ঢাকা, বৃহস্পতিবার ৯ই মে ২০২৪ , বাংলা - 

বরিশালের পদেই থাকছে সরোয়ার

স্টাফ রিপোর্টার।।ঢাকাপ্রেস২৪.কম

2021-09-26, 12.00 AM
বরিশালের পদেই থাকছে সরোয়ার

বরিশাল বিএনপির রাজনীতিতে যখন আইকন মজিবর রহমান সরোয়ার তখন গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়ালেন জিয়া উদ্দিন সিকদার। কারন বরিশালের রাজনীতিতে বিএনপির অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে মজিবর রহমান সরোয়ার নির্ভরশীল হয়ে পরেছিলেন জিয়া সিকদারের উপর। যেটা অন্য নেতা কর্মীদের মেনে নিতে কষ্ট হয়ে ছিলো। তারপরও দাদুর মুখের দিকে তাকিয়ে  ও দলের কথা চিন্তা করে এতদিন মুখ বুঝে সহ্য করেছেন। কিন্তু হঠাৎ করে বরিশাল বিএনপির নতুন করে কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত কেন্দ্র থেকে আসায় অনেকেই মাথা চারা দিয়ে উঠেছে দলের গুরুত্বপূর্ণ পদ পেতে।

যে যেভাবে পারছেন সেভাবে লবিং তদবির করে যাচ্ছেন। অনেকে ভেবেই ছিলেন মজিবর রহমান সরোয়ারকে বিএনপির মহানগরের সভাপতি পদ দেয়া নাও হতে পারে। কারন হিসেবে দাঁড়িয়েছে জিয়া উদ্দিন সিকদার এমন আভাস পাওয়া যাচ্ছে দলের অন্যান্য নেতা কর্মীদের কাছ থেকে। তারা বলছেন অন্য নেতা কর্মীদের গুরুত্ব না দিয়ে তিনি জিয়াকে কাছে টেনে নিয়েছেন। তার উচিত ছিলো মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদকে এ্যাড কামরুল আহসান শাহিনের  মৃত্যুর পরে কেন্দ্রের সিদ্ধান্ত নিয়ে ওই স্থানে অন্য কাউকে বসানো।
জিয়া ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব নেওয়ার পরে দলের নেতাদের কোন আশার আলো দেখাতে পারেননি। মহানগর সভাপতি এ্যাড. মজিবর রহমান সরোয়ার কেন্দ্রর দায়িত্ব পাওয়ার পরে বেশির ভাগ সময় তাকে ঢাকায় থাকতে হয়েছে। সে সুজগে জিয়া নিজের আখের গুছিয়ে নিয়েছেন। তখন  বিত্রনপির পক্ষ থেকে সরকার পতন আন্দোলনে রাজপথে জোড়ালো কোন মিছিল মিটিং করতে দেখা যায় নি তাকে।
দায় সারা ভাবে দুই একটি মিছিল মিটিং করা হয়েছে। সব কিছু মিলিয়ে জিয়া সিকদার আজ সবার চোখের বিষ। তিনি মজিবর রহমান সরোয়ারের কাছের নেতা কর্মীদের দুরে সরিয়ে একক আধিপত্য বিস্তার করতে চেয়েছেন। এটা অন্য নেতা কর্মীরা মানতে নারাজ। তাই তারা মহানগর নেতৃত্বে অন্য কাউকে দেখতে চাচ্ছেন। কিন্তু এদের মধ্যে থেকে অধিকাংশ নেতা কর্মীরা বলছেন বরিশালের  বিএনপির রাজনৈতিক অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে এ্যাড. মজিবর রহমান সরোয়ারের বিকল্প কেউ নেই।
বিগত দিনে তিনি যেভাবে নেতা কর্মীদের এক বন্ধনে আবদ্ধ করে রেখেছেন তা অন্য কোন নেতা আসলে পারবেন কিনা সন্দেহ রয়েছে। বিত্রনপির একাধিক সূত্রে জানা যায়, যে কোন সময় বরিশাল মহানগর বিএনপির কমিটি ঘোষনা হতে পারে। সেখানে আগের অবস্থানে থাকবেন সরোয়ার। তবে জিয়া উদ্দিন সিকদার সাধারণ সম্পদকের পদে নাও থাকতে পারেন এবং আরও পরিবর্তন আসতে পারে বলে সূত্র আভাস দিয়েছে। উত্তর ও দক্ষিণ জেলার আহ্বায়ক কমিটি ঘোষনাও এখন সময়ের অপেক্ষা।
বিএনপির মেয়াদোত্তীর্ণ মহানগর এবং উত্তর ও দক্ষিণ জেলা কমিটি বিলুপ্ত করে আহ্বায়ক কমিটির বিষয়টি বেশ কদিন ধরে বরিশালের রাজনীতিতে আলোচিত হচ্ছে। বিএনপির কেন্দ্রীয় দপ্তরের দায়িত্বশীল সূত্র নিশ্চিত করেছেন, বরিশাল মহানগর এবং উত্তর ও দক্ষিণ জেলার প্রস্তাবিত আহ্বায়ক কমিটি দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে। আপাতত শুধু আহ্বায়ক ও সদস্য সচিবের নাম ঘোষণা করা হবে । সূত্রটি আরও জানিয়েছে, নগরের আহ্বায়ক ও সদস্য  সদস্য সচিব পদের জন্য নাম পাঠানো হয়েছে।
দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান লন্ডনে অবস্থান করায় তার কাছে পাঠানো হয়েছে। আহ্বায়ক পদ প্রার্থী হলেন বর্তমান সভাপতি এ্যাড. মজিবর রহমান সরোয়ার, এ্যাড. বিলকিস জাহান শিরিন , আহসান হাবিব কামাল , এ্যাড. আলী হায়দার বাবুল। এছাড়াও সদস্য সচিব পদপ্রার্থীরা হলেন এ্যাড. মহসীন মন্টু, এ্যাড. আক্তার হোসেন মেবুল, এ্যাড. আখতারুজ্জামান কখন শামীম, জিয়া উদ্দিন সিকদার, এ্যাড. মীর জাহিদুল কবির , এ্যাড. শাহ আমিনুল ইসলাম আমিন। সরোয়ার বিরোধী পক্ষটি আহ্বায়ক পদে হেবি ওয়েট প্রার্থী না পেয়ে সদস্য সচিব পদ পেতে জোট বদ্ধ হয়ে মাঠে নেমেছেন।
এদের মধ্য থেকে বলা হয়েছে কাউন্সিলর এ্যাড. মীর জাহিদুল কবিরের সদস্য সচিব হওয়ার বিষটি প্রায় নিশ্চিত। বিএনপির একাধিক নেতারা জানান, মহানগরের পরেই জেলার গুরুত্বপূর্ণ সাংগঠনিক কমিটি হচ্ছে দক্ষিন জেলা। সম্ভাব্য আহ্বায়ক কমিটিতে বর্তমানে সভাপতি এবায়দুল হক চাঁদের শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বী হয়ে উঠেছেন বরিশাল- ৬ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আবুল হোসেন খান। এ দুজনের মধ্য থেকেই একজন আহ্বায়ক হচ্ছেন বলে জানা গেছে। আর সদস্য সচিব পদে বর্তমান সাধারন সম্পাদক আবুল কালাম শাহীনের সম্ভাবনা বেশি।
উত্তর জেলায় আহ্বায়ক পদে বর্তমান সভাপতি মেজবাহ উদ্দিন ফরহাদ অনেকটা নিশ্চিত। আগৈলঝাড়া উপজেলার আফজাল হোসেন ও মুরাদ উপজেলার ছত্তার খানের মধ্যে একজন সদস্য সচিব হচ্ছেন। বিএনপির কেন্দ্রীয় সহ সাংগঠনিক সম্পাদক আকন কুদ্দুসর রহমান বলেন মহানগরসহ বরিশাল উত্তর ও দক্ষিণ বিএনপির নেতৃত্ব গঠন প্রক্রিয়াধীন। যারা দীর্ঘদিন মাঠে থেকে মামলা- হামলার শিকার হয়েছেন তাদের মূল্যায়ন করার সুপারিশ করা হয়েছে। তবে এবার রাজপথে যারা নেতৃত্ব দিতে পারবেন এবং দলের নেতাদের আপন করে নিতে পারবেন সে সব নেতাদের মূল্যায়ন করা হবে।
অপর একটি সূত্রে জানায় বরিশালের বিএনপির রাজনীতি টিকিয়ে রাখতে হলে সরোয়ারের বিকল্প নেই। তিনি সত্তুরের পরে বরিশালে বিএনপির রাজনীতিতে যে ভাবে সক্রিয় ভাবে নেতৃত্ব দিয়ে আন্দোলন সংগ্রাম করে কারাবরন করে নির্যাতন সহ্য করেছেন তা সবার জানা। ভুল সবারই হয়। তাই মজিবর রহমান সরোয়ারকে কেউ হাটাতে চাইলে বিএনপির রাজনৈতিক পরিস্থিতি খুব একটা সুবিধা জনক হবেনা। দলে বিশৃংখোলা দেখা দিবে।
এ বিষয় বিত্রনপির কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব বরিশাল মহানগর বিএনপির সভাপতি এ্যাড. মজিবর রহমান সরোয়ারের সাথে কথা বলতে গেলে তিনি বলেন , যে কোন সময় কমিটি ঘোষনা হতে পারে- এটা আমিও নিশ্চিত হয়েছি। তবে দল যে সিদ্ধান্ত নিবেন সে মোতাবেক আমরা কাজ করবো। যারা রাজপথে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছেন তাদের মূল্যায়ন করা হউক। যারা অন্য দল থেকে এসে আজ নেতা হয়েছেন এবং যারা দলের বাহিরে থেকে এখন দায়িত্ব পালন করতে চাচ্ছেন সে সব দিকেও সকালকে দৃষ্টি রেখে কমিটি গঠন করতে হবে।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সাধারন সম্পাদক জিয়া উদ্দিন সিকদারের বিষয় বলেন, এটা কোন বিষয় না। তবে দলের স্বার্থে আমি এখন থেকে কঠোর হয়ে কাজ করবো। আমি বরিশালের সন্তান তাই এখানকার বিএনপির রাজনীতির জন্য যা করা দরকার আমি করবো। আগে আমার বরিশাল পরে অন্য সব । কারন আমি বরিশালে থেকে মুক্তিযুদ্ধ করেছি । আমি একজন যোদ্ধা । যুদ্ধ কিভাবে করতে হবে তা আমি ভালো করে জানি।