এ বার প্রকাশ্যে এল সমীর ওয়াংখেড়ের নিকাহ-র ছবি। প্রকাশ করলেন মহারাষ্ট্রের উন্নয়নমন্ত্রী নবাব মালিক। যিনি মাদক মামলায় আরিয়ান খানের গ্রেফতারির পর থেকে জাতীয় মাদক নিয়ন্ত্রক সংস্থা এনসিবি- কর্তা সমীরের বিরুদ্ধে একের পর এক অভিযোগ এনেই চলেছেন। তবে এ বার তাঁর আক্রমণের লক্ষ্য সমীরের ইন্ডিয়ান রেভিনিউ সার্ভিসের চাকরি এবং সেই চাকরি পাওয়ার জন্য তথ্যগত ‘দুর্নীতি’র আশ্রয় নেওয়া।
সমীরের বিয়ের ছবিটি বুধবার সকাল ৭টা ৪১ মিনিটে টুইটারে প্রকাশ করেন মহারাষ্ট্রের মন্ত্রী এবং ন্যাশনালিস্ট কংগ্রেস পার্টির (এনসিপি) নেতা নবাব। বর্ণনায় কিছুটা ব্যঙ্গের সুরেই লেখেন, এক মিষ্টি দম্পতির ছবি। সমীর দাউদ ওয়াংখেড়ে এবং চিকিৎসক শাবানা কুরেশি। এখনকার দুঁদে এনসিবি কর্তা সমীর ২০০৬ সালের ওই ছবিতে একজন অল্পবয়সি যুবক। বিয়ের দিন প্রথম স্ত্রী শাবানাকে নিয়ে ছবিটি তুলিয়েছিলেন তিনি। ওই ছবি এবং তার পরে সমীরের মুসলিম মতে বিয়ের শংসাপত্র বা নিকাহনামা প্রকাশ করে নবাব জানিয়েছেন, সমীরের ধর্ম নিয়ে তাঁর কোনও আপত্তি নেই। তিনি শুধু চোখে আঙুল দিয়ে দেখাতে চান সমীর একজন অসৎ ব্যক্তি। যিনি চাকরির প্রয়োজনে খাতায় কলমে নিজের ধর্ম কিংবা জাতি বদলে ফেলতেও দ্বিধাবোধ করেননি।এর আগে সমীরের বিরুদ্ধে তদন্তে অনিয়ম, নির্দোষ ব্যক্তিকে অকারণে হেনস্তা করার মতো অভিযোগ এনেছেন নবাব। মঙ্গলবার সমীরের বিরুদ্ধে ২৬টি অনিয়মের বিবরণ দেওয়া একটি চিঠি টুইটারে প্রকাশ করেছিলেন। তার আগে সোমবার তিনি বলেছিলেন, মুসলিম হয়েও স্রেফ চাকরি পাওয়ার জন্য জাত-পাতের ভুয়ো শংসাপত্র দাখিল করেছিলেন সমীর। সেখানে নিজেকে প্রান্তিক হিন্দু বলে দাবি করেছিলেন। প্রান্তিক জাতির সংরক্ষণের সুবিধা নিয়েই ভারতীয় গোয়েন্দা বিভাগে চাকরি নিয়েছিলেন এনসিবি কর্তা। বুধবারের ছবিটি সেই দাবিরই প্রমাণ।
নবাব বলেছিলেন, এনসিবির রেকর্ডে সমীরের বাবার নাম জ্ঞানদেব ওয়াংখেড়ে লেখা থাকলেও আসলে তাঁর নাম দাউদ। নবাবের দাবি অবশ্য তখন অস্বীকার করেছিলেন সমীরের বাবা। বুধবার সকালে ছবিটি প্রকাশ করার পর অবশ্য তাঁদের প্রতিক্রিয়া জানা যায়নি। বুধবার নবাব এ-ও বলেন যে, ২০০৬ সালের ৭ ডিসেম্বর সমীর এবং শাবানার বিয়েতে দ্বিতীয় সাক্ষী ছিলেন তাঁর বোন ইয়াসমিনের স্বামী আজিজ খান।নবাবের অভিযোগের পাশাপাশি সমীরের বিরুদ্ধে ২৫ কোটি টাকার একটি ঘুষ কেলঙ্কারিতে জড়িত থাকার অভিযোগও উঠেছে। মুম্বইয়ের মাদক মামলার অন্যতম সাক্ষী প্রভাকর সইল একটি হলফনামা প্রকাশ করে সোমবার জানিয়েছিলেন আরিয়ানকে রেহাই দেওয়ার জন্য শাহরুখ খানের ম্যানেজার এবং বেসরকারি গোয়েন্দা কিরণ গোসাভির মধ্যে কোনও চুক্তি হয়েছিল। যে বিষয়ে গোসাভির কথোপকথনে তিনি স্পষ্ট শুনেছিলেন সমীরের নাম। মুম্বইয়ের জোনাল অফিসার সমীর ওয়াংখেড়েকে আট কোটি টাকা দেওয়ার কথা বলেছিলেন গোসাভি। প্রভাকর জানিয়েছিলেন, এই অভিযোগের প্রমাণও আছে তাঁর কাছে। যা তিনি প্রকাশ্যে আনবেন গোসাভি আত্মসমর্পণ করার পরই। প্রভাকরের ওই অভিযোগের পরই সমীরের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করেছে এনসিবি।