ভারতের সঙ্গে সীমান্ত বন্ধ রাখার মেয়াদ বাড়ানোর চিন্তা করছে বাংলাদেশ। আগামী ৬ মে সীমান্ত বন্ধের মেয়াদ শেষ হবে। কিন্তু ভারতে করোনা পরিস্থিতির উন্নতির কোনও লক্ষণ এখন পর্যন্ত পরিলক্ষিত হচ্ছে না। এ অবস্থায় কী করণীয় সে বিষয়ে পর্যালোচনা বৈঠক হবে এ সপ্তাহে।
এ প্রসঙ্গে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা বলেন, ভারতের পরিস্থিতি আমরা পর্যবেক্ষণ করছি। দেশটিতে করোনার যে ভ্যারিয়েন্ট ছড়িয়ে পড়েছে সেটির বিষয়ে আমরা উদ্বিগ্ন।
সীমান্ত বন্ধের বিষয়ে তিনি বলেন, এখন পর্যন্ত কোনও সিদ্ধান্ত নেই। তবে আমরা নিয়মিত পর্যালোচনা করছি এবং এ সপ্তাহেই এ বিষয়ে অনুষ্ঠেয় বৈঠকে সীমান্ত বন্ধের মেয়াদ বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হতে পারে।
তিনি বলেন, আমাদের উদ্দেশ্য হচ্ছে ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট যেন বাংলাদেশে না ছড়িয়ে পড়ে এবং এজন্য সর্বত্র ব্যবস্থা নেওয়া।
উল্লেখ্য, গত ২৬ এপ্রিল থেকে ৯ মে পর্যন্ত ১৪ দিনের জন্য ভারতের সঙ্গে সব সীমান্ত বন্ধ ঘোষণা করে বাংলাদেশ।
যশোরের হোটেলে বাড়ছে চাপ
সীমান্ত বন্ধ করা হলেও বাংলাদেশিরা বিশেষ ব্যবস্থায় ভারত থেকে বেনাপোল, আখাউড়া ও বুড়িমারি স্থলবন্দর দিয়ে দেশে প্রবেশ করছেন। এক্ষেত্রে সবার জন্য ১৪ দিনের প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিন বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। জানা গেছে, গত ১০ দিনে বেনাপোল দিয়ে প্রায় ১২৫০ জন এবং আখাউড়া দিয়ে প্রায় ৮০ জনের মতো দেশে ফিরেছেন। কলকাতায় বাংলাদেশ মিশন প্রতিদিন ২৫০ থেকে ৩০০ জনের ছাড়পত্র ইস্যু করছে। যেহেতু বেনাপোল হয়ে আগতদের সংখ্যা বেশি, সে কারণে কোয়ারেন্টিনের জন্য চাপ বাড়ছে যশোরের আবাসিক হোটেলগুলোতে।
এ বিষয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব (পূর্ব) মাশফি বিনতে শামস বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘যশোর জেলার হোটেলগুলোতে ফেরত আসা বাংলাদেশিদের রাখা হয়েছে। লোক প্রবেশের হার অব্যাহত থাকায় জেলা প্রশাসনের ওপরে চাপ বাড়ছে।’
নতুন করে ফেরত আসা বাংলাদেশিদের কোয়ারেন্টিন ব্যবস্থা নিশ্চিত করার জন্য জেলা প্রশাসন ব্যবস্থা নিচ্ছে বলেও তিনি জানান।
ভারতের ট্রাক বাংলাদেশে
সীমান্ত বন্ধ হলেও দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য বন্ধ হয়নি। ১২টি স্থলবন্দর দিয়ে দুই দেশের পণ্য আদান-প্রদান করা হচ্ছে এবং এ বিষয়ে সতর্কতামূলক পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে মাশফি বিনতে শামস বলেন, ‘ভারতের ট্রাক জিরো লাইন অতিক্রম করার সঙ্গে সঙ্গে ভারতীয় ড্রাইভার ও হেলপারকে ভালো করে স্যানিটাইজড করা হচ্ছে।’
তিনি বলেন, ‘একটি ট্রাকে শুধু ড্রাইভার ও একজন হেলপারকে অনুমতি দেওয়া হচ্ছে এবং নির্দেশনা হচ্ছে—তারা ট্রাক থেকে নিচে নামবেন না। যদি তাদের নামার প্রয়োজন হয়, তবে তাদের জন্য আলাদা টয়লেটের ব্যবস্থা করা হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘সাপ্লাই চেইন ব্যবস্থা অব্যাহত থাকবে এবং এজন্য সবকিছু করা হবে।’