
ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকার স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসকে অস্ত্র সমর্পণের শর্তে যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব দিয়েছে ইসরায়েল।এই প্রস্তাব মিশরের মাধ্যমে হামাসের কাছে পৌঁছালেও তা প্রত্যাখ্যান করেছে গোষ্ঠীটি। হামাস বলছে, ইসরায়েলের লক্ষ্য যুদ্ধ থামানো নয়, বরং ফিলিস্তিনিদের আত্মসমর্পণে বাধ্য করা। সোমবার (১৫ এপ্রিল) কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা যায়।হামাসের জ্যেষ্ঠ নেতা সামি আবু জুহরি আল জাজিরাকে বলেন, মিশরের পক্ষ থেকে তারা একটি নতুন যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব পেয়েছেন। কিন্তু সেখানে বলা হয়েছে, হামাসসহ ফিলিস্তিনি যোদ্ধারা অস্ত্র না ফেললে কোনো চুক্তি সম্ভব নয়।মিশরের প্রস্তাবে আমাদের প্রতিনিধি দল বিস্মিত হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এতে প্রতিরোধ আন্দোলনকে নিরস্ত্রীকরণের শর্ত রাখা হয়েছে, যা আমাদের জন্য সম্পূর্ণ অগ্রহণযোগ্য, বলেন আবু জুহরি। তিনি আরও বলেন, আমাদের অবস্থান স্পষ্ট—যেকোনো চুক্তির ভিত্তি হতে হবে গাজায় যুদ্ধবিরতির ঘোষণা ও ইসরায়েলি বাহিনীর ফিলিস্তিনি ভূখণ্ড থেকে সম্পূর্ণ প্রত্যাহার। হামাসের অস্ত্র নিয়ে আলোচনা নয়, এমন প্রস্তাব আমরা শুনতেও রাজি নই।
অন্যদিকে ইসরায়েল বলছে, যুদ্ধ শেষ করতে হলে হামাসকে পরাজিত হতে হবে। এর মধ্যে সংগঠনটির অস্ত্র সমর্পণ এবং নিয়ন্ত্রণ ভেঙে দেওয়ার বিষয়ও অন্তর্ভুক্ত।
এদিকে, গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের ভয়াবহ বিমান হামলা অব্যাহত রয়েছে। সোমবার (১৪ এপ্রিল) খান ইউনিস, শুজাইয়া ও তুফাহ এলাকায় একের পর এক বোমা হামলায় বহু ফিলিস্তিনি প্রাণ হারিয়েছেন।
গাজার বাইরেও ফিলিস্তিনের পশ্চিম তীরে চলছে দখলদার বাহিনীর অভিযান। তুলকারেম শহরে বাড়িঘর ও দোকানপাটে তল্লাশি চালিয়ে এক ক্যাফেতে বোমা ফেলা হয়। নুর শামস শরণার্থী শিবির থেকেও জোরপূর্বক উচ্ছেদ করা হয়েছে বাসিন্দাদের।পশ্চিম তীরে ইসরায়েলি আগ্রাসনের নিন্দা জানিয়ে ইয়েমেনের বিদ্রোহী গোষ্ঠী হুতি একে মানবতাবিরোধী অপরাধ হিসেবে আখ্যা দিয়েছে এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছ থেকে দ্রুত হস্তক্ষেপের আহ্বান জানিয়েছে।
চলমান সংঘাত ও কূটনৈতিক অচলাবস্থার কারণে মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনা ক্রমশ বাড়ছে। এখন পর্যন্ত কোনো কার্যকর শান্তিপ্রক্রিয়ার আভাস দেখা যাচ্ছে না।