স্ত্রীর সঙ্গে পরকীয়ার সম্পর্ক রয়েছে এমন সন্দেহে বাকবিতণ্ডার জেরে রাজধানীর দক্ষিণখানের সরদার বাড়ি জামে মসজিদের ইমাম আব্দুর রহমানের হাতে খুন হন স্থানীয় যুবক আজহার। ঘটনার দিন এশার নামাজের পর থেকে ভোর পর্যন্ত আজহারকে কুপিয়ে ছয় টুকরা করেন ইমাম। এরপর মসজিদের সেপটিক ট্যাংকে টুকরা করা মরদেহ লুকিয়ে রাখেন।
মঙ্গলবার বিকালে কারওয়ান বাজার র্যাব মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলন করে এ তথ্য জানান র্যাব-১ এর অধিনায়ক লে. কর্নেল মো. আব্দুল মোত্তাকিম।স্থানীয় গার্মেন্টস কর্মী আজহার ১৯ তারিখ থেকে নিখোঁজ ছিলেন। এমন ঘটনায় অনুসন্ধান শুরু করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। পরে র্যাব ইমামকে আটক করে এবং জিজ্ঞাসাবাদে হত্যার ঘটনা জানতে পারে। এ সময় অভিযুক্তের কাছ থেকে হত্যায় ব্যবহৃত তিনটি চাকু ও মোবাইল উদ্ধার করা হয়।
র্যাব জানায়, মাওলানা মো. আব্দুর রহমান সরদারবাড়ি জামে মসজিদে ৩৩ বছর ইমামতি করে আসছিলেন। নিহত আজহারের ছেলে আরিয়ান মসজিদটির মক্তবে পড়াশোনা করত। আজহারও তার কাছে কুরআন শিক্ষা গ্রহণ করত। এই সুবাদে তাদের মধ্যে পারিবারিক সম্পর্ক ছিল। ১৯ মে মাওলানা আব্দুর রহমানের সঙ্গে আজহারের কথা কাটাকাটি হয়। কথাকাটির এক পর্যায়ে ক্ষিপ্ত হয়ে আজহারের গলার ডানপাশে ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করেন আব্দুর রহমান। পরে হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ধামাচাপা দিতে মরদেহ টুকরো টুকরো করে মসজিদের সেপটিক ট্যাংকে লুকিয়ে রাখেন। এরপর থেকে ইমাম আব্দুর রহমান মসজিদে নিজের রুমেই অবস্থান করছিলেন।
পরকীয়ার কোনো ঘটনা ছিল কি না জানতে চাইলে লে. কর্নেল মোত্তাকিম জানান, এই ঘটনায় পরকীয়ার কোনো ঘটনা ঘটেছে কি না তা আমরা যাচাই বাছাই করছি। এখনই কিছু বলতে পারছি না। তবে ইমাম আব্দুর রহমান বলেছেন, আজহার তাকে ভয়ভীতি দেখিয়েছে এবং বলেছে তার স্ত্রীর দিকে আমি (আব্দুর রহমান) কু-দৃষ্টি দিয়েছি। এই কারণে তার সঙ্গে বাকবিতণ্ডা হয়। এরপরই রাগান্বিত হয়ে হত্যার ঘটনা সংগঠিত হয়। নিহতের স্ত্রী কি র্যাব হেফাজতে- এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, আমরা কিছু সময় আগে তার স্ত্রীকে আমাদের হেফাজতে নিয়েছি। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। বিস্তারিত পরে জানানো সম্ভব হবে।