ঢাকা, বৃহস্পতিবার ২১ই নভেম্বর ২০২৪ , বাংলা - 

নাসির মাহমুদ: ঠিকাদার থেকে আবাসন ব্যবসায়ী

স্টাফ রিপোর্টার।।ঢাকাপ্রেস২৪.কম

2021-06-19, 12.00 AM
নাসির মাহমুদ: ঠিকাদার থেকে আবাসন ব্যবসায়ী

নাসির উদ্দিন মাহমুদ ওরফে নাসির ইউ মাহমুদ। চলচ্চিত্রের অভিনয়শিল্পী পরীমনিকে ধর্ষণ ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগের কারণে সবার নজর এখন স্বল্পপরিচিত অথচ প্রভাবশালী এই ব্যবসায়ীর দিকে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, নাসির উদ্দিন দেশে আবাসন খাতে একজন প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী। কুঞ্জ ডেভেলাপারস লিমিটেড নামে একটি আবাসন ও নির্মাণ প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান তিনি। ঢাকাসহ বিভিন্ন জায়গায় এ প্রতিষ্ঠানটির আবাসন প্রকল্প আছে।

নাসির মাহমুদ দেশের প্রথম শ্রেণির ঠিকাদারদেরও একজন। তার ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের নাম ‘মাহমুদ বিল্ডার্স অ্যান্ড অ্যাসোসিয়েট লিমিটেড’। রাজনৈতিক অঙ্গনেও তার ব্যাপক প্রভাব। তিনি জাতীয় পার্টির (এরশাদ) প্রেসিডিয়াম সদস্যদের একজন।

ছাত্রাবস্থায় এরশাদের শাসনামলে তিনি জাতীয় পার্টির ছাত্র সংগঠন ‘নতুন বাংলা ছাত্র সমাজের’ ছাত্র নেতা ছিলেন। এছাড়া তিনি ঢাকা ফার্স্ট ডিভিশন ফুটবল লীগের সাবেক ফুটবলারও। পরে রাজধানীর উত্তরা ক্লাবসহ বিভিন্ন সংগঠনের নেতৃত্ব দেন।

ষাটোর্ধ্বে নাসির ইউ মাহমুদ দুই সন্তানের জনক।

ঝালকাঠি সদর পৌরসভার এক নং ওয়ার্ডের চেয়ারম্যান বাড়িতে নাসিরের জন্ম। তার বাবা হারুন অর রশিদ সহকারী পুলিশ সুপার হিসেবে অবসরে যান। চাচা বেলায়েত হোসেন এই পৌরসভার বিএনপি ও আওয়ামী লীগের টিকেটে দুই দফা নির্বাচিত চেয়ারম্যান ছিলেন।

নাসির মাহমুদ: ঠিকাদার থেকে আবাসন ব্যবসায়ী

নাসির পড়াশোনা করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে তিনি মৃত্তিকাবিজ্ঞান বিভাগে এমএসসি ডিগ্রি নেওয়ার পাশাপাশি এমবিএ করেন।

কুঞ্জ ডেভেলপারস লিমিডেটের ওয়েবসাইটে দেয়া তথ্য অনুযায়ী, নাসির ১৯৮১-৮২ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সলিমুল্লাহ হলের ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। পরে তিনি ওই আবাসিক হলের স্টুডেন্টস অ্যালামনাই অ্যাসিয়েশনের ভাইস প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন।

ছাত্রজীবন শেষে সে সময়ের ক্ষমতাসীন দল জাতীয় পার্টিতে যোগ দেয়ায় তার ঠিকাদারি ব্যবসা ফুলেফেঁপে ওঠে। পিডব্লিউডি ও এলজিইডিসহ দেশের সরকারি, আধা-সরকারি ও স্বায়ত্বশাসিত বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের উন্নয়ন ও ক্রয়কাজে ঠিকাদার হিসেবে সেবা সরবরাহ করতেন নাসির। এভাবে তিনি দেশের একজন প্রথম সারির ঠিকাদার হিসাবে সরকারি দপ্তরে বিবেচিত হতে থাকেন।

২০০১ সালে জাতীয় পার্টি ভেঙে গেলে তিনি নাজিউর রহমান মঞ্জুরের বাংলাদেশের জাতীয় পার্টি (বিজেপি) অংশে যোগ দেন, যে দলটি বিএনপি-জামায়াত নেতৃত্বাধীন চার দলীয় ক্ষমতাসীন জোটের শরিক হয়েছিল। পরে ২০০৮ সালে তিনি এরশাদের জাতীয় পার্টিতে ফিরে আসেন এবং দলটির প্রেসিডিয়াম সদস্য হন।

ঠিকাদারি ব্যবসার পাশাপাশি নাসির ১৯৯৩ সালে যুক্ত হন আবাসন খাতের ব্যবসায়। গঠন করেন কুঞ্জ ডেভেলাপারস লিমিটেড। তার এই আবাসন প্রতিষ্ঠানটি দেশে আবাসান ব্যবসায়ী মালিকদের সংগঠন রিয়েল অ্যাস্টেট অ্যান্ড হাউজিং অ্যাসোসিয়েশনের (রিহ্যাব) সদস্য।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে দেশে আবাসন খাতের ব্যবসায়িক সংগঠন রিয়েল এস্টেট অ্যান্ড হাউজিং অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (রিহ্যাব) সভাপতি আলমগীর শাসুল আলিামিন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমরা তাকে চিনি। তিনি একাধিকবার উত্তরা ক্লাবের সভাপতি ছিলেন। ওই ক্লাবে আমি নিজেও একজন সসদ্য। তাছাড়া তিনি রিহ্যাবেরও সদস্য হওয়ায় সেই সূত্রে তাকে তো চিনতামই। তিনি আবাসনখাতের একজন প্রতিষ্ঠিত উদ্যোক্তা।’

এ ঘটনায় রিহ্যাব কোনো ভাবমূর্তি সংকটে পড়ল কি-না জানতে চাইলে রিহ্যাব সভাপতি বলেন, ‘একজন সদস্যের ব্যক্তিগত বিষয় নিয়ে ১২শ সদস্যের সংগঠন রিহ্যাব মোটেও ভাবমূর্তি সংকটে ভুগছে না। এখানে দেশের শিক্ষিত ও প্রতিষ্ঠিত এবং স্বনামধন্য ব্যবসায়ীরা জায়গা পেয়েছেন।’