ডাক সেবা মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।তিনি বলেছেন, একেবারে উপজেলা পর্যায়ে ইউনিয়ন পর্যায়ে যেখানে ডাকঘর আছে সেখানেই চিলিন সিস্টেম বা কুলিং সিস্টেম ব্যবস্থা রাখতে হবে। যাতে যেকোনো পচনশীল দ্রব্যতরকারি ফলমূল রান্না করা খাবার পৌঁছে দেয়ার ব্যবস্থা থাকে।বৃহস্পতিবার (২৭ মে) সকালে রাজধানীর আগারগাঁওয়ের নবনির্মিত ডাক ভবনের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন।গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে প্রধানমন্ত্রী ভবনের উদ্বোধন করেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা সমগ্র বাংলাদেশের প্রায় ৫ হাজার ২২৭ টির মত ডিজিটাল সেন্টার প্রতিষ্ঠা করেছিলাম। পর্যায়ক্রমে প্রতিটি জায়গায় ডিজিটাল সেন্টার গড়ে তুলি। কিন্তু প্রথম শুরু করেছিলাম সেই সাথে ডাকঘর গুলি যেন আধুনিক করা যায় সেই উদ্যোগ গ্রহণ করেছিলাম। ডিজিটাল সেন্টার নির্মাণ করায় উদ্যোক্তা মহিলা ও পুরুষদের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হচ্ছে। গ্রাম পর্যায় পর্যন্ত নতুনভাবে কাজের সুযোগ সৃষ্টি হচ্ছে। অনেক ধরনের সেবা সেখান থেকে নিতে পারছে। ডিজিটাল সেন্টার থেকে সেবা নিচ্ছে এখন ডাকঘর ডিজিটাল সেবা কেন্দ্র থেকে সেবা নিতে পারবে।
তিনি বলেন, ডাকের সিস্টেমটা শুধু ডিজিটালাইজড করা না, এটা আরো মানুষের সেবা যাতে দিতে পারে সেই ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য ১১৮ টি মেইল গাড়ি সংযোগ করেছি, তাছাড়া গাড়ি চালানোর জন্য নারী-পুরুষদের ট্রেনিং দেওয়া হচ্ছে। এখন মেয়েরাও ট্রেন চালায়। তাছাড়া এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় পাঠানো বিশেষ করে যেগুলো পচনশীল পণ্য সেগুলো পাঠানোর জন্য ইতোমধ্যে এয়ার কুলিং সিস্টেম যাতে থাকে অর্থাৎ কোন তাপমাত্রায় কোন ধরনের ফলমূল তরি-তরকারি বা কোন পণ্য ভালো থাকবে সেই ধরনের গাড়ি কিনে ডাকের মাধ্যমে মানুষ যেন তাদের পণ্যগুলি পায় সেই ব্যবস্থাটাও আমরা নিচ্ছি। শুধু গাড়ি কিনলে হবে না চেম্বার দরকার সেজন্য ডাকঘর গুলিতে এধরনের কুলিং সিস্টেম চেম্বার যাতে তৈরি হয় তার ব্যবস্থা অর্থাৎ ওয়ারহাউজ সেগুলো নির্মাণ হচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, অত্যাধুনিক ১৪ টি অত্যাধুনিক মেইল প্রসেসিং এবং লজিস্টিক সার্ভিস সেন্টার নির্মাণের কাজ প্রায় শেষ হচ্ছে। আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে এটা প্রথমে জেলা এবং বিভাগীয় শহরে করে দিচ্ছি, ডাক বিভাগকে বলব আপনাদের লক্ষ্য থাকবে একেবারে উপজেলা থেকে ইউনিয়ন পর্যন্ত অর্থাৎ ডাকঘর যেখানে যেখানে আছে সেখানে যেন এ ধরনের ব্যবস্থা থাকে।
প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, করোনাভাইরাসের পর এখন বেশিরভাগই অনলাইনে ক্রয় বিক্রয় চলছে। পচনশীল জিনিস অর্থাৎ খাদ্যদ্রব্য থেকে শুরু করে ফলমূল তরিতরকারি এগুলো যেন ডাকের মাধ্যমে পাঠানো যায়। যেমন আমি যদি এখন মনে করি এখানে রান্না করে আরেক জায়গায় খাবার পাঠাবো বা আমার আত্মীয়কে পাঠাবো সেটা ও যেন পাঠাতে পারে সেজন্য এই চিলিং সিস্টেমটা খুব দরকার, অর্থাৎ কুলিং সিস্টেম। সেই ধরনের তাপমাত্রা বা কুলিং সিস্টেম করে দেয়া যাতে সেখানে এই জিনিসটা নষ্ট না হয়। আর যার হাতে যাবে, পৌঁছাবে সেই পৌঁছানোর ব্যবস্থা করে দেয়া। সেখানে প্রতিটি উপজেলায় ইউনিয়ন পর্যায়ে পর্যন্ত এরকম সেন্টার থাকবে। আর সেখান থেকে যারা নিয়ে যাবে নিয়ে যাওয়ার জন্য তাদের কুলিং সিস্টেমের ছোট ছোট পোর্টঅ্যাবল বক্স ব্যবহার করে পৌঁছে দিতে পারবে। সেভাবেই কিন্তু ডাকের সেবাটিকে জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে হবে। সেই ব্যবস্থাটাই এখন আপনাদের নিতে হবে। হ্যাঁ ধাপে ধাপে আমরা এগোচ্ছি। এখন আধুনিক সুন্দর ভবন হয়ে গেল। ইতোমধ্যে ৩৮ টি মডেল ডাকঘর নির্মাণকাজের হাতে নিয়েছি। আমি চাইবো সারা বাংলাদেশে এটা করে দিতে, তাহলে মানুষ বিশেষ করে ঘরে বসে অনেকে কাজ করে পয়সা উপার্জন করতে পারবে। মানুষের কর্মসংস্থান যেমন হবে মানুষ সেবাটাও পাবে। সেই ব্যবস্থাটা আমাদের করতে হবে।
তিনি বলেন, বিভিন্ন দেশের সাথে চুক্তি করছি, ইউনিভার্সাল পোস্টাল ইউনিয়নের রূপরেখার আওতায়। দ্বিপাক্ষিক চুক্তি হচ্ছে। যেহেতু অনলাইন করায় বিক্রয় জনপ্রিয়তা লাভ করছে, কাজেই ডাকঘর পিছিয়ে থাকলে চলবে না। ডাক বিভাগকে এ ব্যাপারে আরো দ্রুত ব্যবস্থা নিতে হবে।