ঢাকা, শুক্রবার, ৯ মে ২০২৫,
সময়: ০৩:২০:৪৮ AM

আব্দুল হামিদ দেশ ছেড়েছেন,এটাবড় ব্যর্থতা’:সারজিস

স্টাফ রিপোটার।। ঢাকাপ্রেস২৪.কম
08-05-2025 07:28:52 PM
আব্দুল হামিদ দেশ ছেড়েছেন,এটাবড় ব্যর্থতা’:সারজিস

জাতীয় নাগরিক পার্টির (উত্তরাঞ্চল) মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম বলেছেন, সাবেক রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদ দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন, এটা সরকারের বড় ব্যর্থতা। এ জন্য সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ও ড. আসিফ নজরুলকে জবাবদিহি করা উচিত।বৃহস্পতিবার (৮ মে) বিকেলে তার নিজ জেলা পঞ্চগড়ের আটোয়ারী উপজেলার বারো আউলিয়ার মাজারে ওরশ উপলক্ষে মেলা পরিদর্শন শেষে গণমাধ্যমকর্মীদের তিনি এসব কথা বলেন। সারজিস বলেন, আওয়ামী লীগের যে কয়েকজন সুবিধাভোগী বাংলাদেশে ছিল তার মধ্যে আব্দুল হামিদ একজন।ক্ষমতার অপব্যবহার করে তিনি যা যা করেছেনতার অনেক উদাহরণ রয়েছে। তিনি বলেন, হাজারো শহীদ ও অর্ধলক্ষ আহতের রক্তের ওপর এই সরকার দাঁড়িয়ে আছে, অন্তর্র্বতীকালীন সরকার অথবা ড. মুহম্মদ ইউনূসকে এটা ভুলে গেলে চলবে না। এই সরকার এখন পর্যন্ত একটা হত্যা মামলার বিচার করতে পারেনি। এখন পর্যন্ত একটা মৌলিক সংস্কার বাস্তবায়ন করতে পারেনি।এগুলো না করার পূর্বে নির্বাচনের কথা বললে শহীদদের রক্তের সঙ্গে বেঈমানি করা হবে। নির্বাচনের সময়সীমা নিয়ে আমাদের কোনো আপত্তি নেই। আমরা শুধু মৌলিক সংস্কার চাই।
জনগণের রায় ছাড়া মানবিক করিডর নয় বলে মন্তব্য করে এনসিপির এই নেতা বলেন, অন্তর্র্বতীকালীন সরকার অনেক জায়গায় অবহেলা করছে।পার্বত্য চট্টগ্রামের মতো জায়গায় করিডর দেওয়ার পূর্বে এ দেশের জনগণ ও রাজনৈতিক দলের রায় লাগবে। এর পূর্বে অনেক জায়গায় আমরা দেখেছি করিডরের নাম করে বিদেশি এজেন্ট এসেছে, বিভিন্ন দেশ, গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা ঢুকেছে। এই সুযোগ আমরা বাংলাদেশে হতে দেব না। এই গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত সরকার একা নিতে পারে না।
ভারত-পাকিস্তান ইস্যুতে সারজিস বলেন, ‘আমাদের প্রতিবেশী দুই দেশে যুদ্ধে জড়ালে তৃতীয় দেশ হিসেবে সবচেয়ে ক্ষতির সম্মুখীন হবে বাংলাদেশ।আমরা কখনো চাই না প্রতিবেশী দুই দেশে যুদ্ধ লাগুক। তবে ধর্মীয় দিক থেকেও এই দুই দেশকে মাঝেমধ্যেই আমরা মুখোমুখি অবস্থানে যেতে দেখেছি। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির কথা ও কাজে উগ্র সাম্প্রদায়িকতার ছোঁয়া পাই। তাদের সঙ্গে কেবল আমাদের বাণিজ্যিক ও আন্তঃদেশীয় সম্পর্ক গুরুত্বপূর্ণ নয় পরিবেশটিও গুরুত্বপূর্ণ।’
বিশ্বযুদ্ধ থেকে বিভিন্ন দেশে আমরা দেখেছি তারা যখনই যুদ্ধে জড়িয়েছে পার্শ্ববর্তী দেশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তারা যেন তাদের জায়গা থেকে ধর্মীয় উসকানি যেন ব্যবহার না করে। হামলাটা কিন্তু ভারত আগে করেছে। আবার পেহেলগামে যখন হামলা হয়েছে কোনো প্রমাণ ছাড়া পাকিস্তানকে দায়ী করা ঠিক নয়। পৃথিবীতে আমরা এমন অনেক ঘটনা দেখেছি যেখানে নিজেরা প্ল্যান করে ঘটিয়ে দেওয়া হয় পরে দায় চাপানো হয়। তবে আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে আমাদের ফ্যাসিস্ট সরকার বিরোধী শক্তিদের ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।

তিনি আরো বলেন, এই পরিস্থিতিতে বাংলাদেশে পুশইনের যে চেষ্টা চলছে তা মেনে নেওয়া হবে না। এ রকম অপচেষ্টা সফল হতে দেওয়া যাবে না। এই দায়িত্ব অন্তর্র্বতীকালীন সরকারের নিতে হবে। এই জায়গায় অবহেলা করার সুযোগ নেই।

সারজিস বলেন, এই সময়ে বাংলাদেশের জেলা শহর থেকে শুরু করে বিভাগীয় শহর ও মেট্রোপলিটনে এখন সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক হাতিয়ার হচ্ছে মিথ্যা মামলা। আমরা চাই ফ্যাসিস্ট হাসিনার দোসরদের নামে মামলা হবে, বিচার হবে এবং দৃশ্যমান শাস্তি হবে। কিন্তু আমরা কখনো এটা চাই না যে একজন নিরপরাধ মানুষের নামে মামলা হোক।তিনি বলেন, একটি মামলা সাজানোর পূর্বে একটি চক্র তৈরি হয়। প্রথম ধাপে ওই চক্রটি লিস্ট তৈরি করে নাম না দেওয়ার শর্তে টাকা দাবি করে। দ্বিতীয় মামলায় নাম দিয়ে নাম কাটানোর কথা বলে টাকা দাবি করে। মামলা যখন আদালতে চলে যায় তখন আরেক ধাপে টাকা নেয়া হয়। এই মামলা বাণিজ্য করছে রাজনৈতিক দলের নেতারা। তাদের সহযোগিতা করছে পুলিশ। মামলায় বড় ব্যবসায়ীদের টার্গেট করা হয়। লাখ লাখ কোটি কোটি টাকার মামলা বাণিজ্য চলছে। ব্যবসায়ীরা এখন অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছেন। 

আবার আওয়ামী লীগের দোসর, যারা অন্যায় করেছে তাদেরকে আবার শেল্টার দিয়ে বাঁচিয়ে দেওয়া হচ্ছে। এমন অনেক উদাহরণ রয়েছে আওয়ামী লীগের একজন নেতা আরেকটি বড় দলের নেতার তত্ত্বাবধানে থাকছেন। আইন ও স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাকে এর দায় নিতে হবে। এখন তাদের অ্যাকশন নিতে হবে। কে ক্ষমতায় যাবে কে যাবে না। কার জনবল বেশি কার কম। এসব চিন্তা করে যদি তারা ছাড় দেয় তাহলে আগের অবস্থাই তৈরি হলো। তারা যদি অ্যাকশন না নেন তাহলে মনে রাখবেন, আপনার প্রতি যে জনমত তা পাল্টাতে বেশি সময় লাগবে না।