তালেবানের ওপর নিষেধাজ্ঞা বহাল রেখে মার্কিন ট্রেজারি ডিপার্টমেন্ট আফগানিস্তানের জনগণকে মানবিক সহায়তা এবং আর্থিক সহায়তার জন্য লাইসেন্স জারি করেছে। ইউএস ট্রেজারি অফিস অফ ফরেন অ্যাসেটস কন্ট্রোল এর পরিচালক আন্দ্রেয়া গাকি এক বিবৃতিতে বলেন, ‘ট্রেজারি আফগানিস্তানের জনগণের জন্য মানবিক সহায়তার প্রবাহ এবং তাদের মৌলিক মানবিক চাহিদা পূরণকারী অন্যান্য কার্যক্রম সহজতর করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’
মূলত পাকিস্তান, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া এবং চীনের মধ্যে একটি বোঝাপড়া অনুসরণ করে শুক্রবার সন্ধ্যায় এই সুবিধাসমূহ ঘোষণা দেয়া হয়। যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত পাকিস্তানের রাষ্ট্রদূত আসাদ মজিদ খান ওয়াশিংটনে ডনকে বলেন, পাকিস্তান সবসময় বিশ্বাস করে যে, এই চার দেশ আফগানিস্তানে টেকসই শান্তির জন্য একটি কার্যকর প্লাটফর্ম প্রদান করে। চারটি দেশের মধ্যে দুটি-পাকিস্তান এবং চীন-আফগানিস্তানের সাথে সীমান্ত রয়েছে এবং অন্য দুটি-মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং রাশিয়া-যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশে সামরিক অভিযানে জড়িত ছিল।
জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের (ইউএনজিএ) ৭৬তম অধিবেশনের সময় আলোচনার পর চার দেশ এই বোঝাপড়ায় পৌঁছেছে। পররাষ্ট্রমন্ত্রী শাহ মেহমুদ কুরেশি নিউইয়র্কে তার সপ্তাহব্যাপী অবস্থানকালে এই আলোচনায় পাকিস্তানের প্রতিনিধিত্ব করেন। রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভ শুক্রবার জাতিসংঘে তার ভাষণে চারটি দেশের মধ্যে এই বোঝাপড়ার ঘোষণা দেন এবং পরে একটি সংবাদ ব্রিফিংয়ে এটি পুনরায় নিশ্চিত করেন।
কিন্তু তিনি আরও বলেছিলেন যে, তালেবানদের আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি ‘এখনও আলোচনার টেবিলে নেই।’
এর আগে অধিবেশন চলাকালীন, জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে সতর্ক করেছিলেন যে, তালেবানদের এই ধরনের স্বীকৃতির আকাঙ্ক্ষা আফগানিস্তানের নতুন শাসকদের উপর তাদের একমাত্র সুবিধা ছিল। শনিবার বিকালে এক সংবাদ সম্মেলনে লাভরভ বলেন, ‘সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ... তারা যে প্রতিশ্রুতিগুলো প্রকাশ্যে ঘোষণা করেছে, তা নিশ্চিত করা।’
ওয়াশিংটনে, ট্রেজারি বলেছে যে, তারা যে দুটি সাধারণ লাইসেন্স জারি করেছে। এগুলো তালেবানদের উপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞাগুলো আফগান নাগরিকদের উপর প্রভাব ফেলতে সহজ করবে। নিষেধাজ্ঞাগুলো তালেবানদের মার্কিন সম্পদ স্থগিত করে এবং মার্কিন নাগরিকদের তহবিল, পণ্য বা পরিষেবার অবদান সহ তাদের সাথে লেনদেনে জড়িত হতে বাধা দেয়।
জাতিসংঘে, ইউনিসেফের নির্বাহী পরিচালক হেনরিয়েটা ফোর একটি মন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকে সতর্ক করে দিয়েছিলেন যে, ‘আফগানিস্তানে প্রায় ১ কোটি ছেলে-মেয়েরা বেঁচে থাকার জন্য মানবিক সহায়তার উপর নির্ভর করে।’তিনি আরও সতর্ক করে দিয়েছিলেন যে, এই বছর কমপক্ষে ১০ লাখ শিশু মারাত্মক অপুষ্টিতে ভুগবে এবং বিনা চিকিৎসায় মারা যেতে পারে। সূত্র: ডন।