বাংলাদেশের অন্যতম বিরোধী দল বিএনপির চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার সাজা স্থগিতের মেয়াদ তৃতীয়বারের মত ছয় মাস বাড়িয়েছে সরকার।তবে এক্ষেত্রে বিদেশে না যাওয়াসহ আগের শর্তই বহাল থাকছে।এসব শর্তের মধ্যে রয়েছে, বিএনপি নেত্রী বিদেশে যাবেন না এবং দেশেই চিকিৎসা নেবেন। রবিবার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান সচিবালয়ে সাংবাদিকদের এই তথ্য জানিয়েছেন। তিনি জানিয়েছেন, তিনি দেশের ভেতর যেভাবে চান, সেখানে চিকিৎসা নিতে পারবেন।
তার পরিবার খালেদা জিয়ার স্থায়ী মুক্তির আবেদন জানিয়েছিল। সেই আবেদনের ক্ষেত্রে সরকার কি ভাবছে জানতে চাওয়া হলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, ''নির্বাহী আদেশে সাজা স্থগিত হয়েছে। তবে স্থায়ী মুক্তি চাইলে তাদের আদালতে আবেদন করতে হবে।'' আগামী ২৪শে সেপ্টেম্বর খালেদা জিয়ার দণ্ড স্থগিতের সময়সীমা শেষ হওয়ার কথা রয়েছে।
২০১৮ সালের ৮ই ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় খালেদা জিয়াকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয়। সেই দিনই তাকে কারাগারে পাঠানো হয়।
পরে জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলাতেও তাকে কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে।
সরকার প্রধানের নির্বাহী আদেশে গত বছরের ২৫শে মার্চ প্রথম দফায় দণ্ড স্থগিত করার পর তিনি কারাগার থেকে সাময়িক মুক্তি পান।
এরপর প্রথমে সেপ্টেম্বরে ও পরে চলতি বছরের মার্চে আবারো ছয় মাসের জন্য তার মুক্তির মেয়াদ বাড়ানো হয়।
গত ১১ই এপ্রিল খালেদা জিয়ার শরীরে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ধরা পড়ে।
প্রথমে বাড়িতে থেকে চিকিৎসা নিলেও পরে অবস্থার অবনতি হলে গত ২৭শে এপ্রিল খালেদা জিয়াকে ঢাকার বেসরকারি হাসপাতাল এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল।সেখানে প্রায় ৫৪ দিন ভর্তি ছিলেন তিনি।
সেখানে বেশিরভাগ সময়েই তাকে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র বা আইসিউতে থাকতে হয়েছিল।
এমনকি এক পর্যায়ে ভেন্টিলেশনে নেয়ার মত পরিস্থিতিও তৈরি হয়েছিল বলে পরবর্তীতে জানিয়েছিলেন খালেদা জিয়ার চিকিৎসক।
মে মাসের প্রথম সপ্তাহে খালেদা জিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে নিয়ে যেতে তার পরিবারের সদস্যরা সরকারের কাছে আবেদন করেন।
তবে আইন মন্ত্রণালয়ের মতামত নিয়ে ৯ই মে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, খালেদা জিয়াকে বিদেশে নিয়ে যেতে সরকার অনুমতি দেবে না। তখন বিএনপির তরফ থেকে বলা হয়েছিল, রাজনৈতিক প্রতিহিংসার জন্য সরকার খালেদা জিয়াকে বিদেশে নিয়ে যেতে দিচ্ছে না।