পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে তুলনামূলক নবীন হলেও শত প্রতিবন্ধকতা পেরিয়ে প্রতিষ্ঠার এক যুগ পূর্তি উদযাপন করছে দখিনের বাতিঘর খ্যাত বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়। দেশের ৫৩টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে শিক্ষা, গবেষণা ও সহশিক্ষা কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার মাধ্যমে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় তার স্বমহিমায় ভাস্বর। একঝাঁক তরুণ মেধাবী শিক্ষক, মেধাবী শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের নিরলস পরিশ্রমে সুন্দর আগামীর প্রত্যাশায় এগিয়ে চলেছে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়।স্বাধীনতার মহান স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭৩ সালে তৎকালীন বেলস্ পার্কে (বর্তমান বঙ্গবন্ধু উদ্যান) অনুষ্ঠিত জনসভায় তার ভাষণে ঢাকার বাইরে বরিশালে একটি পূর্ণাঙ্গ পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের ঘোষণা দিয়েছিলেন। বঙ্গবন্ধুর সেই ঘোষণাকে বাস্তবে পরিণত করার লক্ষ্যে ২০১১ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বরিশাল সদর উপজেলার কর্ণকাঠিতে ৫০ একর জমিতে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। এর মাধ্যমে বরিশালবাসীর দীর্ঘদিনের যৌক্তিক প্রত্যাশা, দাবি ও লালিত স্বপ্নের সফল বাস্তবায়ন শুরু হয়।
বুধবার (২২ শে ফেব্রুয়ারি) বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ১২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী ও ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের ১ম বর্ষ স্নাতক (সম্মান) শ্রেণির ওরিয়েন্টেশন উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. ছাদেকুল আরেফিন বলেছেন- ভবিষ্যতের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় মানসম্মত শিক্ষার কোনো বিকল্প নেই। যুগের চাহিদার সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে হলে মানসম্মত শিক্ষার ওপর গুরুত্বারোপ করতে হবে।
এ সময় শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে প্রধান অতিথি পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তিচুক্তি বাস্তবায়ন ও পরিবীক্ষণ কমিটির আহ্বায়ক (মন্ত্রী ) আবুল হাসানাত আবদুল্লাহ এমপি বলেছেন, আপনাদের হাতেই গড়ে উঠবে আগামীর বাংলাদেশ। বাঙালির হাজার বছরের ইতিহাসকে রক্ষা করতে হলে আপনাদের এ জাতির সঠিক ইতিহাস জানতে হবে। ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে তা পৌঁছে দেওয়ার দায়িত্ব আপনাদের। মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় নিজেদের বিকশিত করে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন পূরণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সামনে এগিয়ে যেতে হবে।
পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তিচুক্তি বাস্তবায়ন ও পরিবীক্ষণ কমিটির আহ্বায়ক (মন্ত্রী ) আবুল হাসানাত আবদুল্লাহ এমপি বলেছেন, ইতিহাস এক দিনে তৈরি হয় না। আর বাঙালির ইতিহাস হাজার বছরের। যে জাতি নিজেদের ইতিহাস জানে না সে জাতি কোনো দিন মর্যাদাশীল জাতি হতে পারে না।
বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. ছাদেকুল আরেফিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহ্ এবং বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ বদরুজ্জামান ভূঁইয়া।
শিক্ষার্থীদের মধ্য থেকে বক্তব্য রাখেন ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের শিক্ষার্থী নয়ন বিশ্বাস ও উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী তিথি ঢালী।
অনুষ্ঠানে বীর মুক্তিযোদ্ধা, বরিশালের বিভিন্ন সংসদীয় আসনের সংসদ সদস্য, ডিআইজি বরিশাল রেঞ্জ, মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার, জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, উপজেলা চেয়ারম্যান ও পৌরসভার মেয়রসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন অনুষদের ডিন, রেজিস্ট্রার, প্রক্টর, বিভাগীয় প্রধান, প্রভোস্ট, শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।
এছাড়াও অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন এফবিসিসিআই এর পরিচালক ড. সেরনিয়াবাত মঈনউদ্দীন আবদুল্লাহ ও বরিশাল জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য সেরনিয়াবাত আশিক আবদুল্লাহ।এর আগে সকাল ১০ টায় উপাচার্যসহ অতিথিরা বেলুন ও ফেস্টুন উড়িয়ে বিশ্ববিদ্যালয় দিবসের উদ্বোধন করেন।