অনুমতি না নিয়ে সরকারি নথির ছবি তোলার অভিযোগে দৈনিক প্রথম আলোর জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক রোজিনা ইসলামের বিরুদ্ধে শাহাবাগ থানায় দায়ের করা মামলায় পাঁচ দিনের রিমান্ড আবেদন না মঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত। এ বিষয়ে আগামী বৃহস্পতিবার জামিন শুনানি অনুষ্ঠিত হবে। মঙ্গলবার (১৮ মে) সকাল ১১ টা ৪০ মিনিটে ঢাকা মহানগর হাকিম মোহাম্মদ জসিম শুনানি শেষে এ আদেশ দেন। শুনানি শেষে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান রোজিনার আইনজীবী এহসানুল হক।
সাংবাদিকদের ব্রিফি করছেন রোজিনার আইনজীবী এহসানুল হক
এর আগে পেশাগত দায়িত্ব পালনের জন্য গতকাল সোমবার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে গেলে প্রথম আলোর জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক রোজিনা ইসলামকে সেখানে পাঁচ ঘণ্টার বেশি সময় আটকে রেখে হেনস্তা করা হয়। এই খবর পেয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমের সাংবাদিকরা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে যান। ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন, ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি ও বাংলাদেশ সেক্রেটারিয়েট রিপোর্টার্স ফোরামের নেতারা সেখানে উপস্থিত হন। কিন্তু দীর্ঘ সময় ধরে রোজিনাকে আটকে রাখার কারণ সম্পর্কে গণমাধ্যমকর্মীরা জানতে চাইলেও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা কিছুই জানাননি। পরে রাত সাড়ে ৮টা পর্যন্ত সাংবাদিকরা সচিবালয়ের বাইরে জড়ো হয়ে রোজিনা ইসলামকে হেনস্তা ও আটকে রাখার প্রতিবাদ করেন।
আদালতে সাংবাদিক রোজিনা
এর পরে রাত সাড়ে আটটার দিকে পুলিশ তাঁকে শাহবাগ থানায় নিয়ে যায়। রাত পৌনে ১২টার দিকে পুলিশ জানায়, রোজিনা ইসলামের বিরুদ্ধে অফিশিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্টে মামলা হয়েছে। তাঁকে এই মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়েছে।
বিভিন্ন সময়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতি নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করায় পরিকল্পিতভাবে রোজিনা ইসলামকে ফাঁদে ফেলা হয়েছে বলেও অভিযোগ পরিবারের সদস্যদের।পুলিশ জানিয়েছে, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে সাংবাদিক রোজিনা ইসলামকে থানায় আনা হয়েছে।
এই ঘটনার প্রতিবাদে সাংবাদিকেরা বিকেলে সচিবালয়ে এবং রাতে শাহবাগ থানার সামনে বিক্ষোভ করেন। এর নিন্দা জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছে কমিটি টু প্রটেক্ট জার্নালিস্ট (সিপিজে), অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালসহ দেশি-বিদেশি বিভিন্ন সংগঠন। এ ছাড়া সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সাংবাদিকসহ বিভিন্ন পর্যায়ের ব্যক্তিরা ঘটনার প্রতিবাদ জানাচ্ছেন।এদিকে রোজিনা ইসলাম এর বিপক্ষে অভিযোগ সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে ১১ টায় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের প্রেস ব্রিফিং বয়কট করছে বাংলাদেশ সেক্রেটারিয়েট রিপোর্টার্স ফোরামের (বিএসআরএফ) এবং বাংলাদেশ হেলথ রিপোর্টার্স ফোরাম (বিএইচআরএফ)।