ঢাকা, বৃহস্পতিবার ২১ই নভেম্বর ২০২৪ , বাংলা - 

আমি ভীত নই আমি ভীত হব না: প্রধানমন্ত্রী

স্টাফ রিপোর্টার।।ঢাকাপ্রেস২৪.কম

2021-08-16, 12.00 AM
আমি ভীত নই আমি ভীত হব না: প্রধানমন্ত্রী

আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, জাতির পিতা রক্ত দিয়ে গেছেন এদেশের মানুষের জন্য, রক্ত দিয়ে গেছেন আমার মা আমার ভাইয়েরা। আমিও সেই রক্ত দিতেই বাংলাদেশে পা রেখেছি। কাজেই আমিও জানি আমার জীবনের কোনো মায়া নেই, আমার কোনো কিছু চাওয়া নেই। আমার একটাই চাওয়া যে আদর্শ নিয়ে আমার বাবা এই দেশ স্বাধীন করেছে। স্বাধীনতার সেই আদর্শ বাংলার মানুষের কাছে পৌঁছে দেবো ওটাই আমাদের প্রতিজ্ঞা। আমাদের প্রতিজ্ঞা হবে ওই রক্ত কখনো বৃথা যায়নি বৃথা যেতে পারে না, বৃথা যেতে দেব না।

তিনি বলেন, মৃত্যুকে সামনাসামনি দেখেছি, কিন্তু কোন দিন ভীত হইনি। আর আমি ভীত হবও না। কারণ আমি তো প্রস্তুত। আমি জানি যে কোনো মুহূর্তে আমাকে চলে যেতে হবে। যতটুকু সময় আছে দেশের জন্য কতটুকু করতে পারি যেন আমার আব্বার আত্মাটা শান্তি পায়।

সোমবার (১৬ আগস্ট) বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ আয়োজিত ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভায় গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী একথা বলেন।

আলোচনা সভায় সূচনা বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। এছাড়া আলোচনা করেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য মতিয়া চৌধুরী, ড. আব্দুর রাজ্জাক, জাহাঙ্গীর কবির নানক, আব্দুর রহমান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহাবুব উল আলম হানিফ প্রমুখ।

আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, আমার একটাই লক্ষ্য ছিল বাংলাদেশের মানুষকে যারা চিরদিন শোষণ করতে চেয়েছে, বঞ্চিত রাখতে চেয়েছে, ক্ষুধার্থ রাখতে চেয়েছে, দারিদ্রের কষাঘাতে জর্জরিত হোক সেটা চেয়েছে বাংলাদেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন হোক সেটা চান নাই। তাদের দরিদ্র রেখে দিয়ে তাদের দেখিয়ে বিদেশ থেকে সাহায্য এনে লুটে খেয়েছে যেন বাংলাদেশের মানুষ কোন দিন শোষণের হাত থেকে মুক্তিপাক আর সুন্দর জীবন পাক যেটা জাতির পিতা চেয়েছিলেন সব সময় ষড়যন্ত্র করেছে সেই বাংলাদেশের মানুষের ভাগ্যে পরিবর্তন করা তাদের ক্ষুধা দারিদ্র থেকে মুক্তি দেওয়া তাদের জীবনটা উন্নত করা তাদের জীবনটাকে সুন্দরভাবে গড়ে তোলা এটাই আমার একমাত্র লক্ষ্য। বাবার লালিত স্বপ্ন যখন পূরণ করতে পারব আমি মনে করব এই হত্যার প্রকৃত প্রতিশোধ নিতে পারব।

তিনি বলেন, জাতির পিতা ১৯৭২ সালে ফিরে এসেছেন সংবিধান দিয়েছেন, ৭৩ সালে নির্বাচন দিয়েছেন পৃথিবীর কোনো দেশে এরকম যুদ্ধ বা বিপ্লবের পর কখনো এধরনের ঘটনা ঘটে না। তিনি গণতন্ত্রে বিশ্বাস করতেন অসাম্প্রদায়িক রাজনীতিতে বিশ্বাস করতেন ধর্মনিরপেক্ষতায় বিশ্বাস করতেন, মানুষের বৈষম্য দূর করবেন। তিনি এভাবেই একটা গণতান্ত্রিক পথ যখন নিতে যান তারপরেও চক্রান্ত চলতে থাকে। তখন তিনি সমস্ত জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করে একটা লক্ষ্যে যে উৎপাদন বাড়াতে হবে, দারিদ্র দূর করতে হবে। মানুষকে উন্নত জীবন দিতে হবে। সেই পদক্ষেপ যখন নিলেন এবং বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে খুব স্বাভাবিক স্বাধীনতা বিরোধী দেশের ভেতরে বাইরে বা যাদের যুদ্ধে পরাজিত করেছি এবং তাদের দোসর তারা এটা মেনে নিতে পারেননি। বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর আরও দরিদ্র হবে এটাই তো তাদের কথা ছিল। সেটা না হয়ে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে সেটাই তারা প্রতিশোধ নিতে চেয়েছিল। সেই প্রতিশোধে ১৫ আগস্ট। শুধু তাদের না, ওই রক্তের কেউ যেন আর না থাকে সেটাই চেয়েছিল। আমি জুলাই মাসের ৩১ তারিখে জার্মানিতে পৌঁছাই, ১৫ দিন। ১৩ আগস্ট শেষ কথা হয়। এসময় কান্নায় প্রধানমন্ত্রীর কণ্ঠ ভারি হয়ে আসতে দেখা যায়। কিছুক্ষণ কথা বলা বন্ধ করে দেন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ১৯৮১ সালে ফিরে আসি। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি করা হয়। অনেক বাধা আসার পরেও অনেক সমস্যা অনেক কিছুই আমাকে বরণ করতে হয়েছে। এতে আমি সব কিছু সেগুলোকে বেশি গুরুত্ব না দিয়ে আমার চলার পথ ঠিক রেখে আমার বাবা দেশ স্বাধীন করেছিলেন স্বাধীনতা ব্যর্থ হতে পারে না, এ সফল হবে, সেই সফলতা বাংলাদেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে প্রতিটি মানুষের ঘরে পৌঁছাবে তাদের জীবন উন্নত হবে।

তিনি বলেন, অনেকে আছেন তাৎক্ষণিকভাবে কিছু পাওয়ার জন্য যারা অস্থির হয়ে পড়ে, তারা যে কোন দুঃসময় দেখলে ঘাবড়িয়ে যায়, ভয় পেয়ে যায়। সেটা আসে তাদের মধ্যে যাদের মধ্যে অর্থের লোলুপতা থাকে। যারা রাজনীতির মধ্যে দিয়ে ব্যাপক ধন সম্পদ কামাই করে শুধু ওই অর্থের লোলুপতা নিয়েই বাঁচে তারা দুঃসময়ে দাঁড়াতে পারে না তারা আত্মসমর্পণ করে। যারা এর ঊর্ধ্বে উঠতে পারে তারা যে কোন বাঁধা আসুক তারা অতিক্রম করতে পারে, এই কারণে যে সততাই শক্তি। আর সততা দিয়েই এগিয়ে যাওয়া যায়। সেটাই বড় সম্পদ। ধন দৌলত চিরদিন থাকে না।