নন্দীগ্রামে পরাজিত হয়েও তৃতীয়বারের মতো ২১৩ আসন নিয়ে ক্ষমতায় ফিরেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমত বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে মুখ্যমন্ত্রীর ক্ষমতা ধরে রাখতে আগামী ছয়মাসের মধ্যে কোনো কেন্দ্র থেকে জিতে আসতে হবে মমতাকে।সেই মর্মে তার পছন্দের কেন্দ্র দক্ষিণ কলকাতার ভবানীপুরেই ফিরছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পুরনো কেন্দ্র থেকেই ফের আরও একবার নির্বাচনে প্রার্থী হতে চলেছেন তিনি।
একুশের নির্বাচনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নন্দীগ্রামে প্রার্থী হওয়ায় ভবানীপুর বিধানসভা কেন্দ্র থেকে তৃণমূলের হয়ে লড়াই করেছিলেন শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়। বিজেপির তারকা প্রার্থী রুদ্রনীল ঘোষকে ২৮ হাজার ৭১৯ ভোটে হারিয়ে পরাজিত করেন তিনি। পরবর্তীতে মমতার মন্ত্রিসভায় কৃষিমন্ত্রীর দায়িত্ব পান।
তবে শুক্রবার (২১ মে) পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন ভবানীপুরের বর্তমান বিধায়ক শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়। তারপরেই জল্পনা শুরু হয় মমতাই কি এই কেন্দ্র থেকে প্রার্থী হচ্ছেন? সেই জল্পনার অবসান ঘটিয়ে শনিবার (২২ মে) এক প্রকার নিশ্চিত মমতাই ভবানীপুর থেকে প্রার্থী হচ্ছেন। তবে মন্ত্রী থাকছেন শোভনদেব।
এর পাশাপাশি এবারের একুশের নির্বাচনে ২৯৪টি আসনের মধ্যে ২৯২টি কেন্দ্রে ভোট হয়। মুর্শিদাবাদের জঙ্গিপুর এবং সামশেরগঞ্জে দুই বাম প্রার্থীর করোনার কারণে মৃত্যু হয়েছিল। ফলে সেখানেও ভোট বাকি। এছাড়া উত্তর ২৪ পরগনার খড়দহ কেন্দ্র থেকে এবারে জয়ী তৃণমূল প্রার্থী কাজল সিনহার করোনায় মৃত্যুর পর ওই কেন্দ্রের বিধায়ক পদ ফাঁকা। ফলে সেখানেও নির্বাচন হবে ছয়মাসের মধ্যেই।
অন্যদিকে, রাজ্যের অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্রকে অসুস্থার কারণে ভোটে প্রার্থী করেননি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তা সত্ত্বেও তার উপরই ফের অর্থ দফতরের ভরসা রেখেছেন মমতা। ফলে তাকে এবং কৃষিমন্ত্রী শোভনদেবকে কোনো কেন্দ্র থেকে জয়ী করে ফিরিয়ে আনতে হবে নেত্রীকে।
অমিত মিত্র বলেন, এবার নেত্রীই ঠিক করবেন, আমাদের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ কী হবে।
এদিন তৃণমূল সূত্রের খবর, খড়দহ বিধানসভা কেন্দ্রে প্রার্থী করা হবে শোভনদেবকে। তিনি তা সাদরে গ্রহণও করেছেন। বাকি মুর্শিদাবাদের দুটি কেন্দ্রর মধ্যে কোনো একটা কেন্দ্রে প্রার্থী হতে চলেছেন অমিত মিত্র।
এদিন তৃণমূলের মহাসচিব বলেন, আমরা সকলেই চেয়েছি ভবানীপুর কেন্দ্র থেকে নেত্রীই প্রার্থী হোক। সেখান থেকেই তিনি দু’বার জিতেছেন। তাই শোভনদেব নেত্রীকে এই আসনটি ছেড়ে দিয়েছেন। মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। তিনি জানিয়েছেন, শোভনদেববাবু মন্ত্রী থাকছেন। যে বিধানসভা কেন্দ্রগুলো ফাঁকা রয়েছে, তার মধ্যে কোনো একটি থেকে তিনি জিতে আসবেন শোভন।
২০১১ সালের বিধানসভা ভোটেও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেননি। সে সময় ভারতের রেলমন্ত্রী ছিলেন তিনি। পরে রেলমন্ত্রীর পদে ইস্তফা দিয়ে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে প্রথম শপথ নেন। ২০১১-তে ভবানীপুর থেকে জিতে বিধায়ক হয়েছিলেন সুব্রত বক্সী। তিনিও ওই বছর মমতার জন্য ভবানীপুর কেন্দ্র থেকে ইস্তফা দিয়েছিলেন। পরবর্তীতে সেই আসন থেকে ৫৪ হাজার ২১৩ ভোটে জিতে প্রথমবারের মতো ক্ষমতায় আসেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
তবে এবারে কবে ভোট হবে তা ঠিক হয়নি। ধারণা করা হচ্ছে আগামী জুলাইতে ভোট হতে চলেছে পশ্চিমবঙ্গে না হওয়া চার কেন্দ্রে।