সময়ের জনপ্রিয় অভিনেত্রী তাসনিয়া ফারিন। একের পর এক নাটক-টেলিছবি দিয়ে তিনি বাজিমাত করছেন। ওয়েব কনটেন্টেও তার সাবলীল পদচারণা। ‘ট্রল’ ওয়েব ফিল্ম দিয়ে এই মাধ্যমে যাত্রা শুরু করা ফারিন অভিষেকেই পান দারুণ সাড়া।
এরপর ‘লেডিস অ্যান্ড জেন্টেলম্যান’-এ হন প্রশংসিত। সবশেষ মুক্তি পাওয়া সিনেমা ‘নেটওয়ার্কের বাইরে’ হাজির হয়ে প্রশংসা পাচ্ছেন। ফারিন ছাড়াও বন্ধুত্ব ও ভালোবাসার গল্পের এ সিনেমায় অভিনয় করেছেন শরিফুল রাজ, নাজিফা তুষি, ইয়াশ রোহান, নাজিয়া হক অর্ষা, খায়রুল বাশার, জোনায়েদ বোগদাদী, তাসনুভা তিশা প্রমুখ।
‘নেটওয়ার্কের বাইরে’ থেকে কেমন সাড়া পাচ্ছেন, জানতে চাইলে ফারিন বলেন, ‘আমি তো আগে থেকেই পুরো স্ক্রিপ্ট জানি। তার পরও ছবিটি দেখতে দেখতে এক মুহূর্তের জন্যও বোরিং লাগেনি। এখানে যারাই অভিনয় করেছেন প্রত্যেকেই যার যার চরিত্রে আলাদা ডাইমেনশন ক্রিয়েট করেছেন। বলতে পারেন, অল্প সময়ের মধ্যে আমরা অনেক কিছু দেখেছি এখানে।
সত্যি বলতে আমি এতোটাও প্রত্যশা করিনি যে এটার এক্সিকিউশনটা এত বেশি সুন্দর হবে। আমার কাছে মনে হয়েছে, আমি যেন একটা ট্রিপ দিয়ে আসলাম আমার বন্ধুদের সাথে। শেষ দিকে অনেক বেশি খারাপ লেগেছে। বিশেষ করে আমার অনেক বেশি খারাপ লেগেছে আমার নিজের বন্ধুদের কথা ভেবে।
আমার পরিবার অনেক রেস্ট্রিক্টেড। আমাকে কোথাও বের হতে দিতো না। আমার মনে পড়ে না শেষ কবে বন্ধুদের সঙ্গে এমন ট্রিপ দিয়েছি। আমি শুধু সেই বিষয়টাই ভাবছিলাম। ছবিটা দেখার পর এখন অনেকেই তাদের বন্ধুদের সাথে একটা ট্রিপ প্ল্যান করবে। এমনকি আমি আমার বন্ধুদেরও মেসেজ পাঠিয়েছি যে চল আমরা একটা ট্রিপ দেই! দ্রুতই কোথাও যাবো।’
বলতে বলতে বন্ধুদের সঙ্গে নিজের ব্যক্তি জীবনের কিছু স্মৃতি এসে ভর করেছে ফারিনের মনের কোণে। তিনি খানিকটা চুপ থেকে অতীতে ভেসে গেলেন। বলতে লাগলেন, ‘আসলে ছবিটা দেখার পর থেকেই আমার বন্ধুদের ভীষণ মিস করছি। পুরোনো দিনগুলোকে মিস করছি। আমি রীতিমতো কান্না করে দিয়েছি। কয়েকজন বন্ধুকে মেসেজ করেছি। আমার বেস্ট ফ্রেন্ড জ্যোতি, এটা দেখার পর সেও কান্না করে দিয়েছে। খুব মনে পড়ছিল তার। কারণ, স্কুল-কলেজ লাইফে আমি কোথাও বের হতে পারিনি। বাসা থেকে কোথাও যেতে দেয়নি।
২০১৯ সালের শেষ দিকে আমাদের ভার্সিটির একটা ট্রিপে কক্সবাজার গিয়েছিলাম। দুটি শুটিংয়ের মাঝখানে খুব কষ্ট করে এই ট্রিপের জন্য আমি আমার সময় ম্যানেজ করেছিলাম। এটাই আমার জীবনের প্রথম এবং এখন পর্যন্ত শেষ কোনো ট্রিপ। আমি সেই ছবিগুলো খুঁজে বের করে দেখছিলাম। সেখানে কত মজা করেছি, রাত তিন-চারটা পর্যন্ত গান বাজনা করেছি। এত বেশি মিস করছিলাম সময়গুলোকে যা বলার মতো নয়। সেখানে আমরা তিনদিন ছিলাম। এই তিনদিন আমার জীবনের সেরা একটা মুহূর্ত হয়ে থাকবে সবসময়।’
তিনি আরও বলেন, ‘শুটিং করার সময় মনে হয়নি এতোটা রেসপন্স পাবো দর্শকের কাছ থেকে।
শোনার পর আরিয়ান ভাই আবার মাইর দেয় কিনা ভাবছি! রোদের মধ্যে ঘণ্টার পর ঘণ্টা খাটাচ্ছিল আমাদের, খুব বিরক্ত লাগছিল তখন। ফ্লাইট মিস হচ্ছে, কি করছি না করছি কিছুই বুঝতেছিলাম না তখন। কে কোথায় আছি তার কোনো ঠিক নেই। পুরো হ-য-ব-র-ল লাগতে ছিল। আরিয়ান ভাই তখন বলল যে, তোমাদের যেটা করতে বলেছি তোমরা শুধু সেটা করো, বাকিটা আমি দেখবো। আমি ডিরেক্টরের আর্টিস্ট, সবসময় অর্ডার ফলো করি। তখনও তাই করেছি। আলটিমেটলি রেজাল্টটা খুব ভালো হয়েছে আর কি।‘
দর্শকের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে ফারিনের ভাষ্য, ‘এই যে কত মানুষ কাজ দেখার পর আমাকে মেসেজ করে, প্রশংসা করে, আমার জন্য দোয়া করে- এটাই আমার সবচেয়ে বড় পাওয়া। যাদের জন্য কাজ করি তারা আমাকে পছন্দ করছেন। আমি কৃতজ্ঞ।’