বিএনপি মহাসচিব মিজা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, যে ধারায় খালেদা জিয়াকে শর্ত সাপেক্ষে মুক্তি দেওয়া হয়েছে, সেই ধারাতেই তার বিদেশে যাওয়ার সুযোগ রয়েছে। তিনি বলেন, ‘সরকার মৃত্যুদণ্ডের আসামিদের মুক্তি দিয়ে দিচ্ছে, দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিদের বাড়ি পাঠিয়ে দিচ্ছে, কিন্তু একমাত্র রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে খালেদা জিয়ার সঙ্গে অন্যায় আচরণ করছে।’ এক প্রশ্নের উত্তরে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘বিদেশে চিকিৎসার বিষয়ে পরিবারের পক্ষ থেকে সবকিছু করা হচ্ছে। এ বিষয়েও পরিবার যা ভালো মনে করে, তা-ই করবে।’
বিজ্ঞাপন
রবিবার (৯ মে) রাত সোয়া ৮টার দিকে বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার উত্তর গেটে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে এসব কথা বলেন ফখরুল। এর আগে তিনি বসুন্ধরায় এভারকেয়ার হাসপাতালে খালেদা জিয়াকে দেখতে যান। সেখানে মাত্র দুই মিনিট তিনি খালেদা জিয়াকে দেখেছেন বলে জানান তিনি। এর আগে রবিবার বিকালে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘আইন অনুযায়ী দণ্ড মওকুফ করে খালেদা জিয়াকে বিদেশে পাঠানোর কোনও সুযোগ নেই। এ জন্য খালেদা জিয়ার ছোট ভাই শামীম এস্কান্দারের আবেদন আমরা মঞ্জুর করতে পারিনি।’
প্রসঙ্গত, গত ১১ এপ্রিল খালেদা জিয়ার করোনা টেস্টের রিপোর্ট পজিটিভ আসে। এরপর বাসায় থেকে চিকিৎসা নিলেও ২৭ এপ্রিল রাতে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে তাকে ভর্তি করানো হয়। পরদিন তার চিকিৎসার জন্য ১০ সদস্যের মেডিক্যাল বোর্ড গঠন করা হয়। গত ৩ মে বিকালে তাকে সিসিইউতে স্থানান্তর করা হয়। তাকে নিয়মিত অক্সিজেন দেওয়া হচ্ছে। গত ৬ মে সকালে জানা যায়, খালেদা জিয়া করোনা নেগেটিভ হয়েছেন। বিএনপির দায়িত্বশীল একজন নেতা বলেন, ম্যাডামকে লন্ডন নেওয়া হলে পুরো যাত্রা অনেক দীর্ঘ। সেক্ষেত্রে তার অক্সিজেন দেওয়ার বিষয়টি উল্লেখযোগ্য। আর এই যাত্রা তার শরীরের জন্য কতটা নিরাপদ হবে, তাও বিবেচনায় রয়েছে।
গত ৫ মে রাতে খালেদা জিয়ার ভাই শামীম এস্কান্দার তার বোনের উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে নেওয়ার আবেদন জানিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে চিঠি নিয়ে যান। সাংবাদিকদের মন্ত্রী জানান, সরকার ইতিবাচকভাবেই বিষয়টি বিবেচনা করছে। পরে রাতেই চিঠিটি আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয় মতামতের জন্য। বৃহস্পতিবার বিকালে সে চিঠি আইনমন্ত্রীর কাছে নিয়ে যান সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সচিব। মন্ত্রী সাংবাদিকদের জানান, প্রক্রিয়াটি যাচাই করা হবে। আজ কোনও সিদ্ধান্ত হবে না।
আলাপকালে বৃহস্পতিবার (৬ মে) বিকালে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, ‘আমি এখনও বলছি, আন্তরিক হই আর যা-ই হই, প্রথম হচ্ছে—মানবিক কারণে সরকার দণ্ডাদেশ স্থগিত করে তাকে মুক্তি দিয়েছে। সেক্ষেত্রে আমরা সব সময়ই আন্তরিক। কিন্তু আইনের ঊর্ধ্বে তো আমরা যেতে পারি না। আইন বিবেচনা করে করতে হবে।’ সেক্ষেত্রে কেমন সময় লাগতে পারে, এমন প্রশ্নের জবাবে আনিসুল হক বলেন, ‘যথাশিগগির এটা আমরা করবো।’