ঢাকা, বৃহস্পতিবার ২১ই নভেম্বর ২০২৪ , বাংলা - 

অঢেল সম্পদ মিল্টনের:টাকায় ধামাচাপা

স্টাফ রিপোর্টার।।ঢাকাপ্রেস২৪.কম

2021-07-31, 12.00 AM
অঢেল সম্পদ মিল্টনের:টাকায় ধামাচাপা

দুর্নীতি রোধে সরকারের উচ্চ পর্যায় থেকে বারবার কঠোর পদক্ষেপের কথা জানালেও কিছুতেই যেন থামানো যাচ্ছেনা ফরিদগঞ্জ উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) মিল্টন দস্তিদারের দুর্নীতি। আঙ্গুল ফুলে কলা গাছ, রূপকথার আলাদিনের চেরাগের কল্প কাহিনীকেও যেন হার মানিয়েছে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন এই কর্মকর্তা। মাত্র ১০ বছরে নানা অনিয়মের মাধ্যমে অর্জন করেছে কোটি কোটি টাকা। এসব বিষয় নিয়ে তদন্তে নেমেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। তবে সেই তদন্ত আটকে দিতে সেখানেও জোর  তদবীর চালাচ্ছেন বলে দুদকের একটি গোপন সুত্রে জানা গেছে। সম্প্রতি কয়েকটি গণমাধ্যমে এই বিষয়ে সংবাদ প্রকাশ হওয়ায় বিষয়টি ধামাচাপা দিতে স্থানীয় গণমাধ্যমকর্মীদের পেছনে দেদারছে টাকা ঢালছেন এই কর্মকর্তা। মিল্টন দস্তিদারের একাধিক বিশ্বস্ত লোকের মারফতে জানা গেছে একজন গোয়েন্দা (ডিবি) কর্মকর্তা ও স্থানীয় কতিপয় ব্যক্তির মাধ্যমে এসব ধামাচাপার কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন।     

নাম প্রকাশ না করার শর্তে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) এক কর্মকর্তা জানান পিআইও মিল্টন দস্তিদার দুর্নীতির মাধ্যমে অনেক কালো টাকা আয় করেছেন বলে শুনেছি বিষয়টি তদন্ত চলছে দোষী প্রমানিত হলে খুব শীঘ্রই তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।       

জানা যায় ২০১২ সালের শুরুর দিকে ফেনী জেলাতে উপজেলা প্রকল্প কর্মকর্তা হিসেবে যোগদান করেন মিল্টন দস্তিদার।  বর্তমানে চাঁদপুর জেলার ফরিদগঞ্জ উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। চাকরীর এই ১০ বছওে তিনি বিপুল পরিমান সম্পদের মালিক হয়েছেন। অভিযোগ রয়েছে, পটিয়া উপজেলা ও নগরে তার নিজের নামে, স্ত্রী, নিজের ভাই ও বৌয়ের ভাই এর নামে রয়েছে নামে-বেনামে ফ্ল্যাট, জায়গা-জমি এবং বিভিন্ন ব্যাংকে রয়েছে কোটি কোটি টাকার সঞ্চয়পত্র, ও এফডিআর। শুধু তাই নয় প্রায় দেড় কোটি টাকা ব্যয়ে চট্টগ্রাম নগরীর দেব পাহাড় এলাকায় সিএ প্রপার্টি ডেভেলপমেন্ট লিমিটেডের (সিপিডিএল) কাছ থেকে কিনেছেন ডুপ্লেক্স ফ্ল্যাট ।

সেখানে আরো  প্রায় অর্ধকোটি টাকা খরচ করে করেছেন সাজ-সজ্জা। জেলার  পটিয়া উপজেলার মধ্যম হাইদগাঁওয়ে নিজ গ্রামের বাড়িতে দৃষ্টিনন্দন ‘অরণ্য নীড়’ নামে তিনতলা বাড়ি রয়েছে তার। পটিয়া পৌরসভা বাইপাস এলাকায় ও নগরের বেশ কয়েকটি এলাকায় রয়েছে নিজের নামে ও পরিবারের সদস্যেদের নামে জমি। সম্প্রতি চট্টগ্রামের পটিয়ায় নিজ বাড়িতে কিনেছেন ১৮ শতক জায়গা যার বাজার মুল্যও  কোটি টাকা উপরে।

এছাড়াও , ইউনিয়ন ব্যাংক হাটহাজারী রোড সরকারহাট শাখা, ন্যাশনাল ব্যাংক জুবলী রোড শাখাসহ একাধিক ব্যাংকে রয়েছে তার নিজ নামে, স্ত্রী ও বাবার নামে একাধিক একাউন্ট ও সঞ্চয়পত্র। এছাড়া তার স্ত্রী'র ভাই এর নামে কয়েক কোটি টাকার ডিপিএস ও এফডিআর রয়েছে এই কর্মকর্তার। একইসঙ্গে মিল্টনের  বিরুদ্ধে ভারতে অর্থপাচারের গুঞ্জনও রয়েছে বেশ।

অভিযোগ রয়েছে, ২০২০ সালের মাঝামাঝি সময়ে বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া এক নারীকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে অবৈধ সম্পর্কের অভিযোগ উঠেছিলো মিল্টন দস্তিদারের বিরুদ্ধে চট্টগ্রামের কোতোয়ালী থানায়। এ ঘটনায় চট্টগ্রামে রূম্পা নামের এক ব্যাংক কর্মকর্তার মধ্যস্থতায় থানায় মুচলেকা দিয়ে ছাড়া পান এই কর্মকর্তা। ভুক্তভোগী ওই নারীকে এককালীন প্রায় ২৫ লাখ টাকা দিয়ে 'সমাধান' হয়েছিল সেই অভিযোগের।
এসব অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাঁদপুর জেলার ফরিদগঞ্জ উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) মিল্টন দস্তিদারের মুঠোফোনে একাধিকবার কল করেও কথা বলা সম্ভব হয়নি। মোবাইলে ও হোয়াটসঅ্যাপে বার্তা দিয়েও কোন সাড়া পাওয়া যায়নি।