শেরপুর জেলার নালিতাবাড়ী উপজেলার গেরাপচা পশ্চিমপাড়া গ্রামে ৬ জুলাই বুধবার রাত ১২টার দিকে আবু সাঈদ (৩০) নামে এক যুবককে কুপিয়ে হত্যা করেছে দিনমজুর মাহফুজ (৪২)। প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, নালিতাবাড়ী উপজেলার গেরাপচা পশ্চিমপাড়া গ্রামের নজরুল ইসলামের ছেলে বিদ্যুৎ মিস্ত্রী আবু সাঈদ ও ইমান আলীর ছেলে দিনমজুর মাহফুজ বুধবার রাতে এক সঙ্গে মাছ ধরতে যায়। রাত ১১টার সময় তারা স্থানীয় এক দোকানে বসে দু’জনে এক সাথে চা পান করে। কিছুক্ষণ পর আবু সাঈদ, দোলোয়ার হোসেন বাচ্চু সহ দু-তিন জন রাস্তায় দাঁড়িয়ে কথা বলছিল। এসময় দূর থেকে আবু সাঈদকে ডেকে নিয়ে সাইজুদ্দিনের বাড়ির পাশের রাস্তায় আকস্মিকভাবে ঘাড়ের পেছনে সজোরে দা দিয়ে পর পর দুটি কোপ দেয় মাহফুজ। এতে আবু সাঈদের ঘাড়ের পেছনের অংশ পুরোপুরি কেটে মাথা প্রায় বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। আবু সাঈদের চিৎকার শোনে আশপাশের লোকজন ছুটে এসে তাকে উদ্ধার করে নালিতাবাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
এঘটনার পর অভিযুক্ত মাহফুজ পালিয়ে যাবার চেষ্টাকালে রাত সাড়ে ১২টার দিকে নালিতাবাড়ী-ঢাকা মহাসড়কের পৌরশহরের নয়ানীকান্দা মহল্লা থেকে গ্রেফতার করে পুলিশ। নিহতের পিতা নজরুল ইসলাম বাদী হয়ে ৭ জুলাই বৃহস্পতিবার মাহফুজকে আসামী করে নালিতাবাড়ী থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন।
জানা গেছে, আবু সাঈদ ও মাহফুজ পরস্পর প্রতিবেশি। প্রায় তিন বছর আগে মাহফুজের স্ত্রী চার সন্তানের জননী মিনারা বেগম ওমানে চলে যায়। দুই বছর প্রবাস জীবন কাটিয়ে দেশে ফিরে। এরপর স্বামীর সাথে বনিবনা না হওয়ায় মিনারা প্রায় বছর খানেক আগে স্বামী মাহফুজকে তালাক দিয়ে পিতার বাড়ি দিনাজপুরে চলে যায়। এদিকে স্ত্রী চলে যাওয়ায় প্রতিবেশি মাহফুজকে নিয়ে আবু সাঈদ পরকীয়ার সন্দেহ পোষণ করে। পরকীয়ার এই ঘটনার জের ধরেই আবু সাঈদকে মাহফুজ হত্যা করেছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করছে পুলিশ।
নালিতাবাড়ী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) বছির আহমেদ বাদল সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, পরকীয়ার ঘটনায় মাহফুজ প্রতিবেশি আবু সাঈদকে হত্যার কথা স্বীকার করেছে। পুলিশ নিহত আবু সাঈদের লাশ উদ্ধার করে সুরতহাল রিপোর্ট তৈরি শেষে ময়নাতদন্তের জন্য শেরপুর জেলা সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। পরে অভিযুক্ত মাহফুজকে আদালতে সোপর্দ করেছে পুলিশ।