বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ৫৩ দিন পর হাসপাতাল থেকে গুলশানের বাসায় ফিরেছেন শনিবার রাতে। রোববার সারাদিন তিনি চিকিৎসকদের পর্যবেক্ষণে ছিলেন। হাসপাতালের মতো বাসায় খালেদা জিয়া ভালো আছেন বলে জানিয়েছেন তার চিকিৎসক টিমের সদস্যরা। চিকিৎসক টিমের সদস্য ও বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান প্রফেসর ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন রোববার (২০ জুন) সন্ধ্যা পৌনে ৬টায় বলেন, ম্যাডামের বিষয়ে শনিবার রাতে বিস্তারিত বলা হয়েছে। আজ নতুন করে তেমন কিছু বলার নেই। তিনি হাসপাতালের মতোই বাসায় আছেন। বাসায় ফলোআপ যেগুলো দরকার সেগুলো করা হচ্ছে। রাতে আবার চিকিৎসক টিম তাকে দেখতে যাবে। বাসায় ম্যাডামের জন্য নার্স আছেন। এছাড়া দেখাশোনা করার জন্য অন্যরাও আছেন।চিকিৎসকদের পরামর্শমতো খালেদা জিয়া খাওয়া-দাওয়া করছেন বলে জানান ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন।
খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসক অধ্যাপক ডা. এফ এম সিদ্দিকী সাংবাদিকদের বলেন, ‘খালেদা জিয়া স্ট্যাবল থাকলেও সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে যাননি। আমরা বলেছি, তিনি স্ট্যাবল আছেন। যখন আমরা কোনো রোগীকে বলি তিনি স্টাবল আছেন, তখন বুঝতে হবে যে, তার যে আসল অসুখ সেই অসুখটা একটা স্থিতি অবস্থায় এসেছে। তিনি কিউর হয়ে যাননি। ’
ডা. এফ এম সিদ্দিকী আরও বলেন, ‘গত ২৭ এপ্রিল ওনাকে (খালেদা জিয়া) হাসপাতালে নিয়ে যাই। সেদিন সিটি স্ক্যানসহ সমস্ত পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে আমরা দেখতে পাই যে, ওনার বুকে পানি এসেছে, সেটা হার্ট ফেইলিওয়র সংক্রান্ত। করোনার একটা জটিলতা হচ্ছে যে, হার্ট ফেইল করতে পারে। প্রথম তিন দিন চিকিৎসা দেওয়ার পর ওনার অবস্থা কিছুটা উন্নতি হলেও তারপরেই করোনার সবচেয়ে মারাত্মক যে অবস্থা, সাইটোকম স্টোম হয়। সেই সাইটোকম স্টোম যখন শুরু হলো, উনি জ্বরে আবার আক্রান্ত হলেন। ওনার দুই দিকের বুকে পানি এলো এবং হার্টের যে পেরিপাইডিয়াল কেভিটি সেখানে পানি আসলো। পানিটা আসতে শুরু করলো বন্যার স্রোতের মতো এবং একদিনের মধ্যে শ্বাসকষ্ট হয়ে অক্সিজেন স্যাচুরেশন ফল করলো। আমরা দ্রুত ওই সময় তাকে পরীক্ষা করে দেখলাম, বুকের দুদিকে অর্ধেক বুকে পানি চলে এসেছে অক্সিজেন কমে গেছে, প্রচণ্ড শ্বাসকষ্ট। ওই অবস্থায় আমরা ওনাকে সিসিইউতে নিয়ে যাই। আমরা যারা বিশেষজ্ঞ ছিলাম, স্বাস্থ্য রিভিউ করে তাৎক্ষণিক সিদ্ধান্ত নিয়েছি যে, ওনাকে বাসায় নিতে হবে। ’
তিনি আরও বলেন, ‘কেবিনে আসার পরে দেখলাম উনি হসপিটালের ইনফেকশনে আক্রান্ত হচ্ছিলেন। তখন ওনার ব্লাড কালচার করে দেখা যাচ্ছে যে, হসপিটালে যে সমস্ত জীবাণু থাকে সেগুলো ম্যাডামকে আক্রমণ করছে। দেখা যাচ্ছে হাসপাতালের কিছু নার্স, ডাক্তার ও হসপিটাল স্টাফ ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট কোভিডে আক্রান্ত হচ্ছে। সেজন্য আমরা তাকে বাসায় নিয়ে এসেছি। দুই থেকে তিন সপ্তাহ পর হয়তো আবার হাসপাতালে নেওয়া লাগতে পারে। ’