নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলা ছাত্রলীগের সদস্য হাসিবুল বাশারকে (২৫) জবাই করে হত্যার ঘটনায় ২ আসামিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গ্রেফতারকৃতরা হলো, মামলার ১০নং এজাহার নামীয় আসামি উপজেলার মধুপুর গ্রামের সামু ডাক্তার বাড়ির মানিক মিয়ার ছেলে রকি (২৬) ও ১১নং এজাহার নামীয় আসামি উপজেলার মহবুল্যাপুর গ্রামের চৌধুরী পুতের বাড়ির আব্দুল হাইয়ের ছেলে বাহার উদ্দিন (২২)। বৃহস্পতিবার (৭ জুলাই) উপজেলার একাধিকস্থানে অভিযান চালিয়ে পুলিশ তাদের আটক করে। নিহত হাসিবুল বাশার উপজেলার ২নং গোপালপুর ইউনিয়নের ১নম্বর ওয়ার্ডের কোটরা মহব্বতপুর গ্রামের ইউনুস মৌলভীর বাড়ির মৃত আবুল বাশারের ছেলে।
এসব তথ্য নিশ্চিত করেন নোয়াখালীর (এসপি) মো.শহীদুল ইসলাম। তিনি বলেন,গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে নিহতের চাচা সিরাজুল ইসলাম বাদী হয়ে ১১জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরো ১০-১৫জনকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। পুলিশ অপর আসামিদের গ্রেফতারে চেষ্টা চালাচ্ছে।
উল্লেখ্য, পূর্বপরিকল্পিত ভাবে পূর্ব শক্রতার জের ধরে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে বৃহস্পতিবার (৭ জুলাই) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে উপজেলার ২নং গোপালপুর ইউনিয়নের ১নম্বর ওয়ার্ডের কোটরা মহব্বতপুর গ্রামের সুবাহান মার্কেট এলাকায় বেগমগঞ্জ উপজেলা ছাত্রলীগের সদস্য মো.হাসিবুল বাশারকে (২৫) কুপিয়ে জবাই করে হত্যা করে আওয়ামীলীগে অনুপ্রবেশকারী হাসান,মাসুম ও তাদের সাঙ্গপাঙ্গরা।
এ সময় তাদের উপর্যুপরি ছুরিকাঘাতে ছাত্রলীগ নেতা হাসিবুল বাশারের শরীর ক্ষতবিক্ষত হয়। পরে স্থানীয়রা তাকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় উদ্ধার করে ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করে।
বেগমগঞ্জ উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক রাহাত চৌধুরী জানান, পূর্ব শক্রতার জের ধরে উপজেরার ২ নং গোপালপুর ইউনিয়নের কোটরা মহব্বতপুর গ্রামের বিএনপি থেকে আওয়ামী লীগে অনুপ্রবেশকারী হাসান,মাদক ব্যবসায়ী মাসুমও তাদের অস্ত্রধারী সাঙ্গপাঙ্গরা বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে গোপালপুর ইউনিয়নের ১নম্বর ওয়ার্ডের সুবাহান মার্কেট এলাকায় হাসিবুলের ওপর হামলা চালায়। একপর্যায়ে তারা হাসিবুলকে ছুরি দিয়ে মাথায় ও গলায় জবাই করে গুরুত্বর আহত করে। পরে স্থানীয় লোকজন তাকে উদ্ধার করে ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করে।
রাহাত চৌধুরী অভিযোগ করে আরো বলেন, কয়েক বছর আগে জেলা আওয়ামী লীগ নেতা জাবেদ মিয়ার হাত ধরে ২ নং গোপালপুর ইউনিয়নের সালাউদ্দিন নামে এক ব্যক্তি বিএনপি থেকে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে আসেন। এরপর সালাউদ্দিনের হাত ধরে হাসান বিএনপি থেকে আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে সম্পৃক্ত হন। হাসানের অপর সহযোগী মাসুম এলাকার চিহিৃত মাদক ব্যবসায়ী। তাদের বিরুদ্ধে বেগমগঞ্জ থানায় একাধিক মামলা রয়েছে। কিছু দিন আগে হাসান ও মাসুম তাদের অনুসারীদের নিয়ে আরেক ছেলের পায়ের রগ কেটে দেয়। ওই ঘটনায় বেগমগঞ্জ থানায় মামলা হলেও পুলিশ তাদের কিছুই করতে পারে নি। ওই ঘটনায় পুলিশ আইনগত ব্যবস্থা নিলে এ ঘটনা ঘটত না। হাসান ও মাসুমের প্রধান ক্ষমতার উৎস আওয়ামী লীগে অনুপ্রবেশকারী সালাউদ্দিন বলেও তিনি মন্তব্য করেন।