ঢাকা, বৃহস্পতিবার ২১ই নভেম্বর ২০২৪ , বাংলা - 

'দীপ্ত'র সৌরবিদ্যুৎ’তে আলোকিত ১৫ হাজার মানুষ

মাজেদুল নয়ন।।বিশেষ প্রতিনিধি।। ঢাকাপ্রেস২৪.কম

2021-05-16, 12.00 AM
'দীপ্ত'র সৌরবিদ্যুৎ’তে আলোকিত ১৫ হাজার মানুষ

এক দশক আগেও দেশের পার্বত্য চট্টগ্রামের অনেক পাহাড়ী অঞ্চলে ছিল না বিদ্যুতের ছোঁয়া। তাই সূর্য ডুবার সঙ্গে সঙ্গেই এসব অঞ্চলের মানুষের জীবনযাত্রা স্থবির হয়ে যেত। বিদ্যুতের অনুপস্থিতিতে সন্ধ্যার পর দৈনন্দিন কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়া প্রায় অসম্ভব ছিল তাদের। আজ ১৬ মে, আন্তর্জাতিক আলোক দিবস। প্রত্যন্ত এই পাহাড়ী জনপদের পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর জীবনে বিদ্যুত এর আলো পৌঁছে দিতে ২০১১ সালের এই দিনে নবায়নযোগ্য জ্বালানি শক্তি ব্যবহার কার্যক্রম শুরু করে 'দীপ্ত'।

বিদ্যুৎ সরবরাহের জন্য বান্দরবান, খাগড়াছড়ি ও রাঙামাটি জেলার ২৫টি গ্রামে ২৫৯১টি সোলার হোম সিস্টেম স্থাপন করা হয়। এই  প্রকল্পের সুবিধা পেয়ে পাহাড়ী নারীরা রাতে সৌরবিদ্যুৎ এর আলোয় কাজ করে নানাভাবে বাড়তি আয়ের সুযোগ পাচ্ছে, যেমনঃ কাপড় সেলাই, কারুকাজ, বুনন কাজ, হলুদ প্রক্রিয়াজাতকরণ ইত্যাদি। এছাড়াও এলাকার শিক্ষার্থীরা আগে কেরোসিনের অল্প আলোয় পড়াশোনা করতো। ফলে তাদের চোখের  যেমন ক্ষতি হতো তেমনি গুনতে হত বাড়তি অর্থ।‘দীপ্ত’র আলোয় স্কুল পড়ুয়া শিশুরা আগের চেয়ে অধিক সময় ধরে পড়াশোনা করতে পারে এবং দরিদ্র এসব পরিবারগুলোকে অতিরিক্ত অর্থ ব্যয় করতে হয় না ।

এভাবেই পাহাড়ী অঞ্চলে বসবাসরত সুবিধাবঞ্চিত মানুষের সামাজিক ও অর্থনৈতিক অবস্থার পরিবর্তন এনে তাদের জীবনযাত্রার মান উন্নয়নে সক্রিয় ভূমিকা রাখছে ‘দীপ্ত’। এই প্রকল্পের আওতায়, ১৫ হাজারেরও বেশি মানুষের ঘরে সৌর বিদ্যুৎ পৌঁছে দেওয়া সম্ভব হয়েছে।

‘দীপ্ত’র এক দশক উপলক্ষ্যে ‘সাসটেইনেবল অ্যান্ড রিনিউঅ্যাবল এনার্জি ডেভেলপমেন্ট অথোরিটি’র চেয়ারম্যান ও অতিরিক্ত সচিব জনাব মোহাম্মদ আলাউদ্দিন বলেন, নবায়নযোগ্য শক্তির উন্নয়ন এবং প্রসারে যারা কাজ করে, সকলেই আমাদের সহযাত্রী। আমরা জেনে আনন্দিত যে, নবায়নযোগ্যশক্তি খাতে কাজ করে ‘দীপ্ত’ দশ বছর পূর্ণ করেছে এবং তারা দুর্গম পাহাড়ী এলাকায় মানুষের মধ্যে বিদ্যুৎসেবা পৌঁছে দিয়েছে। ‘দীপ্ত’কে অভিনন্দন জানিয়ে তিনি আরও বলেন, আশা করি ভবিষ্যতেও ‘দীপ্ত’র এই পথচলা কৃষিসহ আমাদের অন্যান্য খাতে ও বিস্তৃত হবে।

পার্বত্য অঞ্চলের পিছিয়ে পড়া জনপদে সৌর বিদ্যুৎ পৌঁছে দেওয়ায় আন্তর্জাতিকভাবে সুনাম অর্জন করেছে এই প্রকল্পটি । কাজের স্বীকৃতি স্বরূপ ২০১৮ সালে ‘দীপ্ত’ ‘এশিয়া রেসপন্সিবল এন্ট্রাপ্রেনারশিপ অ্যাওয়ার্ড’ পেয়েছে। এছাড়া, জাতিসংঘ প্রণীত টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা এসডিজি ৮ (ডিসেন্ট ওয়ার্ক এন্ড ইকোনমিক গ্রোথ) ও ১৩ (ক্লাইমেট এ্যাকশন) অর্জনে বাংলাদেশ সরকারের সহযোগী হিসেবে কাজ করছে  ‘দীপ্ত’। জীবাশ্ম জ্বালানি থেকে উৎপাদিত বিদ্যুতের ব্যবহার কমিয়ে নবায়নযোগ্য জ্বালানি শক্তি ব্যবহারের উপর নির্ভরতা স্থাপন করে একটি স্বনির্ভর বাংলাদেশ গড়তে ‘দীপ্ত’ দৃঢ়প্রতিজ্ঞ।