চেয়ারম্যান।

নিরব কবিরাজঃ ০১৭১৩-৯৫৯৬১৪। কাদের ফকিরঃ ০১৭৭৯-৬২৭২৮২।

 

দক্ষিণ দিঘলদী/ বাংলাবাজারসহ পার্শবর্তী ইউনিয়নের জমি জবর দখলঃ

 দক্ষিণ দিঘলদী এবং বাংলাবাজারে বিভিন্ন দরবারকৃত জমির ভূয়া মালিকানা ও ভুয়া কাগজপত্র তৈরী করে পক্ষ থেকে মোটা অংকের টাকা নিয়ে প্রকৃত মালিক পক্ষকে জমি থেকে বেদখল করে রাখে। প্রকৃত মালিক পক্ষ চেয়াম্যান এর সাথে যোগাযোগ করলে তাদের কাছে মোটা অংকের টাকা দাবি করে।

 

 দক্ষিণ জয়নগর ১ নং ওয়ার্ডের টিন ওয়ালা মিয়ানুদ্দিন বাড়ীর মফিজের ২০ শতাংশ জমি প্রতি পক্ষের সাথে দ্বন্দ্বের সুযোগ নিয়ে তার কাছে ৫০ হাজার টাকা দাবী করে। টাকা না পেয়ে ঐ জমি পরিত্যাক্ত ঘোষনা করে বেদখল করে রেখেছে চেয়ারম্যান। মফিজ ঃ ০১৬২৩-১৩৬৮১৬।

 

 দক্ষিণ দিঘলদী শান্তির হাট বাজার ইলিয়াছদের জমি নিয়ে অন্যের সাথে বিরোধ থাকায় দীর্ঘ বছরের তৈরি মার্কেট ভেঙ্গে দেয়। মামুন মেম্বারের মাধ্যমে ইলিয়াছের কাছ থেকে ১ লাখ টাকা নিয়ে তার বিপক্ষে অবস্থান নেন চেয়ারম্যান। ইলিয়াছ ঃ ০১৭৯৯-০৯৫৭১৪।

 

 টেরকার চরের ৪০ একর জমির মালিক টুমেন চৌধুরী । তার জমি দীর্ঘ বছর ধরে স্বপন চেয়ারম্যান  জবর দখল করে রেখেছেন। টুমেন চৌধুরীঃ ০১৭৪৮-৯২৪৫৪৩।

 বাংলাবাজার দক্ষিণ পাশে গফুর সিকদার মসজিদের পশ্চিম পাশে জয়নাল মেম্বারের ভাগ্নে মাসুদ রানার ২২ শতাংশ জমি জবর দখলে নিয়ে যায় চেয়ারম্যান। মাসুদ রানার ঃ ০১৭২৩-৯৭৭৩৬৬।

 

 দক্ষিণ দিঘলদী ৩ নং ওয়ার্ড বটতলা বাজারের  সৌদি প্রবাসি আলী আকবরের ৫৩৪ নং খতিয়ান এবং ১৪৩৩ নং দাগের ১ একর জমি জবর দখল করে রেখেছে চেয়ারম্যান। অপরদিকে নাজমুল কাজির কাছ থেকে ৬ লক্ষ টাকা নিয়ে আকবরের জমি দখল করে ঘর নির্মান করে দেয়। আকবর ঃ ০০৯৬৬৫০০৭৬৩৬৮২।

 

দক্ষিণ দিঘলদী ৯ নং ওয়ার্ডের খন্দকার বাড়ীর মৃত  লুতফর রহমানের ৯ শতাংশ জমি জবর দখল করে নিয়েছে স্বপন চেয়ারম্যান। জমি ফেরত চাওয়ায় চেয়ারম্যান তাকে হুমকি দিয়ে দেশ ছাড়া করে রেখেছেন। লুতফর এর স্ত্রী ফাতেমা বেগমঃ ০১৭৫৬-১২৪৩৩৮।

 

 দক্ষিণ দিঘলদী ১ নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা সৈয়দ মাল ও ছিদ্দিকের সাথে বিরোধ থাকায় ভুয়া কাগজ পত্র  দেখিয়ে মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে দক্ষিণ জয়নগর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক জসিম এর ২০ শতাংশ জমি, সিরাজ মালের ১৬ শতাংশ জমি, নুরুল ইসলাম মালের ১০ শতাংশ জমি ও খলিল কাজীর ১০ শতাংশ জমি জবর দখল করে নিয়েছেন স্বপন চেয়ারম্যান।

জসিম স্যারঃ ০১৭২১-০৪৮৭৫৮, সিরাজ মালঃ ০১৭২৯৮৭৪৬০৭

 

 দক্ষিণ দিঘলদী ১ নং ওয়ার্ডের কাজী বাড়ির মিলন কাজীর বাগানসহ ১ একর জমি বাচ্চু কাজীর কাছ থেকে টাকা নিয়ে ঐ জমি জবর দখল করে দেয়। মিলন কাজীঃ ০১৭২৮-৭৪৮৫৮২।

 

 দক্ষিণ দিঘলদী ইউনিয়নের ৬ নং ওয়ার্ডের নজরুলের জমি জবর দখল করে ঘর ভেঙ্গে দিয়ে আক্তারের কাছ  থেকে মোটা অংকের টাকা নিয়ে ঐ জমি আক্তারকে দেওয়া হয়েছে। নজরুলঃ ০১৭৫৮৯২৯০৩৯।

 

বিভিন্ন চরে বিভিন্ন ব্যক্তিদের শত শত একর জমি জবর দখলঃ

 বাগমারাসহ জেগে উঠা চরে শত শত মানুষের জমি দীর্ঘ বছর ধরে শত শত একর জমি জবর দখল করে রেখেছে স্বপন চেয়ারম্যান। এ সব মানুষ ভয়ে মুখ খুলছে না । আবার তোফায়েল আহমেদ এর কাছে বিচার দিয়েও কোন প্রতিকার না পেয়ে তারা এখন পথে পথে ঘুরে বেড়াচ্ছে।

 

 উত্তর জয়নগরের ৫ নং ওয়ার্ডের কামাল ও হুমায়ুন এর ভেলুমিয়া চরের ৩৮ একর জমি চেয়ারম্যান জবর দখল করে নিয়েছেন। কামাল ও হুমায়ুন ভোলা জেলা প্রশাসক, জেলা পুলিশ সুপারসহ বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দিয়েও বিচার পাননি।

কামাল হোসেন, ০১৭১১৮৭১৪৬১, হুমায়ুনঃ ০১৭৬৭২৮১৭৩২।

 

 টেরকার চর ও পাতাবুনিয়ার চরে বাটামারার কাঞ্চন মাস্টারের জমি জবর দখল করে নিয়েছে স্বপন চেয়ারম্যান। কাঞ্চন মাস্টারঃ ০১৭৫৩-৯১১৬১০।

 

 দক্ষিণ দিঘলদী বটতলা বাজারে নাগর মাস্টারের জমি জবর দখল করে মার্কেট নির্মাণে কাজ চালাচ্ছেন স্বপন চেয়ারম্যান।

 

দক্ষিন দিঘলদীর বাসীন্দা মোস্তফা কামালের বাঘমারা চরে ৫ একর জমি জবর দখল করে নিয়েছেন স্বপন চেয়ারম্যান। বহু দেনদরবার করেও এখন  পর্যন্ত জমি উদ্ধার করতে  পারেনি।

 মোস্তফা কামাল মোবাইলঃ

 

চরলতিফ/টেকরার চরে সরকারী ও মালিকানা জমির মাটি বিক্রিঃ

 চরলতিফ/টেকরার চরে সরকারি কেল্লা ও মালিকানা জমি দখল করে ড্রেজার দিয়ে মাটি কেটে ঢাকার বিভিন্ন ইট ভাটার মালিকদের কাছে বিক্রি করে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন স্বপন চেয়ারম্যান। চরে প্রতিটি কিল্লার মূল্য প্রায় ৬ কোটি টাকা।

 

 দক্ষিণ দিঘলদী ৯নং ওয়ার্ডের আলীছুন মুন্সি ও ১নং ওয়ার্ডের নিরব সিকদারের জমি জবর দখল করে ঢাকার ইট ভাটার ব্যাবসায়ীদের কাছে মাটি বিক্রি করে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন।

আলীছুন মুন্সিঃ ০১৭৪৯-২৪২৬৮৩। নিরব সিকদারঃ ০১৭১২-৯৪৬১৬৬।

 

 গঙ্গাপুরের মাওলানা মাহাবুবের টেরকার ও পাতাবুনিয়ার চরের জমি জবর দখল করে মাটি কেটে বিক্রি দিয়েছে স্বপন চেয়ারম্যান। মাহাবুব মাওলানার ভাইঃ ০১৭৪৯২৪২৬৬৩।

 

বাঘমারাসহ বিভিন্ন চরে ঘাস বিক্রিঃ

 চরকুঞ্জ, বাঘমারা চর, চরশ্রীনাথ দাস রেকর্ডীয় জমি জবর দখল করে গরু মহিষের ঘাস বিক্রি করার জন্য লগ্নি বাবদ প্রতি বছর প্রায় ১ কোটি ৫০ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন স্বপন চেয়ারম্যান। দক্ষিন দিঘলদীর জামাল মাতাব্বর ও ইব্রাহিম মাতাব্বর সহ কয়েকজনের মাধ্যমে এসব ঘাস বিক্রি করেন। ঘাস ক্রয়কারীঃ দক্ষিন দিঘলদীর আল আমিন ঃ ০১৭২৩৫২২০০৬, রুহুল আমীনঃ ০১৭৫৬৯৪০৮৯০, কয়ছর মাতাব্বরঃ ০১৭৭৬১৩৯৬১৮, রাশেদঃ ০১৭২২-০৫১৬৮৬, মিজানঃ ০১৭৬২-০৬৭৬৬১, ফখরুলঃ ০১৭২৩-২৬৫৪১০, সুলায়মানঃ ০১৭২১-৮৩৩৪১৫, কাশেমঃ ০১৩১৬-১৮৩১১৯, রুবেলঃ ০১৭০৫-৫৩৫৬০৪, নিরবঃ ০১৭৩৪-৭৭০০২১, সেলিমঃ ০১৭৯৮-৬৩৩০৮৬।

চরে টাকার বিনিময়ে গরু মহিষ পালনঃ

বাঘমারা সহ বিভিন্ন চরে গরু মহিষ পালন করতে হলে স্বপন চেয়ারম্যানকে প্রতিমাসে জোড়া প্রতি ১৪,০০ টাকা করে দিতে হয়। চরে প্রায় ৩ হাজার জোড়া মহিষ রয়েছে।

 

বাঘমারা, চরলতিফ/টেরকার চরে তরমুজ চাষিদের কাছে জমি লগ্নিঃ

 

বাঘমারা, চরলতিফ/টেরকার চরের তরমুজ চাষিদের কাছে কানি প্রতি ২০ হাজার টাকা করে জমি লগ্নি বাবদ লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন স্বপন চেয়ারম্যান। ইব্রাহিম মাতাব্বর, জামাল মাতাব্বর এর মাধ্যমে টাকা নিয়ে থাকেন।

 লিটন এর কাছে ২০০ কানি, রাসেল হাওলাদার এর কাছে ৩৫ কানি, নুরুল ইসলাম ঢালীলর কাছে ৪০ কানি, আলী আজগর এর কাছে ৪০ কানি, মোঃ শফিক এর কাছে ৩০ কানি, আফজাল এর কাছে ৪০ কানি সহ প্রায় শতাধিক তরমুজ চাষিদের কাছে শত শত একর জমি লগ্নি করে লাখ লাখ টাকা উত্তোলন করা হয়। চর লতিফ নিয়ন্ত্রন করছেন রুবেল চৌকিদার, বাঘমারার চর, ভেদুরিয়ার ফরিদ মেম্বার। ইব্রাহিম মাতাব্বরঃ ০১৭০৩৩৩৩৩৪৭, জামাল মাতাব্বরঃ ০১৭৪৮-৬১৭৫৫৪ এরা দুইজন চেয়ারম্যান এরপ্রতিনিধি। এরা চরে লগ্নির দয়িত্বে নিয়োজিত রয়েছে। রুবেল চৌকিদারঃ ০১৭২৪-০০০৫৬০৪, ফরিদ মেম্বারঃ ০১৭২১৮৭৪১৬৫ এই দুইজন এর নেতৃত্বে তরমুজ চাষাদের কাছ থেকে টাকা তোলা হয়।

 

 তরমুজ চাষীদের মোবাইলঃ লিটন ০১৭১৩৯৩৩২১২, রাসেল হাওলাদারঃ ০১৭৩৯২২৬৯৯৫, নুরুল ইসলাম ঢালীঃ ০১৭২৪৯৬০১৪৮, আলী আসগরঃ ০১৭৩০৬৮৬৪০৫, শফিক ০১৭১৩৯৫৩০৭২, আফজালঃ ০১৭১০৭৮১১৩৬।

 

এদের মধ্যে চরফ্যাশনের রুবেল চৌকিদারের কাছ থেকে ৩ মাসের জন্য ১২ লাখ টাকা স্বপন চেয়ারম্যান নিয়েছেন।

স্বপন চেয়ারম্যান কর্তৃক বাঘমারার চরের চাষাঃ

 হানিফ, মোশারেফ, ইউসুফ, মেহেদী, হোসেন, সজিব। এরা স্বপন চেয়ারম্যান এর জবর দখলীয় জমির চাষা। এদেরকে জিজ্ঞাসাবাদ করলেই জমির রহস্য বেরিয়ে আসবে।

মোশারেফঃ ০১৭৭৯-৩৯৯৩২৪, ইউসুফঃ ০১৭৬৮-৬৬৭০৮৪, মেহেদীঃ ০১৭৮২-২৮৪০২৬,

হোসেনঃ ০১৭৫৮-৪৩৭২০, সজিবঃ ০১৩১০-০০৫৬২৫, হানিফঃ ০১৭৮৫-৯৩৯৭৭৫।

 

বাঘমারা ও তেতুলিয়ার চরে জমি লগ্নী করে টাকা নিয়ে জমি না দেওয়াঃ

 স্বপন চেয়াম্যান বাঘমারা ও তেতুলিয়া চরে শত শত কৃষকদের কাছ থেকে জমি লগ্নি বাবদ লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়ে তাদেরকে আর জমি লগ্নি দেয়নি। এমনকি তাদের টাকাও ফেরত দেয়নি।

 

 দক্ষিণ দিঘলদী ৩ নং ওয়ার্ডের বজলুর রহমান এর কাছ থেকে ৭৫ হাজার টাকা এজাজ মাতাব্বর এর মাধ্যমে জমি লগ্নি বাবদ নিয়ে আর জমিও দেয়নি, টাকাও ফেরত দেয়নি।

বজলুর রহমানঃ ০১৭৫৭-৮৪৪৯৮১।

 

অন্যের জমি দখল করে আইচ প্লান্ট ব্যবসাঃ

 স্বপন চেয়ারম্যানের বাড়ির দক্ষিণ পাশে খায়ের হাট বাজার সংলগ্ন অন্যের জমি জবর দখল করে আইচ প্লান্ট ব্যবসা করছেন এবং পার্শ্ববর্তী চলমান আইচ প্লান্ট গুলো তার পালিত চেলা চামুন্ডা দ্বারা জোর পূর্বক বন্ধ করে দিয়েছেন।

 

 স্বপন চেয়ারম্যানের আইস প্লান্ট ব্যাবসা একক ভাবে পরিচালনার জন্য শান্তির হাটের মোজাম্মেল হাওলাদারের ছেলে বাবুল হাওলাদারের আইস প্লান্ট জোর পূর্বক বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।

বাবুল হাওলাদার ঃ ০১৭২৫-৮১৪৬০।

 

নারী কেলেঙ্কারীঃ

 ক্ষমতার দাপটে, চাকুরীর প্রলোভন দেখিয়ে বিভিন্ন তরুণীদের জিম্মি করে তাদের সাথে যৌন মেলামেশা ও  আমোদ প্রমোদসহ এমন কোন ছোট খাটো অপরাধ নেই, যা স্বপন চেয়ারম্যান করেন না। তার নারী অপকর্মের হাজারো ঘটনা থাকলেও ভয়ে প্রকাশ পাচ্ছে না।

 

ফাতেমা খানম মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক কামালের যোগিরঘোল এর বাসায় সুন্দরী মেয়েদের নিয়ে মনোরঞ্জনে লিপ্ত থাকেন স্বপন চেয়ারম্যান।

 

 দক্ষিন ইউনিয়ন পরিষদে তথ্য সেবায় চাকুরী দেওয়ার নামে সুন্দরী তরুনীদের জিম্মি করে যৌন মেলামেশায় লিপ্ত হন।

 

 দক্ষিণ দিঘলদী ইউনিয়ন পরিষদের তথ্য সেবায় সাবেক চাকুরীরত দলিল উদ্দিন খায়ের হাটরে শিল্পী, দক্ষিণ দিঘলদীর বটতলার সিমা আক্তার, বর্তমানে কর্মরত আলী নগরের ঝুমুসহ অনেক তরুনী স্বপন চেয়ারম্যানের যৌন লালসার স্বীকার হয়েছে। বর্তমানে ঝুমু কর্মরত থাকা অবস্থায় তাহার সাথেও প্রতিনিয়ত দৈহিক মেলামেশা করতে বাধ্য করে আসছে। ঝুমুরকে আলীনগরের একটি আলীশান বাড়ী তৈরি করে দিয়েছেন মর্মে গুঞ্জন রয়েছে।

 

 

 স্বপন চেয়ারম্যানকে খুশি রাখতে সর্বদা বিভিন্ন স্থান থেকে তরুনীদের সংগ্রহ করে দিচ্ছেন দক্ষিণ দিঘলদীর নুরু মেম্বার, নাজিম মেম্বার, ফকরুল হাওলাদার, নাগর, লম্বা সিরাজ, মানিকার মোশারেফ ও বাংলাবাজারের গ্যাস নাছিরসহ বেশ কয়েকজন দালাল।  

 

খায়ের হাটের শেরু মিয়ার মেয়ে মৌসুমীর সাথে দীর্ঘ বছর স্বপন চেয়ারম্যান এর মেলামেশার ঘটনা এখন ওপেন সিক্রেট।

 

 ৩ নং ওয়ার্ডের বাঘমারার উত্তর পাশে বেড়ির পাশে সেলিম দালালের বাসায় বিভিন্ন নারীদের নিয়ে দেহ ব্যবসা করে। সেখান থেকে মোটা অংকের টাকা চেয়ারম্যানকে দিতে হয়।

 

 মা ও শিশু কল্যাণের স্টাফ সুইটির সাথে দীর্ঘদিন ধরে স্বপন চেয়ারম্যান যৌন মেলামেশা করে আসছে। তার স্বামী প্রতিবাদ করলে তাকে হুমকি দিয়ে দূরে সরিয়ে রাখে।

 

মাদক ব্যবসা ঃ

 দক্ষিণ দিঘলদী বটতলা বাজারের কুক্ষ্যাত মাদক ব্যবসায়ী মাইনউদ্দিন ও ৯ নং ওয়ার্ডের গাজা ব্যবসায়ী জহুর ভান্ডারীর মাধ্যমে ইয়াবা ও গাজার ব্যবসা পরিচালনা করছেন স্বপন চেয়ারম্যান। মাঝে মধ্যে মাইনউদ্দিন ও জহুর ভান্ডারী গ্রেফতার হলেও উচ্চ পর্যায়ের তদবিরে অল্প কয়েক দিন পরেই জেল থেকে বেড়িয়ে এসে আবার ইয়াবা ও গাজার ব্যবসা চালাচ্ছেন।

 

ভিজিডি ভিজিএফ এর চাল আত্মসাৎ ঃ

 পরিষদের মাধ্যমে গরীব দুঃখী দুস্থ অসহায় বিধবা নারী এবং জেলেদের জন্য বরাদ্দকৃত চাল পরিমাপে কম দিয়ে সে চাল আত্মসাৎ করে থাকেন। এমনকি ভিজিডি ও ভিজিএফ এর চাল দেওয়ার নাম করে দীর্ঘদিন ধরে নারীদের যৌন হয়রানি করে আসছে। সাম্প্রতিক সময়ে করোনা মহামারি চলাকালীন সরকারি ত্রাণ বিতরণে ব্যাপক স্বজনপ্রীতি ও সীমাহিন অনিয়ম করেছেন স্বপন চেয়ারম্যান।

 করোনাকালীন প্রধান মন্ত্রীর অনুদান দেওয়া ২৫০০ হাজার টাকা বিতরণে ব্যাপক স্বজনপ্রীতি ও ধনাঢ্য ব্যক্তিদের মোবাইল নাম্বার দিয়ে ঐ টাকা আনা হয়েছে। প্রকৃত যারা পাওয়ার তারা কেউই পায়নি। সিম নাম্বারগুলো তল্লাশের অনুরোধ করা হইল।

 

 টি আর, কাবিখা, দক্ষিণ দিঘলদীর বিভিন্ন রাস্তা ঘাট কালবার্ট ও ৯ নং ওয়ার্ডের মন্দির দেখিয়ে সরকারি বরাদ্দ এনে আত্মসাৎ করেছেন স্বপন চেয়ারম্যান। সেখানে কোন মন্দির নেই।

 

পরিষদের সচিব সফিকের মাধ্যমে দূর্ণীতি করে কোটি কোটি টাকা কামিয়ে নিচ্ছে স্বপন চেয়ারম্যান।

 ইউনিয়নের চাল গোডাউন থেকে বের হওয়ার আগেই চেয়ারম্যানের নির্দেশে দালালদের মাধ্যমে ডিলারদের কাছে বিক্রি করে থাকেন সচিব সফিক। সচিব সফিক এখন অঢেল সম্পত্তির মালিক।

 

ক্ষমতার দাপট ঃ

 স্বপন চেয়ারম্যানের ক্ষমতার দাপটের কাছে ক্ষোদ আওয়ামীলীগের বহু নেতা কর্মী নির্যাতনের শিকার হয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছে। অনেক ক্ষেত্রে নিজ দলের নেতা কর্মীদের উপর প্রতিশোধ নিতে তোফায়েল আহমেদ এর গাড়ী বহরে হামলা এবং এমপি আলী আজম মুকুল এর গাড়ী বহরে বোমা নিক্ষেপের সাথে জড়িত  বিএনপির বেশ কিছু চিহ্নিত ক্যাডার ব্যবহার করছে। ত্যাগী ও নির্যাতিত আওয়ামী লীগের নেতা কর্মীদের সকল সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত রেখে বিএনপির ক্যাডারদের মাধ্যমে সকল কর্মকান্ড চালাচ্ছেন। তার ক্ষমতার অপব্যবহারের ফলে দক্ষিণ দিঘলদী ইউনিয়নের আওয়ামী লীগের কর্মী শূন্য হয়ে পড়েছে। তার অত্যাচার ও জিম্মিদশা থেকে বাচতে নেতা কর্মীরা সাবেক বাণিজ্য মন্ত্রী জনাব তোফায়েল আহমেদ এর আন্তরিক হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

 

ইউছুফ মোল্লা, সভাপতি ২ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগঃ ০১৭৫৪-৩৯৯৭০৩। নসু মিজি, সহ-সভাপতি ৭ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগঃ ০১৭২৬-০১৩৩১৩। আলমগীর মাঝি,

ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ নেতাঃ ০১৭৬৪-৭৫২৭২৭। মিলন মাতাব্বর সাধারণ সম্পাদক, ২ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ। মিলন  মাতাব্বরঃ ০১৭৩১-৪০৭৭৬৭। সৈয়দ আহাম্মদ সিকদার, প্রচার সম্পাদক দক্ষিণ দিঘলদী আওয়ামীলীগঃ ০১৭৪০-৬৩৮৯৬৬, আব্দুল আজিজ মোক্তার, ইউপি সদস্য ২ নং ওয়ার্ডঃ ০১৭৪৩-৫৪২৫১৩। দক্ষিণ দিঘলদী ৩ নং ওয়ার্ডের সাবেক ইউপি সদস্য আবুল হোসেনঃ ০১৭১৯-১৭২৫৫১।

 

 রেশন কার্ডের চাল বিতরণে স্বপন চেয়ারম্যান এর মামা মাহাতাব উদ্দিন খান এবং সাবেক মেম্বার মামুন ও সাবেক মেম্বার নাজিমকে পছন্দের ডিলার হিসাবে নিয়োগ দিয়েছেন। তারা ওজনে কম দিয়ে ঐ চাল বিতরণ করছেন। মাহাতাব খানঃ ০১৭৭৭৩৮৬২০৫। নাজিম মেম্বারঃ ০১৭৩১-৩৯৯২৮১।

 

দক্ষিণ দিঘলদীর মা বাবার দোয়া ইটভাটার মালিক মিঠু সোহেল নামের এক যুবককে পার্টনারের ব্যবসার প্রলোভন দিয়ে তার কাছ থেকে ৫০ লাখ টাকা মিঠুর মাধ্যমে হাতিয়ে নিয়েছে স্বপন চেয়ারম্যান।  পরবর্তীতে তাকে আর পার্টনার করা হয়নি, টাকাও ফেরত দেয়নি। গুঞ্জন আছে স্বপন চেয়ারম্যানকে সন্তুষ্ট রাখার জন্য মিঠুর অবিবাহিত বোনকে চেয়ারম্যান এর সাথে লেলিয়ে দেয়। সোহেলঃ ০১৭৮৩-৮৫৪৩৩৮