টেকসই ও প্রকৃতিভিত্তিক সমাধানের মাধ্যমে সমৃদ্ধ ভবিষ্যত গড়তে কমনওয়েলথকে অগ্রণী ভূমিকা পালন করার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।সোমবার (২৪ মে) গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সে এশিয়ার আঞ্চলিক কমনওয়েলথ সরকারপ্রধানদের গোলটেবিল সভায় (ভার্চ্যুয়াল) এ আহ্বান জানান শেখ হাসিনা।রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের বড় ছেলে ওয়েলস চার্লসের প্রিন্স ফিলিপ আর্থার জর্জ এ সভা আহ্বান করেন।প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি সমৃদ্ধ ভবিষ্যতের জন্য টেকসই ও প্রকৃতিভিত্তিক সমাধানের জন্য কমনওয়েলথ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।কমনওয়েলথ সদস্য দেশ এবং ক্লাইমেট ভালনারেবল ফোরামের সভাপতি হিসেবে কপ-২৬ জলবায়ু সম্মেলন সামনে রেখে কয়েকটি ব্যবস্থা নেওয়ার পরামর্শ দেন প্রধানমন্ত্রী।
কার্যকর ও দক্ষ উপায়ে আরও বেশি স্থিতিশীল এবং উন্নত সমৃদ্ধ জীবন গড়তে বিশ্বজুড়ে সবুজ ও টেকসই অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি এবং সার্কুলার অর্থনীতিতে বিনিয়োগ বাড়ানোর পরামর্শ দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোকে প্রাধান্য দিয়ে কমনওয়েলথ সদস্য দেশগুলোর মধ্যে জ্ঞান ও প্রযুক্তি হস্তান্তরের বিধানসহ কার্বন নিরপেক্ষ প্রযুক্তির ওপর জোর দেওয়ার আহ্বান জানান শেখ হাসিনা।
অভিযোজনে সহায়তা করতে ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোকে জলবায়ু অর্থায়ন করতে বলেন প্রধানমন্ত্রী।
গৃহহীনদের আশ্রয় দেওয়ার দিকে সবাইকে মনোনিবেশ করার জন্য অনুরোধ জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, গৃহহীনদের আশ্রয় দেওয়া দারিদ্র্য বিমোচন এবং সুবিধাবঞ্চিত জনগণের জলবায়ু ক্ষতি হ্রাসের সর্বোত্তম কৌশল।
জলবায়ুর ক্ষতি প্রশমন ও অভিযোজনের ক্ষেত্রে বিশ্বে বাংলাদেশের প্রশংসিত হওয়ার কথা তুলে ধরে সরকারপ্রধান বলেন, ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া এবং সম্পদের সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও বাংলাদেশ বিশ্বে অ্যাডাপটেশন লিডার হিসেবে আর্বিভূত হয়েছে। বাংলাদেশ প্রতি বছর জলবায়ু প্রশমন ও অভিযোজন ব্যবস্থার জন্য নিজস্ব সম্পদ থেকে ৫ বিলিয়ন ডলার ব্যয় করছে।
তিনি বলেন, জলবায়ু ক্ষতিগ্রস্ত ফোরাম-সিভিএফের চেয়ারম্যান এবং জিসিএর দক্ষিণ এশীয় আঞ্চলিক কার্যালয়ের হোস্ট হিসেবে আমরা ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোর স্বার্থ রক্ষা এবং স্থানীয়ভাবে অভিযোজন সমাধান ও নদীভাঙনের কারণে উচ্ছেদ হওয়া লোকদের বাড়িঘর থেকে পুনর্বাসনের চেষ্টা করছি।
কার্বন নিঃসরণ কমানো ও বৃক্ষরোপণসহ জলবায়ু পরিবর্তন ঠেকাতে বাংলাদেশ সরকারের উদ্যোগের কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, বঙ্গবন্ধুর জন্ম শতবার্ষিকী উপলক্ষে জলবায়ু ক্ষতিকর প্রভাব মোকাবিলায় বাংলাদেশ ‘মুজিব ক্লাইমেট প্রসপারিটি ইনিশিয়েটিভ’ নিয়েছে। এই উদ্যোগের আওতায় বাংলাদেশ কম কার্বন নিঃসরণ উন্নয়নের পথে এগিয়ে যাচ্ছে। আমরা ২০৪১ সালের মধ্যে ৪০ গিগা ওয়াট নবায়নযোগ্য জ্বালানি উৎপাদন এবং ৩০ মিলিয়ন বৃক্ষরোপণ করতে যাচ্ছি।
করোনা মহামারির কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, গোটা বিশ্ব অভূতপূর্ব ও অনিশ্চিত এক মহামারি পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশেও পরিস্থিতি একই। স্বাস্থ্য সংকটের বাইরেও এই মহামারি আরও অনেক চ্যালেঞ্জ সৃষ্টি করেছে। যার জন্য আমার সরকার জীবন ও জীবিকাকে প্রাধান্য দিয়ে নীতি এবং ব্যবস্থা নিছে। মহান আল্লাহর রহমতে বাংলাদেশ এই মহামারির ক্ষতিকর প্রভাব প্রশমিত করে আর্থ-সামাজিক অগ্রগতি অব্যাহত রাখতে সক্ষম হয়েছে।