সম্প্রতি চট্টগ্রাম বিশ¦িবদ্যালয়ের ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদের ‘ব্যুরো অব বিজনেস রিচার্স ’ কর্তৃক আয়োজিত ‘জীবন ও জীবিকার সুরক্ষায় জাতীয় বাজেট ২০২১-২০২২: সুযোগ ও চ্যালেঞ্জ’ শিরোনামে এক ভার্চুয়াল সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ফেসবুক পেইজে সরাসরি প্রচারিত হয়। ওয়েবিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বিশ¦িবদ্যালয়ের মাননীয় উপাচার্য প্রফেসর ড. শিরীণ আখতার। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপ-উপচার্য প্রফেসর বেনু কুমার দে। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন অ্যাকাউন্টিং বিভাগের প্রফেসর, বাংলাদেশ হাউস বিল্ডিং ফাইন্যান্স কর্পোরেশনের চেয়ারম্যান ও ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেড এর এক্সিকিউটিভ কমিটির চেয়ারম্যান ড. মোঃ সেলিম উদ্দিন। মূখ্য আলোচক হিসেবে অংশগ্রহণ করেন চট্টগ্রাম চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি জনাব মাহবুবুল আলম। এ সময়ে অন্যান্যের মধ্যে চট্টগ্রাম বিশ¦িবদ্যালয়ের বিভিন্ন অনুষদের ডিনবৃন্দ, শিক্ষকবৃন্দ, ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদের ছয়টি বিভাগের সম্মানিত সভাপতিম-লী, পিএইডি ও এম.ফিল গবেষকগণ অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন। ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদের ডিন প্রফেসর এস এম সালামত উল্ল্যাহ ভূঁইয়ার সভাপতিত্বে ওয়েবিনারটি সঞ্চালনা করেন ব্যুরোর পরিচালক প্রফেসর ড. এস. এম. শোহরাবুদ্দীন।
ওয়েবিনারে ২০২১-২২ অর্থবছরের বাজেটে জীবন ও জীবিকার সুন্দর সমন্বয়ের নানাবিধ দিক নিয়ে প্রাণবন্ত আলোচনা হয়। প্রধান অতিথির বক্তৃতায় উপাচার্য প্রফেসর ড. শিরীণ আখতার প্রণিত বাজেটের স্বাস্থ্য, শিক্ষা, কৃষি, শিল্প ও নতুন কর্মসংস্থানসৃষ্টিসহ বিভিন্ন বিষয়ে আলোকপাত করেন। তিনি দৃঢ়ভাবে আশাবাদ ব্যক্ত করেন যে, কোভিড -১৯ মহামারি কারণে দেশের অর্থনীতিতে কিছুটা বিরূপ প্রভাব পড়লেও টেকসই ও অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়নের মাধ্যমে বাংলাদেশ তার চলমান আর্থিক প্রবৃদ্ধির হার ধরে রাখতে সক্ষম হবে। উপ-উপাচার্য প্রফেসর বেনু কুমার দে বলেন এ সেমিনারটি সরকারের বাজেট বাস্তবায়নে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ দিক-নির্দেশনা তুলে ধরবে।
অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় পর্যায়ে ব্যুরোর চেয়ারম্যান ড. মো: সেলিম উদ্দিন জাতীয় বাজেট ২০২১-২২ এর বিভিন্ন বরাদ্দ এবং এর সুযোগ ও চ্যালেঞ্জসমূহ উপস্থাপন করেন। ড. সেলিম তাঁর বক্তব্যে জাতীয় বাজেটের স্লোগান- ‘জীবন ও জীবিকার সুরক্ষায় বাজেট’- এর প্রশংসা করেন। কোভিড মহামারির অভিঘাত মোকাবিলায় এবারের বাজেটটি সরকারের কার্যকরী আর্থিক কৌশল উল্লেখ করে তিনি বলেন, স্বাস্থ্য, কৃষি, কর্মসংস্থান সৃষ্টি এবং সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর উপর বিশেষ জোর দেয়ার পাশাপাশি কর হ্রাসের মাধ্যমে অর্থনৈতিক কর্মকা-ের পুনরুদ্ধার ও গতিশীলতা আনয়নের বিষয়টি অগ্রাধিকার পেয়েছে। তিনি পাওয়ার পয়েন্ট উপস্থাপনার মাধ্যমে বিভিন্ন খাতের আয়, ব্যয় ও ঘাটতি বাজেটের বিষয়টি তুলে ধরেন। বাজেট বিশ্লেষণে ড. সেলিম বলেন, রাজস্ব আহরণে নি¤œগতি, μমবর্ধমান আয় বৈষম্য, শিক্ষাখাতে অপ্রতুল বরাদ্দ এ বাজেটের অন্যতম চ্যালেঞ্জ।
পরবর্তীতে, মূখ্য আলোচনায় জনাব মাহবুুবুল আলম উপস্থাপিত বাজেটের উপর তাঁর প্রাজ্ঞ মতামত তুলে ধরেন। তিনি বলেন প্রণীত বাজেট একটি দূরদর্শী বাজেট। এ বাজেটে ঘোষিত প্রণোদনার যথাযথ ব্যবহার শিল্প ও ব্যবসাকে অধিকতর চাঙ্গা করবে। তিনি সরকারের ঘোষিত বিভিন্ন প্রণোদনা প্যাকেজসমূহের অর্থ কুটির, ক্ষুদ্র, ছোট, মাঝারি শিল্প (সিএমএসএমই) ও অনানুষ্ঠানিক খাতে বিতরণের জন্য সুপরিকল্পিত নীতিমালা প্রণয়নে বিশেষ ভাবে জোর দেন। এছাড়া তিনি বাজেট বাস্তবায়নে দক্ষতা, স্বচ্ছতা, দায়বদ্ধতা ও সুশাসনের উপর গুরুত্ব আরোপ করেন। বন্দর নগরী চট্টগ্রামকে দেশের বাণিজ্যিক রাজধানী হিসেবে উল্লেখপূর্বক তিনি বলেন মিরসরাইয়ে নির্মাণাধীন অর্থনৈতিক অঞ্চল হতে কাঙ্খিত সুফল পেতে হলে বৃহত্তর চট্টগ্রামে চলমান মেগা প্রজেক্টগুলো সফল বাস্তবায়ন, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ককে আট লেনে উন্নীতকরণ ও ২০২৪ সালের মধ্যে অন্তত একটি বে-টার্মিনাল নির্মাণ করতে হবে। পরবর্তীতে প্রস্তাবিত বাজেটের উপর ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদের সিনিয়র শিক্ষকগণ তাদের মূল্যবান মতামত ব্যক্ত করেন এবং ড. সেলিম ও জনাব মাহবুব অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণকারী শিক্ষকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন। পরিশেষে প্রফেসর এস এম সালামত উল্ল্যাহ ভূঁইয়া সমাপনী বক্তব্য প্রদান করেন এবং অনুষ্ঠানকে সফল করার জন্য সংশ্লিষ্ট সকলকে ধন্যবাদ জানিয়ে ওয়েবিনারের সমাপ্তি ঘোষণা করেন।